Home রাজনীতি বিএনপিতে গ্রেফতার হামলা আতঙ্ক

বিএনপিতে গ্রেফতার হামলা আতঙ্ক

নিউজ ডেস্ক

by Nahid Himel

ভাগীয় গণসমাবেশে উজ্জীবিত বিএনপি নেতাকর্মীরা। সব বাধা উপেক্ষা করে তারা বিভিন্ন    সভা-সমাবেশে যাচ্ছে। তবে দলটির নেতাকর্মীদের মধ্যে বিরাজ করছে গ্রেফতার আতঙ্ক। ইতোমধ্যে অনেক স্থানে নেতাকর্মীরা সমাবেশের আগে ও পরে হামলার শিকার হয়েছেন।  দায়ের হচ্ছে মামলা। দলটির নেতাকর্মীদের আশঙ্কা চূড়ান্ত আন্দোলন শুরুর আগে বাড়বে বাধা ও গ্রেফতার। বিশেষ করে ঢাকায় বিভাগীয় গণসমাবেশের আগে এ মাত্রা বাড়তে পারে। নতুন মামলার পাশাপাশি পুরোনো মামলায় ‘  সক্রিয় নেতাদের গ্রেফতার করা হতে পারে। তাই নেতাকর্মীদের আপাতত সংঘাত ও গ্রেফতার এড়িয়ে চলার পরামর্শ দিয়েছে হাইকমান্ড।

জানতে চাইলে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন,  ক্ষমতায় টিকে থাকতে ফের মামলা, হামলা ও গ্রেফতারের পথ বেছে নিয়েছে। নেতাকর্মীদের চাপে রাখতে সামনের দিনগুলোয় এর মাত্রা আরও বাড়তে পারে। ভোটাধিকার ও গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারে মানুষ রাজপথে নেমে এসেছে।  কোনো বাধাই এবার নেতাকর্মীদের আটকাতে পারবে না। গণবিচ্ছিন্ন ও বেআইনি ক্ষমতার প্রবল প্রতাপ জনগণ বেশিদিন সহ্য করে না। ইতিহাস তাই বলে।

গত বৃহস্পতিবার জেলহত্যা দিবসের আলোচনায় প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা নেতাকর্মীদের উদ্দেশে বলেন, ‘খালেদা জিয়া অসুস্থ, বয়োবৃদ্ধ। তাঁর বোন, ভাই, বোনের জামাই আমার কাছে এসে আবেদন করেছেন। আমরা তার সাজা স্থগিত করে বাড়িতে থাকার সুযোগটা দিয়েছি। মানবিক কারণেই দিয়েছি। কিন্তু বিএনপি বেশি বাড়াবাড়ি করলে আবার (খালেদা জিয়াকে) জেলে পাঠিয়ে দেব। কোনো চিন্তা করবেন না।’ বিএনপিকে আগামী ডিসেম্বরে আর ছাড় দেয়া হবে না বলে হুঁশিয়ারি দিচ্ছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। শনিবার বাড্ডায় ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগ আয়োজিত শান্তি মিছিলপূর্ব সমাবেশে বিএনপির উদ্দেশে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘এখন ছাড় দিচ্ছি। ডিসেম্বরে ছেড়ে দেব না। ডিসেম্বরে ছাড়ব না। ডিসেম্বরে হবে ফাইনাল খেলা।’ রোববার জাতীয় সংসদে অনির্ধারিত আলোচনায় অংশ নিয়েও বিএনপিকে হুঁশিয়ারি দিয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘বাড়াবাড়ি করলে ছাড় দেব না। ছাড় দেওয়া হবে না।’

ক্ষমতাসীন দলের এমন হুমকিকে হালকাভাবে নিচ্ছে না বিএনপি। দলটির নেতাকর্মীরা মনে করেন, উজ্জীবিত নেতাকর্মীদের মধ্যে আতঙ্ক বা ভয়ভীতি সৃষ্টি করতে নানা কৌশল নিতে পারে সরকার ও ক্ষমতাসীন দল। চূড়ান্ত আন্দোলনে নামার আগে বড় ধরনের একটা ‘ক্র্যাকডাউন’ করা হতে পারে। এর অংশ হিসাবে এ মাসের শেষে কিংবা ডিসেম্বরের শুরুতে বাড়তে পারে ক্ষমতাসীন দলের বাধা। পাশাপাশি বাড়তে পারে গ্রেফতার।

সমাবেশ শুরুর আগে প্রায় সবখানেই নেতাকর্মীদের গ্রেফতারে বাসা, হোটেলসহ ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানে অভিযান চালানো হয় বলে অভিযোগ বিএনপির। সমাবেশকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষের ঘটনায় ময়মনসিংহ, খুলনা ও বরিশালে নেতাকর্মীদের নামে দেয়া হয়েছে নতুন মামলা।  ইশরাককে আসামি করে শতাধিক নেতাকর্মীর নামে দেয়া হয়েছে মামলা। গ্রেফতারও করা হয়েছে আট নেতাকর্মীকে। বরিশাল গণসমাবেশ শেষে ঢাকায় ফিরেই গ্রেফতার হয়েছেন মহিলা দলের সাধারণ সম্পাদক সুলতানা আহমেদ। লঞ্চ থেকে নেমে বাসায় ফেরার পথে তাকে গ্রেফতার করা হয়। ২ নভেম্বর বিএনপির সমাবেশ চলাকালে নয়াপল্টন দিয়ে যাওয়ার পথে হামলার মুখে পড়েন সুপ্রিমকোর্টের আপিল বিভাগের সাবেক বিচারপতি এএইচএম শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিক। এ ঘটনায় তার গানম্যান রফিকুল ইসলাম অজ্ঞাতনামা অর্ধশতাধিক ব্যক্তিকে আসামি করে একটি মামলা করেন। ওই মামলায় ইতোমধ্যে ছাত্রদলের ১১ নেতাকর্মীকে গ্রেফতার করা হয়েছে। অনেকেই আছেন গ্রেফতার আতঙ্কে। ১০ ডিসেম্বর ঢাকার গণসমাবেশকে সফল করতে মহানগর নেতাকর্মীরা প্রস্তুতি সভা শুরু করেছে। এখন থেকেই গ্রেফতার হচ্ছেন মহানগর নেতাকর্মীরা। গত এক সপ্তাহে গ্রেফতার হয়েছেন দারুসসালাম থানা বিএনপির সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক হুমায়ুন, মহানগর উত্তরের ১০নং ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি শাহজাহান সরকার, ১১নং ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি আফজাল হোসেন, ৭নং ওয়ার্ড বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক পারভেজ। ২৮ অক্টোবর গ্রেফতার হন মহানগর উত্তর বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য হুমায়ুন কবির রওশন।

 

এই বিভাগের আরো খবর

Leave a Comment