সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, বৈশ্বিক মহামারিকে পুঁজি করে বিএনপি অপরাজনীতি করতে চায়।
তিনি বলেন, সারা দুনিয়ায় দুর্ভোগ। সারা দুনিয়ায় মানুষ দুর্ভোগে আছে। এরজন্য আমরা দায়ী! রাশিয়া- ইউক্রেন যুদ্ধ। তারপর নিষেধাজ্ঞা। আর আমাদের অবস্থা আজকে বেহাল। আমরা গরিব দেশগুলোই সাফার করছি। পৃথিবীর অন্য দেশে এজন্য কেউ সরকারকে দায়ী করছে না। সরকারের পতন দাবী করছে না।’
মন্ত্রী গতকাল জাতীয় সংসদে অনির্ধারিত আলোচনায় অংশ নিয়ে বলেন, ‘আপনারা বৈশ্বিক সংকটের জন্য সরকারের পদত্যাগ দাবি করছেন। এ সরকার এদেশে সবচেয়ে জননন্দিত সরকার। ৭৫ পরবর্তীকালে শেখ হসিনাার চেয়ে সৎ প্রধানমন্ত্রী কে ছিলেন? এত দক্ষ প্রশাসক। করোনা কীভাবে মোকাবিলা করেছেন, বিনা পয়সায় ভ্যাকসিন দিয়েছেন। যা উন্নত দেশও দিতে পারেনি। আমরা সামাল দিয়েছি। এখনো আমরা সামাল দিয়ে যাচ্ছি। সারা দুনিয়ায় মূল্যস্ফীতি। সোমালিয়ায় দুর্ভিক্ষে ৩৬ সেকেন্ডে একজন মারা যাচ্ছে। সেখানে তো জনগণ সরকার পতনের দাবি করেননি।’
ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘বিএনপি নাকি ১০ ডিসেম্বর রাস্তায় বের হবে। ১০ ডিসেম্বর নাকি খালেদা জিয়াকে নিয়ে বিজয় মিছিল করবে। তার মানে লাঠিসোটা নিয়ে নামবে। এর বিরুদ্ধে খেলা হবে। বাড়াবাড়ি করলে ছাড় দেবো না।’
তিনি বলেন, ‘বেগম জিয়া কীভাবে মুক্ত হয়ে বাসায়। ১৩ বছরে ১৩ মিনিট রাস্তায় দেখিনি। বিক্ষোভের ডাক দিয়ে ঘরে বসে হিন্দি সিনেমা দেখেছেন। আর পুলিশের গতিবিধি লক্ষ্য করেছেন। নিজের দলের নেতার জন্য চোখে পড়ার মতো মিছিল বাংলাদেশের কোথাও দেখিনি। বেগম জিয়াকে শেখ হাসিনা উদরতা দেখিয়ে নির্বাহী আদেশে বাসায় থাকতে দিয়েছেন। বয়স ও স্বাস্থ্য বিবেচনা করে মানবিক কারণে মুক্ত করে বাসায় পাঠিয়েছেন। আপনারা তো তার জন্য কিছুই করতে পারেননি।’
‘খেলা হবে’ স্লোগান নিয়ে জাতীয় পাার্টির সদস্য ফিরোজ রশীদের সমালোচনার জবাবে তিনি বলেন, ভারতের পশ্চিমবঙ্গে যে নির্বাচন হয়েছে সেখানে মমতা ব্যানার্জি বিপুল সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেয়ে জিতেছেন। সেখানে মূল স্লোগান ছিলো ‘খেলা হবে’। ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীও দুর্নীতি, সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে ‘খেলা হবে’ বলে বক্তব্য দিয়েছেন। এটা একটা পলিটিক্যাল স্লোগান।
বিএনপি নেতারা শেখ হাসিনার নামটা পর্যন্ত শালীনতার সঙ্গে উচ্চারণ করেন না উল্লেখ করে ওবায়দুল কাদের বলেন, আমরা তো মারামারি করতে বলিনি। বলছি- তাদের দুর্নীতিতে ৫ বার চ্যাম্পিয়ন হওয়ার কথা। এটা পলিটিক্যাল টার্ম। ভোটচুরির জন্য ১ কোটি ২৩ লাখ ভুয়া ভোটার। ওয়ান ইলেভেন কি এমনিতেই এসেছে? দলীয় লোক দিয়ে আজিজ মার্কা নির্বাচন করতে গেছে।
তিনি বলেন, ২১ আগস্টের মাস্টারমাইন্ড মুফতি হান্নান জবানবন্দিতে জানিয়েছিলেন, হাওয়া ভবনের সিগনাল পেয়ে তারা গ্রেনেড হামলা শুরু করেছিল। শেখ হাসিনাকে টার্গেট করে হত্যার ষড়যন্ত্র করেছেন। মাস্টারমাইন্ড তারেক জিয়া। এসব কথা বললে আপনাদের গায়ে লাগে কেন?
বিএনপির তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবির জবাবে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘তত্ত্বাবধায়ক সরকারকে উচ্চ আদালত মিউজিয়ামে পাঠিয়েছে। সেই তত্ত্বাবধায়ক নিয়ে লাফালাফি, বাড়াবাড়ি, রাস্তায় হুমকি। জাতীয় পতাকা লাঠির সঙ্গে বেঁধে রাস্তায় নামেন। এটা হচ্ছে বাড়াবাড়ি। এই বাড়াবাড়ির বিরুদ্ধেও খেলা হবে। প্রধানমন্ত্রী যেটা বলেছেন সেটা বাড়াবাড়ির জন্য বলেছেন। আমরা ছাড় দিচ্ছি। কিন্তু মনে রাখবেন বাড়াবাড়ি করলে ছাড় দেবো না। পরিষ্কার কথা। আমরা আওয়ামী লীগ কোথাও কি আপনাদের সাথে মারামারি করতে গেছে? আমরা তো বিএনপির সমাবেশে মারামারি করতে যাইনি। কেন এসব কথা তুলছেন।’
বিএনপির আমলের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘আমরা একটা লোকও কি তখন ঘরে থাকতে পেরেছি? পাঁচ বছরে আমি পাঁচদিনও ঘরে থাকতে পারিনি। আমাদের নেতাদের প্রত্যেকের গায়ে মার খাওয়ার দাগ আছে। বেধড়ক পেটানো হয়েছে। ফখরুল সাহেব থেকে শুরু করে সব নেতা ঘরে থাকেন। আমরা বাড়িঘরে থাকতে পারিনি। আপনারা বিএনপি- ‘বাংলাদেশ নালিশ পার্টি’।’
previous post