Home জাতীয় এখন থেকে উৎপাদনকারী ও আমদানিকারককেও শাস্তি দেয়া হবে

এখন থেকে উৎপাদনকারী ও আমদানিকারককেও শাস্তি দেয়া হবে

নিউজ ডেস্ক

by Nahid Himel

এখন থেকে উৎপাদনকারী ও আমদানিকারককেও শাস্তি দেয়া হবে।

পণ্যে ভেজাল দেওয়া ও বিক্রিতে কারসাজি করায় ভোক্তা অধিকার আইনে শুধু বিক্রেতাকেই শাস্তি দেওয়া হয়। কিন্তু সংশোধিত ভোক্তা আইনে সেবার আওতা বাড়িয়ে ও কঠোর শাস্তির বিধান রেখে উৎপাদনকারী ও আমদানিকারককেও শাস্তির বিধান রাখা হয়েছে। ভোক্তা অধিকার আইন-২০০৯ সংশোধন হচ্ছে। সব কার্যক্রম শেষ। সংসদে পাশ হলে ভোক্তা অধিকার আইন-২০১৮ নামে অভিহিত হবে।

চলমান আইনে অধিদপ্তরের মহাপরিচালক বরাবর অভিযোগ করা গেলেও সংশোধিত আইনে ভোক্তা অধিকার রক্ষায় আদালতে যেতে পারবেন। বাড়িভাড়া, পানি, গ্যাস, বিদ্যুৎ, পাসপোর্ট, কুরিয়ার সার্ভিস, শিক্ষা (কোচিং), হজ রিক্রুটিং এজেন্সি, লাইসেন্সসহ একাধিক সেবায় অধিকার ক্ষুণœ হলে মামলা করা যাবে। পাশাপাশি অভিযুক্ত আপিল করতে পারবেন।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক (অতিরিক্ত সচিব) এএইচএম সফিকুজ্জামান যুগান্তরকে বলেন, ভোক্তারা যাতে আরও বেশি সুফল পান সেজন্য আইনে বেশকিছু ধারা পরিবর্তন ও সংযোজন করা হয়েছে। শাস্তি আরও বাড়ানো হয়েছে। ভোক্তা অধিকার আইনের খসড়া চ‚ড়ান্ত করে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে

পাঠানো হয়। এ আইনের বিষয়ে ভেটিংয়েও শেষ হয়েছে।

। জাতীয় সংসদে ভোক্তা আইন পাশ হলে তা আইনে পরিণত হবে। এ বিষয়ে কনজ্যুমার অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) সভাপতি গোলাম রহমান যুগান্তরকে বলেন, বর্তমানে আইনে অনেক ফাঁকফোকর আছে। এতে অধিকার রক্ষা হয় না। এছাড়া দোষ না করেও অনেক ব্যবসায়ীকে জরিমানা গুনতে হয়। এবার তারা পরিত্রাণ পাবেন।

অধিকার ক্ষুণ্ন হলে সংশোধিত আইনে ভোক্তা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক বা অধিদপ্তরের ক্ষমতাপ্রাপ্ত কোনো কর্মকর্তার কাছে অভিযোগ করতে পারবেন। এছাড়া জেলা ম্যাজিস্ট্রেট বা ক্ষমতাপ্রাপ্ত কর্মকর্তার কাছে লিখিত অভিযোগ করা যাবে। পণ্য বা সেবা কিনে প্রতারিত হলে ভোক্তা উৎপাদনকারী, সরবরাহকারী, পাইকারি ও খুচরা বিক্রেতাকে অভিযুক্ত করতে পারবেন। ক্রেতাকে রসিদ বাধ্যতামূলকভাবে দিতে হবে। নতুন আইনে ভোক্তা কোনো পণ্য বা সেবা ক্রয় করে প্রতারিতের কারণ উদ্ঘাটন হওয়ার ৬০ কার্যদিবসের মধ্যে অভিযোগ করতে পারবেন।

প্রশাসনিক আদেশের বিরুদ্ধে নতুন আইনে দোষী ব্যক্তির আপিলের ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। অধিদপ্তরের মহাপরিচালকের আদেশপ্রাপ্তির সাত কার্যদিবসের মধ্যে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সচিব বরাবর আপিল করতে হবে। জেলা ম্যাজিস্ট্রেটের আদেশের বিরুদ্ধে বিভাগীয় কমিশনারের কাছে আপিল করা যাবে। এছাড়া পণ্য বা সেবা প্রদানকারীর অবহেলা, দায়িত্বহীনতা বা অসতর্কতায় সেবাগ্রহীতার ক্ষতি হলে ভোক্তা অধিকার অপরাধ হিসাবে গণ্য করা হবে।

বাড়িভাড়া, পানি, গ্যাস, বিদ্যুৎ, পাসপোর্ট, কুরিয়ার সার্ভিস, শিক্ষা (কোচিং), হজ রিক্রুটিং এজেন্সি, লাইসেন্স, বিউটি পার্লার, সেলুন, পরিবহণ, টেলিযোগাযোগ, আবাসিক হোটেল, রেস্তোরাঁ, স্বাস্থ্যসেবা, ভূমি, রিয়েল এস্টেট, ট্রাভেল এজেন্সি, কর্মসংস্থান (বৈদেশিকসহ), বিনোদন কেন্দ্র, লন্ড্রি, ইন্টারনেট, কেবল অপারেটর, মোবাইল ব্যাংকিংসহ যে কোনো ধরনের সেবা ক্ষুণ্ন হলে ভোক্তা মামলা করতে পারবেন। দোষ প্রমাণিত হলে আইনের ৪৫, ৫২ ও ৫৩ ধারায় শাস্তি দেওয়া যাবে। এক্ষেত্রে ৪৫ ধারায় এক বছরের কারাদণ্ড বা এক লাখ টাকা জরিমানা অথবা

 উভয় দণ্ডে দণ্ডিত করা হবে। ৫২ ও ৫৩ ধারায় ৩ বছরের কারাদণ্ড বা তিন লাখ টাকা জরিমানা অথবা উভয় দণ্ড দেওয়া হবে।

এছাড়া দেশে উৎপাদিত বা আমদানি মোড়কজাত পণ্যে উৎপাদনের তারিখ, মেয়াদ উত্তীর্ণের তারিখ, মডেল বা ব্যাচ নম্বর, উৎপাদনকারী বা আমদানিকারকের নাম-ঠিকানা না দেওয়া হলে এক বছরের কারাদণ্ড বা এক লাখ টাকা জরিমানার বিধান রাখা হয়েছে। স্বাস্থ্যসম্মত পরিবেশে উপাদান সংরক্ষণ না করে পণ্য উৎপাদন, সরবরাহ ও বিক্রি করলে দুই বছর কারাদণ্ড বা ৩ লাখ টাকা অর্থদণ্ড দেওয়া যাবে। এ ছাড়া উভয় দণ্ডে দণ্ডিত করার বিধান রাখা হয়েছে।

মোড়কে নির্ধারিত মূল্যের চেয়ে বেশি মূল্যে পণ্য বা সেবা বিক্রি করলে অপরাধ বলে গণ্য করা হবে। ভেজাল মিশ্রিত পণ্য বিক্রির উদ্দেশ্যে উৎপাদন, আমদানি বা মজুত অথবা সরবরাহ করা হলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। দোষ প্রমাণিত হলে ৩ বছরের কারাদণ্ড বা ৩ লাখ টাকা অর্থদণ্ড অথবা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত করা হবে। মেয়াদ উত্তীর্ণ কোনো পণ্য বিক্রি করলে এক বছরের কারাদণ্ড বা ২ লাখ টাকা অর্থদণ্ড অথবা উভয় দণ্ড দেওয়া যাবে।

এই বিভাগের আরো খবর

Leave a Comment