Home রাজনীতি বিএনপির ৭ জনের পদত্যাগে কি সংসদ অচল হয়ে যাবে

বিএনপির ৭ জনের পদত্যাগে কি সংসদ অচল হয়ে যাবে

নিউজ ডেস্ক

by Nahid Himel

সিদ্ধান্ত জানালে দলীয় সংসদ-সদস্যরা পদত্যাগ করবেন-বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের এমন বক্তব্যে গুরুত্ব দিচ্ছে না আওয়ামী লীগ। ক্ষমতাসীন দলের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহণ ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের পালটা প্রশ্ন করেছেন-‘তাদের সাতজন সংসদ-সদস্য পদত্যাগ করলে কি সংসদ অচল হয়ে যাবে?’ তিনি বলেন, ‘হুমকির কী আছে? তাতে (বিএনপির সংসদ-সদস্যরা পদত্যাগ করলে) কি সংসদ অচল হয়ে যাবে?

তারা কজন? সাতজন। পদত্যাগের ব্যাপারটা তাদের দলের সিদ্ধান্তের বিষয়। এটা আমাদের বিষয় নয়।

গতকাল রোববার আওয়ামী লীগ সভাপতির ধানমন্ডির রাজনৈতিক কার্যালয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন। ২৪ ডিসেম্বর দলটির ২২তম জাতীয় সম্মেলনের প্রস্তুতির বিষয়ে ওই সভা অনুষ্ঠিত হয়। বিএনপি বর্তমান সরকারের অধীনে নির্বাচনে যাবে না। এটা তাদের এক দফা। এ বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে ওবায়দুল কাদের বলেন, এখনো নির্বাচনের এক বছর বাকি। অনেক সময়। এর মধ্যে কত কিছু ঘটে যাবে। নাটকের পর নাটক। বিএনপি তো রঙ্গে রঙ্গের নাটক। গতবারও আসবে না, আসবে না বলেছিল। কিন্তু পানি ঘোলা করে শেষ পর্যন্ত ঠিকই এসেছে। পরিস্থিতি কোথায় গিয়ে গড়ায়, সেটা দেখুন। তিনি আরও বলেন-পদ্মা, মেঘনা, যমুনা, মধুমতির জল গড়িয়ে যাবে অনেক দূর। জল বঙ্গোপসাগরে মিশে যাবে। কাজেই অপেক্ষা করুন। সময়ে অনেক কিছু বদলায়।

এ সময় আওয়ামী লীগ বিএনপির পালটাপালটি কোনো কর্মসূচি করবে না বলেও জানান ওবায়দুল কাদের। ৫ নভেম্বর কুমিল্লা মহানগর আওয়ামী লীগের সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে জানিয়ে তিনি বলেন, সেই তারিখে দেখছি তাদেরও বরিশালে সমাবেশ আছে। তাহলে কী এটাকে আপনি পালটাপালটি বলবেন? বিএনপির সঙ্গে পালটাপালটির কোনো বিষয় নেই।

বিএনপির সম্মেলন প্রসঙ্গে তিনি আরও বলেন, কোনো প্রকার বাধাবিঘ্ন আমরা সৃষ্টি করিনি। পরিবহণ ধর্মঘট, পরিবহণের লোকেরা তাদের ভয় পায়। আমরা কী করব? সেখানে আওয়ামী লীগও আছে, বিএনপিও আছে। জাতীয় পার্টিও আছে, সবাই আছে। এ সময় শ্রমিক ফেডারেশনের ভাইস প্রেসিডেন্ট বিএনপির শিমুল বিশ্বাসের নাম উল্লেখ করে পরিবহণ ধর্মঘট নিয়ে বিএনপিকে তাকে জিজ্ঞেস করার পরামর্শ দেন ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেন, বিএনপি হইহই, রইরই করলেই পরিবহণ শ্রমিকরা ভয় পায়। আবার আগুনসন্ত্রাস এসে পড়ে! সেই জন্যই তারা বন্ধ করেছে, সেটা তারা বলছে।

করোনার কারণে দীর্ঘদিন আওয়ামী লীগ সভাপতি কিছু দিন ধরে বাইরে কোনো কর্মসূচি পালন করতে পারেননি। ওবায়দুল কাদের বলেন, তিনি (শেখ হাসিনা) কিছু দিন ধরে বলছিলেন বাইরে জনসভা করবেন। প্রথমে দু-তিনটি জেলা নির্দিষ্ট করে বলেছেন যে, এগুলোতে সমাবেশ করবেন। পর্যায়ক্রমে অন্যান্য জেলায়ও করবেন। গণভবনে প্রতি সপ্তাহে দুটি করে জেলার নেতাদের সঙ্গে দলীয় সভাপতি শেখ হাসিনা বৈঠক করবেন বলে জানান ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেন, বর্ধিত সভায় যারা উপস্থিত থাকেন, এই পর্যায়ে গণভবনে দুটি জেলার সঙ্গে সপ্তাহে একবার করে বসবেন।

এ সময় আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য কাজী জাফর উল্লাহ, ড. আব্দুর রাজ্জাক, লে. কর্নেল (অব.) ফারুক খান, জাহাঙ্গীর কবির নানক, আব্দুর রহমান, মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া বীর বিক্রম ও অ্যাডভোকেট কামরুল ইসলাম, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবউল আলম হানিফ, ডা. দীপু মনি ও আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, সাংগঠনিক সম্পাদক আহমদ হোসেন, আবু সাঈদ আল মাহামুদ স্বপন ও এসএম কামাল হোসেন, প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক ড. আব্দুস সোবহান গোলাপ, মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক সম্পাদক মৃণাল কান্তি দাস, সাংস্কৃতিক সম্পাদক অসীম কুমার উকিল, তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক ড. সেলিম মাহমুদ, দপ্তর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া, বন ও পরিবেশ বিষয়ক সম্পাদক দেলোয়ার হোসেন, উপ-দপ্তর সায়েম খান, কার্যনির্বাহী সদস্য ডা. মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন, শাহাবুদ্দিন ফরাজী প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

১১টি উপকমিটি গঠন করা হয় : সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলার পরে সভা শুরু হয়। এ সময় আওয়ামী লীগের ২২তম জাতীয় সম্মেলন উপলক্ষ্যে ১১টি উপকমিটি গঠন করা হয়। সম্মেলন প্রস্তুতি উপকমিটির আহ্বায়ক ও সদস্য সচিবরা হলেন-অভ্যর্থনা উপকমিটিতে শেখ ফজলুল করিম সেলিম ও ডা. দীপু মনি, অর্থ উপকমিটিতে কাজী জাফরউল্লাহ ও এইচএন আশিকুর রহমান, ঘোষণাপত্র উপকমিটিতে শেখ ফজলুল করিম সেলিম ও আব্দুর রহমান, দপ্তর উপকমিটিতে অনুপম সেন ও ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া, গঠনতন্ত্র উপকমিটিতে ড. আবদুর রাজ্জাক ও ড. সেলিম মাহমুদ, প্রচার ও প্রকাশনা উপকমিটিতে শাহাবুদ্দিন চুপ্পু ও ড. আবদুস সোবহান গোলাপ, স্বেচ্ছাসেবক ও শৃঙ্খলা উপকমিটিতে আবুল হাসনাত আব্দুল্লাহ ও আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, মঞ্চ ও সাজসজ্জা উপকমিটিতে জাহাঙ্গীর কবির নানক ও মির্জা আজম, সাংস্কৃতিক উপকমিটিতে আতাউর রহমান ও অসীম কুমার উকিল, খাদ্য উপকমিটিতে মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া বীর বিক্রম ও অ্যাডভোকেট কামরুল ইসলাম, স্বাস্থ্য উপকমিটিতে ডা. মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন ও ডা. রোকেয়া সুলতানা।

ওবায়দুল কাদেরের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন রাম মাধব : এদিকে রোববার সচিবালয়ে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহণ ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেছেন ভারতীয় জনতা পার্টির (বিজেপি) সাবেক কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক রাম মাধব। সাক্ষাৎ শেষে রাম মাধব বলেন, ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এবং বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দুদেশের কল্যাণে কাজ করছেন। এ সময়ে রাম মাধব ওবায়দুল কাদেরকে ভারত সফরের আহ্বান জানান।

এই বিভাগের আরো খবর

Leave a Comment