বিএনপিকে গণমাধ্যমে বেশি প্রাধান্য দেয়া হচ্ছে মন্তব্য করে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক, পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, গণমাধ্যমের উচিত বিরোধী দলের বিভিন্ন বক্তব্যের সঙ্গে ক্ষমতাসীন দলেরও বক্তব্য দেয়া। কারণ সরকারি দলেরও তো তাদের নিজেদের দিক দিয়ে একটা বক্তব্য থাকে। গণমাধ্যমে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের তুলনায় বিভিন্ন রাজনৈতিক ঘটনায় বিএনপিকে বেশি প্রাধান্য দেয়া হচ্ছে।
গতকাল সোমবার আওয়ামী লীগের সম্পাদকমণ্ডলীর সঙ্গে দলের ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ এবং সহযোগী সংগঠনগুলোর নেতাদের সঙ্গে যৌথ সভায় তিনি এ কথা বলেন।
আগামী ২৮ সেপ্টেম্বর আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ৭৬তম জন্মদিনের কর্মসূচি সফল করার লক্ষ্যেই এই যৌথ সভার আয়োজন করা হয়।
ওবায়দুল কাদের বলেন, মিডিয়ায় বড় বড় কভারেজ হয়। আমাদের বড় বড় নেতাদের নামটাও বলা হয় না। অথচ কোথাকার কোন সম্পাদক, কোন মহানগর নেতারাও! আশ্চর্য হয়ে যাই! মূল্যবোধের এত অবক্ষয় আমাদের দেশে! কল্পনা করতেও ভয় লাগে। আমরা তো পাই না। তাদের সাত-আটজনকে দিয়ে তারপর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আসে। তারপর আবার ৩০ সেকেন্ড দিয়েই শেষ। এটা ঠিক নয়।
তিনি বলেন, ষড়যন্ত্রকারীরা জানে না শেখ হাসিনা পিছু হটতে জানে না, ভয় পান না। এরা জানে না যে- তিনি হেরে গেলে বাংলাদেশ হেরে যাবে। বাংলাদেশের স্বাধীনতা হেরে যাবে, মুক্তিযুদ্ধের চেতনা হেরে যাবে। যদি শেখ হাসিনা ক্ষমতায় না থাকেন, তবে বাংলাদেশ আর বাংলাদেশ থাকবে না।
‘পাকিস্তান আমলেই ভালো ছিলাম’- বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের এমন বক্তব্যের জবাবে ওবায়দুল কাদের বলেন, বিএনপির ফখরুল সাহেব বলেছেন- পাকিস্তান আমলেই ভালো ছিলাম। তাদের মনের কথা বেরিয়ে গেছে। এই জাতীয়তাবাদীরা আবারও বাংলাদেশকে পাকিস্তান বানাতে চায়। আমরা আমাদের প্রিয় জন্মভূমিকে পাকিস্তান বানাতে দেব না।
তিনি বলেন, এটাই আমাদের আজকের দিনের শপথ, আমরা এই শপথ করছি। আবার বলেন- পাকিস্তানের নাম শুনলে আমাদের গাত্রদাহ হয়। হ্যাঁ ফখরুল সাহেব, পাকিস্তানের নাম শুনলে তো আমাদের গাত্রদাহ হবেই। পকিস্তানের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে আমরা এ দেশকে স্বাধীন করেছি। পাকিস্তানের প্রতি আপনার এত পেয়ার কেন ফখরুল সাহেব। তাহলে তো এটাই প্রমাণ হয় ’৭১-এর বদলা নিতে জিয়াউর রহমান ’৭৫-এ বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করেছেন।
সম্প্রতি বিএনপির সমাবেশে হামলা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, নিজেরাই মারামারি করে সরকারের ওপর দোষ চাপাতে চায় বিএনপি। আমি আমাদের দলের নেতাকর্মীদের বলছি, নেত্রীর (শেখ হাসিনা) নির্দেশের বাইরে কেউ যদি হামলায় জড়িয়ে পড়েন তাদের ছাড় দেওয়া হবে না। এসব করে সরকারের ওপর এসে দায় পড়বে, এটা কিন্তু আমরা ছাড় দেব না। কোনো খারাপ কাজ আমাদের নেত্রী সহ্য করেন না।
বৈঠকে আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য মতিয়া চৌধুরী, জাহাঙ্গীর কবির নানক, মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া বীরবিক্রম ও কামরুল ইসলাম, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল আলম হানিফ, তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ ও যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, সাংগঠনিক সম্পাদক আহমদ হোসেন, বি এম মোজাম্মেল হক, আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপন ও আফজাল হোসেন, ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ সম্পাদক সুজিত রায় নন্দী, শ্রমবিষয়ক সম্পাদক হাবিবুর রহমান সিরাজ, মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক সম্পাদক মৃণাল কান্তি দাস, কৃষি ও সমবায় বিষয়ক সম্পাদক ফরিদুন্নহার লাইলী, বন ও পরিবেশ বিষয়ক সম্পাদক দেলোয়ার হোসেন, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক আবদুস সবুর, উপ-প্রচার সম্পাদক আমিনুল ইসলাম, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সভাপতি আবু আহমদ মন্নাফি, ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ বজলুর রহমান, দক্ষিণের সাধারণ সম্পাদক হুমায়ুন কবির প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।