শিল্প সচিব জাকিয়া সুলতানা বলেছেন, বাংলাদেশের চিনি শিল্প শীঘ্রই ঘুরে দাঁড়াবে। আমরা মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা অনুয়ায়ী উৎপাদন বাড়ানো এবং আমদানি কমিয়ে আনার চেষ্টা করছি। উচ্চ ফলনশীল আখ উদ্ভাবন এবং আখচাষীদের প্রযুক্তিগত সহায়তা প্রদান করছি। এছাড়া আখের দাম বৃদ্ধি ও অন্যান্য প্রণোদনা প্রদান করছি যাতে কৃষকরা পুনরায় আখ চাষে উদ্বুদ্ধ হয়।
শিল্প সচিব বলেন, ইক্ষুর জাত প্রতিস্থাপনের মাধ্যমে গুণগতমানসম্পন্ন আখ উৎপাদনে সহায়তা এবং উদ্বুদ্ধকরণে বাংলাদেশ চিনি ও খাদ্য শিল্প করপোরেশন এর সঙ্গে বিএটি বাংলাদেশ একযোগে কাজ করে চলেছে। সম্ভাবনাময় এই শিল্পকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার লক্ষ্যে আমরা বেশ কিছু পদক্ষেপ গ্রহণ করেছি যার মধ্যে বিএটি বাংলাদেশের এই মডেল প্রকল্প অন্যতম। এ ধরনের উদ্যোগ দেশজুড়ে সম্প্রসারণ করা গেলে দেশের প্রান্তিক চাষী আখ চাষে উদবুদ্ধ হবে এবং ফলস্বরূপ চিনি কলগুলোতে পুনরায় গতির সঞ্চার হবে বলে আমার বিশ্বাস।
শিল্প মন্ত্রনালয় কর্তৃক হ্যালো চাষী অ্যাপে সংরক্ষিত ডাটাবেজে বিদ্যমান মোবাইলে নাম্বারে সারাসরি ফোন দিয়ে আখচাষীদের সাথে কথা বলে তাদের সমস্যা অবহিত হওয়া এবং তাৎক্ষনিকভাবে তা সমাধানের জন্যে উদ্যোগ গ্রহন করা হচ্ছে। বিএটি বাংলাদেশ এর সাথে বিএসএফআইসি যৌথভাবে আখচাষে উত্তম চর্চার মাধ্যমে আখের ফলন ৫০-৬০ মে.টন উন্নীত করার নিমিত্ত ৫ টি চিনিকলের খামার ও প্রগতিশীল আখচাষীদের ৩০.২৫ একর জমিতে বীজবর্ধন প্রদর্শনী আখক্ষেত স্থাপন করা হয়েছে যার অদ্যাবধি অগ্রগতি অত্যন্ত সন্তোষজনক। স্থাপিত প্রদর্শনী প্লটগুলো দেখে আখচাষীদের মাঝে আখের ফলন বৃদ্ধিতে ব্যাপক উৎসাহ-উদ্দীপনা লক্ষ্য করা যাচ্ছে।
বিএসএফআইসি’র চেয়ারম্যান মোঃ আরিফুর রহমান অপু বলেন, চিনির উপর আমদানি নির্ভরতা কমাতে টেকসই কৃষি ব্যবস্থার কোন বিকল্প নেই। বিএটি বাংলাদেশ এর মাধ্যমে করা এই প্রকল্পে আমরা যে সফলতা পেয়েছি তা আমরা কৃষকদের মাঝে ছড়িয়ে দিতে চাই, যাতে করে তারা সামনের দিনগুলোতে আখ চাষে আরো উদ্বুদ্ধ হয়।
বিএটি বাংলাদেশের চেয়ারম্যান গোলাম মইন উদ্দিন এই প্রকল্প সম্পর্কে বলেন, এই অঞ্চলে ১১২ বছর ধরে আমরা ব্যবসায় পরিচালনা করে আসছি। আমাদের উত্তম কৃষি পদ্ধতির ব্যবহারে আমরা উৎপাদনশীলতা বাড়াতে সক্ষম হয়েছি যা অত্যন্ত গর্বের। শিল্প মন্ত্রণালয় ও বিএসএফআইসি কে ধন্যবাদ জানাতে চাই আমাদের এরকম একটি সম্ভাবনাময় শিল্পে কাজের সুযোগ করে দেয়ার জন্য। আমরা আরো দুএক বছর এসহায়তা অব্যাহত রাখব।
পরে শিল্প সচিব চুয়াডাঙ্গার দর্শনায় কেরু এ্যান্ড কোম্পানী (বাংলাদেশ) লিমিটেড প্রাঙ্গণে ২০২২-২৩ মৌসুমের আখ রোপন কর্মসূচি উদ্বোধন করেন এবং কেরু এ্যান্ড কোম্পানীর বিএমআরই কার্যক্রম, ডিস্টিলারী শাখা ইত্যাদি ঘুরে দেখেন ও প্রতিষ্ঠানটিকে লাভজনক রাখতে বিভিন্ন নির্দেশনা প্রদান করেন।