রাজস্ব বাড়াতে সারাদেশের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলোতে পর্যায়ক্রমে ১ লাখ ইলেকট্রনিক্স ফিজিক্যাল ডিভাইস (ইএফডি) বসানোর উদ্যোগ নেয় সরকার। কিন্তু ১ লাখ দূরে থাক ১০ হাজার মেশিনও বসাতে পারেনি জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। এ কারণে প্রতি বছর হাজার হাজার কোটি টাকা রাজস্ব থেকে বঞ্চিত হচ্ছে সরকার।
ইএফডি সংক্রান্ত জটিলতার বিষয়ে জানতে চাইলে অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগের সিনিয়র সচিব ও এনবিআর চেয়ারম্যান আবু হেনা রহমাতুল মুনিম ইএফডির টেন্ডার সংক্রান্ত কোনো বিষয় তিনি পাবলিকলি বলতে রাজি হননি। তবে ইএফডি সরবরাহের বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন রয়েছে বলে জানিয়েছেন।
জানা গেছে, ২০১৮ সালে ১৩টি খাতে ইএফডি মেশিন ব্যবহার বাধ্যতামূলক করা হয়। এ বিষয়ে ২০১৮ সালের অক্টোবরে একটি আদেশ জারি করে এনবিআর। খাতগুলো হচ্ছে- আবাসিক হোটেল, রেস্তোরাঁ ও ফাস্টফুডের দোকান, মিষ্টান্ন ভাণ্ডার, আসবাবপত্রের বিক্রয়কেন্দ্র, পোশাক বিক্রয়কেন্দ্র্র বা বুটিক শপ, বিউটি পার্লার, ইলেকট্রনিক বা ইলেকট্রিক্যাল গৃহস্থালি সামগ্রীর বিক্রয়কেন্দ্র্র, কমিউনিটি সেন্টার, অভিজাত শপিং সেন্টারের অন্তর্ভুক্ত সব ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠান, ডিপার্টমেন্টাল স্টোর, জেনারেল স্টোর বা সুপারশপ অন্য বড় ও মাঝারি ব্যবসায়ী (পাইকারি ও খুচরা) প্রতিষ্ঠান এবং স্বর্ণকার, রৌপ্যকার ও স্বর্ণ ও রৌপ্যের দোকানদার।
চার বছর পেরিয়ে ৫ বছরে পড়লেও এখনো আলোর মুখ দেখেনি এনবিআরের এই উদ্যোগ। এখনো প্রায় ৯০ শতাংশ দোকান থেকে আগের মতো ম্যানুয়ালি ভ্যাট আদায় করছেন ভ্যাটের কর্মকর্তারা। এতে সরকার হাজার হাজার কোটি টাকা রাজস্ব হারাচ্ছে। এনবিআরের এই দুর্বলতার সুযোগ নিচ্ছে কিছু অসাধু ব্যবসায়ী ও দোকানি। এই সুযোগে অনেকে ভ্যাট দেন না। যার প্রমাণ মেলে এনবিআরের আরেকটি দপ্তর ভ্যাট গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তরের কর্মকাণ্ডে। কিছু দিন পর পর প্রতিষ্ঠানগুলোতে তারা অভিযান চালায় এবং সরকারের বিপুল অঙ্কের রাজস্ব ফাঁকির বিষয়টি উদ্ঘাটন করে। ছোট ছোট প্রতিষ্ঠান থেকে শুরু করে নামিদামি অনেক প্রতিষ্ঠানও ভ্যাট ফাঁকি দিচ্ছে, যা এনবিআরের এই গোয়েন্দা সংস্থার বিভিন্ন প্রতিবেদনে উঠে এসেছে।