ঠাকুরগাঁওয়ে নগদ প্রায় পাঁচলাখ টাকাসহ একটি ব্যাগ কুড়িয়ে পাওয়ার পর সেই ব্যাগ ও টাকার প্রকৃত মালিকের খোঁজে গতকাল শনিবার সকালে থেকে জেলার বিভিন্ন এলাকায় মাইকিং করেছেন শাকিব হোসেন সৌরভ নামের এক ব্যক্তি।
ঠাকুরগাঁও শান্তিনগর এলাকার আনোয়ার হোসেনের ছেলে কোকারিজ ব্যবসায়ী শাকিব এ মাইকিং বের করার বিষয়টি চাঞ্চল্য সৃষ্টি করেছে এবং প্রশংসিত হয়েছে।
জানা যায়, বৃহস্পতিবার বিকেলের পরে ঠাকুরগাঁও-পঞ্চগড় মহাসড়কের পাশে পরিত্যাক্ত অবস্থায় একটি ব্যাগ পরে থাকতে দেখে সৌরভ। কোনো পথচারীর প্রয়োজনীয় ব্যাগ পড়ে গেছে ভেবে তিনি ব্যাগটি তুলে নেন এবং ব্যাগটি খুলে সেখানে নগদ প্রায় লাখ টাকা দেখতে পান এবং ব্যাগটির সন্ধানে মালিক আবার আসতে পারে ভেবে তিনি সেখানে অনেকক্ষণ অপেক্ষা করেন। কিন্তু ২৪ ঘন্টা পার হলেও সেই টাকার মালিক না পাওয়ায় তিনি শনিবার সকাল থেকে টাকার মালিকের সন্ধানে মাইকিং বের করেন। আর এই মাইকিং বের হবার পর থেকেই জেলাজুড়ে প্রশংসিত হয় সৌরভ।
মাইকিং শুনে শহরের ব্যবসায়ী মাসুদ রানা জানান, এই মাইকিং প্রমাণ করে যে, মানবতা-মনুষ্যত্ব-বিবেক এখনও টিকে আছে। পৃথিবীতে এখনও কিছু ভালো মানুষ আছে।
শহরের বাসিন্দা আবু হেনা সাগর জানান, সকালে বাসা থেকে বের হয়েই আমি টাকার মালিকের খোঁজে বের করা মাইকিং শুনে প্রথমে খুবই অবাক হয়েছি। তবে ঘটনাটি অবশ্যই প্রশংসা করার মতো।
এ মাইকিং বের হবার পর সোশাল মিডিয়া ফেসবুকেও চলছে তুমুল আলোচনা। বিভিন্ন মানুষ সাধুবাদ জানিয়ে স্ট্যাটাস দিচ্ছেন। কমেন্টে অনেকেই বিষয়টির প্রশংসা করছেন।
মাইকিংয়ের বিষয়টি তুলে ধরে ফেসবুকে স্ট্যাটটাসে কমেন্ট করেছেন, ঈমানদার ব্যক্তি সমাজে আছে বলেই সমাজ তথা পৃথিবী টিকে আছে। সেই পোস্টে মানবতার জয় হোক বলে কমেন্ট করেছে এমন আরও শতাধিক ফেসবুক ইউজার।
এ বিষয়ে সৌরভ বলেন, ঠাকুরগাঁও- পঞ্চগড় মহাসড়কের পাশে ব্যাগটি পরে থাকতে দেখে তুলে নিয়ে ব্যাগ ভর্তি টাকা দেখতে পাই। আমার ভাবনায় আসে-এই টাকা হতে পারে কারো ব্যবসার মূল পুঁজি। হতে পারে চাকুরীরত অফিসের টাকা। অথবা এই টাকাই হতে পারে কারো স্বপ্ন পুরনের উছিলা। তাই টাকাটি মালিকের কাছে পৌঁছে দেয়া জরুরি ভেবে মাইকিং করে মালিক খোঁজা হচ্ছে। তিনি আরও বলেন, ‘উপযুক্ত তথ্য প্রমাণ দিতে পারলে আমি টাকাসহ ব্যাগটি ফিরিয়ে দিব। টাকার মালিক ঠাকুরগাঁও শহরের স্টেডিয়ামের সামনে মদিনা মেশিনারিজ দোকানে এসে আমর সাথে যোগাযোগ করতে পারে।
এই ঘটনায় ঠাকুরগাঁও সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা(ওসি) কামাল হোসেন বলেন, টাকা হারিয়েছে জানিয়ে কেউ এখনও আমাদের কাছে কোনো জিডি করেনি। তাই টাকার মালিকের বিষয়ে এখনি আমরা কোনো সহায়তা করতে পারছিনা। তবে টাকার মালিক খোঁজার এই অভিনব ঘটনাটি প্রশংসাযোগ্য।
এবিষয়ে ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা এসিল্যান্ড শাহারিয়ার বলন, ‘টাকা কুড়িয়ে পাওয়ার বিষয়টি আমি শুনেছি। প্রকৃত মালিকের খোঁজে মাইকিংয়ের জন্য আমাকে অবগত করা হয়েছে। অবশ্যই এটি একটি প্রশংসনীয় উদ্যোগ। যুবক সৌরভকে সাধুবাদ জানাই।