পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আবদুল মোমেন ও জাপানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী হায়াশি ইয়োশিমাসার মধ্যে গতকাল পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে এক দ্বিপাক্ষিক বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।
অত্যন্ত সৌহার্দপূর্ণ পরিবেশে অনুষ্ঠিত এ বৈঠকে পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সাথে সংসদ সদস্য সেলিমা আহমেদ, জাপানে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত শাহাবুদ্দিন আহমদ এবং দূতাবাসের কর্মকর্তাবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। (খবর বাসস’র) :
জাপানের সদ্যপ্রয়াত প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবের রাষ্ট্রীয় অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ায় যোগদানের জন্যে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন বর্তমানে জাপানে অবস্থান করছেন। গতকার বিকেলে টোকিওতে পৌঁছানোর পরপরই এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।
বৈঠকের শুরুতে জাপানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী প্রয়াত প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবের জন্য বাংলাদেশে রাষ্ট্রীয় শোক পালন এবং জাতীয় সংসদে শোক প্রস্তাব গ্রহণের জন্য কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করেন। এছাড়া তিনি ঢাকাস্থ জাপানের দূতাবাসে গিয়ে শোক বই স্বাক্ষর করার জন্য ও রাষ্ট্রীয় অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ায় যোগদানের লক্ষে বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে বিশেষভাবে ধন্যবাদ জানান।
বাংলাদেশের অন্যতম বন্ধু জাপানের প্রয়াত প্রধানমন্ত্রীর আকস্মিক মত্যুতে বাংলাদেশ অত্যন্ত মর্মাহত বলে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. মোমেন উল্লেখ করেন। সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে প্রধানমন্ত্রী ও বাংলাদেশের কঠোর অবস্থানের কথাও পুনর্ব্যক্ত করেন।
তিনি আরো বলেন, শিনজো আবে দীর্ঘ সময় জাপানের প্রধানমন্ত্রী ছিলেন এবং তার সময়ে দু’দেশের সম্পর্ক ‘সমন্বিত অংশীদারিত্বে’ উন্নীত হয়েছিল। পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. মোমেন জাপানের সাথে বাংলাদেশের বর্তমান সুসম্পর্ককে আরও অধিক উচ্চতায় উন্নীত করার লক্ষ্যে একযোগে কাজ করার আগ্রহ ব্যক্ত করেন।
জাপানকে বৃহত্তম দ্বিপাক্ষিক উন্নয়ন সহযোগী হিসেবে উল্লেখ করে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. মোমেন বাংলাদেশে আরো জাপানি বিনিয়োগের আমন্ত্রণ জানান। দু’দেশের বাণিজ্য বৃদ্ধিতে আরো জোর দেন। এছাড়া দুই পররাষ্ট্রমন্ত্রী সমসাময়িক গুরুত্বপূর্ণ আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক বিষয়াদি নিয়ে আলোচনা করেন। বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মিয়ানমার হতে আগত রোহিঙ্গাদের বর্তমান অবস্থা, সমস্যা এবং এর দ্রুত ও স্থায়ী সমাধানের বিষয়ে জাপানের সহযোগিতা চান।
জবাবে পররাষ্ট্রমন্ত্রী হায়াশি বাংলাদেশকে অব্যাহত সহায়তা প্রদানের কথা পুনর্ব্যক্ত করে। পররাষ্ট্রমন্ত্রী হায়াশি ইউক্রেন, উত্তর কোরিয়া এবং ইন্দো-প্যাসিফিকের বিষয়ে জাপানের অবস্থান তুলে ধরেন। তিনি বাংলাদেশের সহযোগিতা কামনা করেন। বিশ্ব শান্তি ও সম্প্রীতি রক্ষায় বাংলাদেশের অবদান, শান্তির সংস্কৃতি বিনির্মাণের প্রয়োজনীয়তার কথা উল্লেখ করে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বাংলাদেশের অবস্থান তুলে ধরেন।
বৈঠকে জাপানের পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে সুবিধাজনক সময়ে বাংলাদেশ সফরের জন্য বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আমন্ত্রণ জানিয়েছেন। দু’দেশের মধ্যে বিদ্যমান চমৎকার দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক এগিয়ে নিতে দুই পররাষ্ট্রমন্ত্রী ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করার প্রত্যাশা ব্যক্ত করেন।