\সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ বলেছেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারে হত্যার ধারাবাহিকতায় ঘটানো হয় জেল হত্যাকান্ড।
প্রতিমন্ত্রী গতকাল রাজধানীর জাতীয় জাদুঘরে কবি সুফিয়া কামাল মিলনায়তনে ৩ নভেম্বর জেল হত্যা দিবস উপলক্ষে আয়োজিত সেমিনার ও আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কথা বলেন।
জাদুঘর আয়োজিত ‘৩রা নভেম্বরের স্মৃতিচারণ’ শীর্ষক অনুষ্ঠানে জাতীয় জাদুঘর পর্ষদের সভাপতি অধ্যাপক ড. আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক সভাপতিত্ব করেন।
এতে বিশেষ অতিথি ও প্রধান আলোচক ছিলেন, সংসদ সদস্য ডা: সৈয়দা জাকিয়া নূর লিপি এবং বিশেষ অতিথি ছিলেন সংস্কৃতি সচিব মো: আবুল মনসুর।
সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারে হত্যার ধারাবাহিকতায় ঘটানো হয় জেল হত্যাকান্ড। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্টের নির্মম হত্যাকান্ডের পর তিন মাসেরও কম সময়ের মধ্যে মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম বীর সেনানী ও চার জাতীয় নেতা সৈয়দ নজরুল ইসলাম, তাজউদ্দিন আহমেদ, এএইচএম কামারুজ্জামান এবং ক্যাপ্টেন মনসুর আলীকে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারের অভ্যন্তরে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়। জাতির পিতাকে সপরিবারে হত্যার পর জাতির ইতিহাসে এটি দ্বিতীয় কলংকজনক অধ্যায়।
তিনি বলেন,‘বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যার পরপরই জেলখানায় জাতীয় চার নেতাকে হত্যার পরিকল্পনা করা হয়। পরিকল্পনাটি এমনভাবে নেয়া হয়েছিল পাল্টা অভ্যুথান ঘটার সাথে সাথে যাতে আপনা আপনি এটি কার্যকর হয়। আর এ কাজের জন্য পাঁচ সদস্য বিশিষ্ট একটি ঘাতক দলও গঠন করা হয়। এই ঘাতক দলের প্রতি নির্দেশ ছিল পাল্টা অভ্যুথান ঘটার সাথে সাথে কোনো নির্দেশের অপেক্ষায় না থেকে কেন্দ্রীয় কারাগারে গিয়ে তারা জাতীয় চার নেতাকে হত্যা করবে।’
সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘১৯৭৫ এর ৩ নভেম্বর খালেদ মোশাররফ পাল্টা অভ্যুত্থান ঘটানোর পরেই কেন্দ্রীয় কারাগারে এই জাতীয় চার নেতাকে হত্যা করা হয়। জাতির পিতাকে সপরিবারে হত্যার মতো জাতীয় চার নেতা হত্যার পেছনেও জিয়াউর রহমান জড়িত। তার সুচারু পরিকল্পনায় এ হত্যাকান্ড ঘটানো হয়েছিলো।’
প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘রাজনীতিবিদদের অনেকেই অর্থবিত্তের পিছনে ছোটাছুটি করেন। কিন্তু ব্যক্তিক্রম ছিলেন জাতীয় চার নেতা। তাঁরা সাদামাটা জীবনযাপন করতেন। মুক্তিযুদ্ধ ও দেশ পুনর্গঠনে তাঁদের অবদানের কথা জাতি চিরকাল কৃতজ্ঞতাভরে স্মরণ করবে।’
অধ্যাপক ড. আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক বলেন, জাতীয় চার নেতা আমৃত্যু বঙ্গবন্ধুর দর্শন ও আদর্শের প্রতি অবিচল ও অটুট ছিলেন।
বাংলাদেশ ও পৃথিবীর ইতিহাসে যাতে এ ধরনের বর্বরোচিত হত্যাকান্ড আর না ঘটতে পারে সেজন্য এর নেপথ্য ষড়যন্ত্রকারীদের চিহ্নিত করতে একটি কমিশন গঠনের দাবি জানান তিনি।