যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে এই প্রথম ৮০ বছর বয়সে পদার্পণ করা কোনো প্রেসিডেন্ট রাষ্ট্রক্ষমতায় অধিষ্ঠিত রয়েছেন। তার পরও তিনি আশা করছেন তাঁর প্রেসিডেন্সির দ্বিতীয় টার্মের জন্য তিনি লড়তে প্রস্তুত। যুক্তরাষ্ট্রের ৪৬তম প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন বয়সে প্রবীণ হলেও ডেমোক্রেটিক দলের এই রাষ্ট্রপ্রধান অত্যন্ত সুচতুর, সাহসী এবং স্মার্ট বলে গণমাধ্যমের একটি অংশের ধারণা। বিশ্বব্যাপী বর্তমান উথাল-পাথাল রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক সংকটের মধ্যেও বাইডেন আশাবাদী তিনি তাঁর প্রতিপক্ষকে মোকাবেলা করতে সম্পূর্ণভাবে সক্ষম।
তাঁর প্রতিপক্ষের মধ্যে এখনো প্রধান অবস্থানে রয়েছেন তাঁর পূর্ববর্তী রিপাবলিকানদলীয় সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প।
যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্টদের তালিকায় ট্রাম্প একজন গোঁয়ার্তুমি ও স্বেচ্ছাচারিতাপ্রবণ ব্যক্তি হিসেবে চিহ্নিত। তাঁর উগ্র জাতীয়তাবাদী (শ্বেতাঙ্গ kalerkanthoশ্রেষ্ঠত্ববাদ) এবং ‘একলা চলার নীতি’ যুক্তরাষ্ট্রকে তাঁর শাসনামলে বিশ্বের বিভিন্ন দেশ এবং এমনকি ইউরোপ থেকেও বিচ্ছিন্ন করে ফেলেছিল। ডোনাল্ড ট্রাম্প যুক্তরাষ্ট্রের ৪৫তম প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়ার আগেই ডেমোক্রেটিক দলের সমালোচকরা তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলেছিলেন যে ট্রাম্পের কোনো রাজনৈতিক বা প্রশাসনিক পূর্বাভিজ্ঞতা নেই। যুক্তরাষ্ট্রে যাকে বলা হয় মুক্ত বিশ্বের নেতৃত্বদানকারী পরাশক্তি, সেই দেশ পরিচালনার জন্য ট্রাম্পের নেই তেমন উচ্চশিক্ষা কিংবা উন্নত দর্শন। বর্ণবাদী এবং সাম্প্রদায়িক এই ব্যক্তিটি চরিত্রহীন, স্বেচ্ছাচারী ও দুর্নীতিগ্রস্ত হিসেবে এখনো সমালোচিত হচ্ছেন। সেসব কারণে তাঁর দ্বিতীয় টার্মের নির্বাচনে তিনি তাঁর ডেমোক্রেটিকদলীয় প্রতিপক্ষ সাবেক প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার ভাইস প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের কাছে বিপুল জনপ্রিয় ভোটে হেরে যান। কিন্তু সেই নির্বাচনের রায়কে মেনে নেননি তিনি। তদুপরি ৬ জানুয়ারি ২০২১ সালে প্রেসিডেন্টের ক্ষমতা হস্তান্তরকে কেন্দ্র করে ক্যাপিটল হিলে চলাকালীন এক গুরুত্বপূর্ণ সভায় সশস্ত্র হামলা চালায় ট্রাম্পের দাঙ্গাবাজ সমর্থকরা। ডোনাল্ড ট্রাম্প তখন কংগ্রেস ভবনের বাইরে এক মঞ্চে অবস্থান করছিলেন। সেই সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পই এখন আবার তৃতীয়বারের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের জন্য তাঁর প্রার্থিতা ঘোষণা করেছেন তাঁর বিরুদ্ধে বিভিন্ন আইনি অভিযোগ ও তদন্ত প্রক্রিয়া মাথায় নিয়ে।
উল্লিখিত পরিস্থিতিতে মধ্যবর্তী নির্বাচনে কংগ্রেসের প্রতিনিধি পরিষদে সংখ্যাগরিষ্ঠতা হারিয়েও রাজনৈতিক অবস্থা তাঁর অনুকূলে রয়েছে বিবেচনা করে বর্তমান প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন তাঁর দ্বিতীয় টার্মে নির্বাচনের জন্য তৎপর হয়ে উঠেছেন। এ ক্ষেত্রে রাজনৈতিক তথ্যাভিজ্ঞ মহল তাঁর বয়স, যুক্তরাষ্ট্রের আর্থ-সামাজিক অবস্থা এবং বিশ্বপরিস্থিতির কথা সামনে রেখে প্রেসিডেন্ট বাইডেনকে বিষয়টি আবার ভেবে দেখার অনুরোধ জানিয়েছে। কারণ কংগ্রেসের প্রতিনিধি পরিষদ হারানোর ফলে তাঁর পক্ষে কোনো বিল উত্থাপন কিংবা আইন পাস করা সহজ হবে না। এ ক্ষেত্রে কংগ্রেসের উচ্চ পরিষদ সিনেটে ডেমোক্র্যাটরা সামান্য সংখ্যাগরিষ্ঠতা ধরে রাখতে সক্ষম হলেও আইনি বা সাংবিধানিক ক্ষেত্রে পাল্টাপাল্টি করা ছাড়া বেশি দূর অগ্রসর হওয়ার সুযোগ কমে গেছে। তা ছাড়া ২০২৪ সালে অনুষ্ঠেয় প্রেসিডেন্ট নির্বাচনকে কেন্দ্র করে জো বাইডেনের প্রতিপক্ষ রিপাবলিকানরা যে আগামী দুটি বছর কংগ্রেসের ভেতরে-বাইরে কিংবা নির্বাচনী মাঠে অত্যন্ত প্রতিদ্বন্দ্বিতামূলক ও তৎপর থাকবেন, তাতে কোনো সন্দেহ নেই।
যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যবর্তী নির্বাচন-পরবর্তী অবস্থায় ইন্দোনেশিয়ার বালিতে গত ১৫-১৬ নভেম্বর অনুষ্ঠিত হয়েছে শিল্পসমৃদ্ধ দেশগুলোর নেতাদের জি২০ শীর্ষ সম্মেলন। জি২০ শীর্ষ সম্মেলন হলো পরাশক্তিগতভাবে সমৃদ্ধ ও ধনিক-বণিক দেশগুলোর নেতাদের বিশ্বকাপ ফুটবলের মতো। সেখানে যুক্তরাষ্ট্র, চীন, রাশিয়া, ভারত ও অন্যরা বিভিন্ন কৌশলে তাদের শক্তিমত্তা প্রদর্শন করে। বিশ্ববাণিজ্য, প্রতিরক্ষাব্যবস্থা ও আন্তর্জাতিক সম্পর্কের ক্ষেত্রে ভবিষ্যৎ গতিপথ নির্ধারণ করে। সদ্যঃসমাপ্ত শীর্ষ সম্মেলনে স্বাগতিক দেশ ইন্দোনেশিয়ার প্রেসিডেন্ট জোকো উইদোদো যখন বিশ্বের বর্তমান অর্থনৈতিক দুরবস্থা, মুদ্রাস্ফীতি ও সম্ভাব্য বিশ্বমন্দা রোধকল্পে চলমান রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ থামাতে আকুল আহ্বান জানাচ্ছেন, যুক্তরাষ্ট্র এবং চীন তখন তাইওয়ান, ইন্দোপ্যাসিফিক বাণিজ্য পথ, দক্ষিণ কোরিয়া ও জাপানের নিরাপত্তা বিধান নিয়ে সোচ্চার থেকেছে। উত্তর কোরিয়ার পারমাণবিক অস্ত্রের পরীক্ষা-নিরীক্ষার অবসান বা নিয়ন্ত্রণ নিয়ে গলদঘর্ম হয়েছে। রাশিয়া-ইউক্রেন সংঘর্ষ থামানো নিয়ে দুই দিনের শীর্ষ সম্মেলনে কাঙ্ক্ষিত আলোচনা হলেও তা থামানোর ব্যাপারে কোনো নির্দিষ্ট সময়সীমা বেঁধে দেওয়া কিংবা কঠোর বিধি-নিষেধ আরোপ করা হয়নি। বিশ্ববাণিজ্যের প্রসার কিংবা সম্ভাব্য বিশ্ব মন্দারোধকল্পে সম্মিলিতভাবে তেমন কোনো ব্যবস্থা চালুর নির্দেশ এখনো পাওয়া যায়নি। জি২০ শীর্ষ সম্মেলনের আগের দিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ও চীনের প্রেসিডেন্ট শি চিনপিংয়ের মধ্যে অনুষ্ঠিত তিন ঘণ্টার রুদ্ধদ্বার বৈঠক সম্মেলনে যোগদানকারী অন্য সদস্য দেশগুলো কিংবা বিশ্ববাসীর দৃষ্টি কেড়ে নিয়েছিল। সেটিই এবারের শীর্ষ সম্মেলনের একমাত্র সাফল্য বলে বিবেচিত হয়েছে।
‘আমেরিকা ফার্স্ট’ বলে এক উগ্র জাতীয়তাবাদী স্লোগানের মাধ্যমে দেশের ৪৫তম প্রেসিডেন্ট (২০১৭-২০২১) হিসেবে নির্বাচিত হওয়ার পর তাঁর শাসনকালের চার বছরে ডোনাল্ড ট্রাম্প বিশ্বের অন্যতম প্রধান পরাশক্তিগতভাবে আন্তর্জাতিক প্রায় সব ক্ষেত্রে যুক্তরাষ্ট্রকে বিচ্ছিন্ন করে ফেলেছিলেন। লোকরঞ্জনবাদী এই নেতা সামরিক, কূটনৈতিক এবং অর্থনৈতিক দিক থেকে তাঁর ‘একলা চলো’ নীতির কারণে পশ্চিমা সামরিক জোট ন্যাটো কিংবা বৃহত্তরভাবে সামগ্রিক বিশ্বব্যবস্থা থেকেই দূরে সরে আসতে চেয়েছিলেন তাঁর দৃষ্টিতে আমেরিকান স্বার্থের কারণে। তিনি যুক্তরাষ্ট্রের অপরিমিত অর্থ ব্যয়ের মাধ্যমে ইউরোপে ন্যাটোভুক্ত দেশগুলোর নিরাপত্তা বিধান করতে অস্বীকৃতি জানান। শুধু তা-ই নয়, অর্থনীতি ও বাণিজ্যের ক্ষেত্রেও যুক্তরাষ্ট্রের বহুপক্ষীয় চুক্তি এবং সম্পর্ককে সংকুচিত করে বহুপক্ষীয় ব্যবস্থার মধ্যে আনার চেষ্টায় অনেকটা হন্যে হয়ে উঠেছিলেন। রাশিয়ার ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে তাঁর এক অঘোষিত সম্পর্ক থাকলেও চীনের বিরুদ্ধে ট্রাম্প শুরু করেছিলেন এক বাণিজ্য লড়াই। তাঁর উদ্দেশ্য ছিল চীনকে সামরিক এবং বিশেষ করে অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে বিশ্বের এক নম্বর অবস্থানে পৌঁছতে না দেওয়া। পরবর্তী সময়ে ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত হয়ে ডেমোক্রেটিকদলীয় প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনও বিশেষ করে চীনের বিরুদ্ধে সেই নীতিই অনুসরণ করতে থাকেন। ট্রাম্পের মতো, বিশেষ করে শুধু অর্থনৈতিক কিংবা বাণিজ্যিক ক্ষেত্রেই নয়, সামরিক দিক থেকেও জো বাইডেন বিশ্বব্যাপী যুক্তরাষ্ট্রের প্রভাব-প্রতিপত্তি কিংবা আধিপত্য বিস্তারে সচেষ্ট হয়ে ওঠেন। তারই ধারাবাহিকতায় দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া এবং মধ্যপ্রাচ্যে নিজেদের অবস্থান সুদৃঢ় করতে মাঠে নামেন বাইডেন। অকাস কিংবা কোয়াড নামের সামরিক জোট কিংবা সংস্থা গঠন করে তিনি চীনের আর্থ-সামরিক প্রভাব থেকে জাপান, দক্ষিণ কোরিয়া, ভারত এবং এমনকি তাইওয়ানসহ ইন্দোপ্যাসিফিক অঞ্চলের দেশগুলোর নিরাপত্তা বিধান করতে চেয়েছিলেন। যুক্তরাষ্ট্রের স্বীকৃত ‘এক চীন নীতি’কে পাশ কাটিয়ে তাইওয়ানের স্বাধীনতার দাবির প্রতি সমর্থন জোগাতে শুরু করেন প্রেসিডেন্ট বাইডেন। তাতে নতুন প্রেক্ষাপট কিংবা পরিসরে আরেক স্নায়ুযুদ্ধ বা ঠাণ্ডা লড়াইয়ের সূচনা হয়েছে এ অঞ্চলে। তথ্যাভিজ্ঞ মহল কিংবা আন্তর্জাতিক সংবাদ বিশ্লেষকদের বিভিন্ন অভিযোগ বা সেই সমালোচনার মুখে শুরু হয়েছিল রাশিয়া-ইউক্রেন সংঘর্ষ। এ ক্ষেত্রেও ইউরোপের ন্যাটোভুক্ত দেশগুলোর বৃহত্তর নিরাপত্তার প্রশ্নে রাশিয়াকে ভেঙে টুকরা টুকরা করার এক সাম্রাজ্যবাদী প্রয়াসে লিপ্ত হয়েছিল মার্কিন সাম্রাজ্যবাদ। তার ফল ভোগ করছে এখন করোনা-পরবর্তী নাজুক বিশ্ব।
ওপরে উল্লিখিত সার্বিক পরিস্থিতিতে চীনের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের যে অঘোষিত দ্বন্দ্ব বা বিরোধ চলছিল তাকে সামনে রেখেই এগিয়ে আসে ইন্দোনেশিয়ার বালিতে অনুষ্ঠিত জি২০ নেতাদের শীর্ষ সম্মেলন। আনুষ্ঠানিকভাবে সম্মেলনের প্রাক্কালে অনেকটা অপ্রতাশিতভাবেই যুুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ও চীনের প্রেসিডেন্ট শি চিনপিং এক বৈঠকে মিলিত হয়েছিলেন বিরাজমান বিভিন্ন সমস্যা নিয়ে আলোচনার উদ্দেশ্যে। তিন ঘণ্টা স্থায়ী সেই বৈঠকে জো বাইডেন ও শি চিনপিং রাশিয়া-ইউক্রেন সংঘর্ষ থেকে শুরু করে বর্তমান বিশ্বে বিরাজমান বিভিন্ন সমস্যা নিয়ে আলোচনা করেন। এবং সেই পথ ধরে উত্থাপিত হয়েছিল দুই দেশের মধ্যে বিরাজমান সবচেয়ে কঠিন ইস্যু তাইওয়ান প্রসঙ্গ। প্রেসিডেন্ট শি চিনপিংয়ের মতে, তাইওয়ান মূল চীন ভূখণ্ডের একটি অবিচ্ছদ্য অংশ। তাঁর অভিযোগ ছিল, যুক্তরাষ্ট্র ‘এক চীন নীতির’ স্বীকৃতি দিলেও তাইওয়ানের স্বাধীনতার দাবিকে কিভাবে সমর্থন জোগায়। এতে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় ক্রমে ক্রমে সংকট ও উত্তেজনা আরো ঘনীভূত হচ্ছে। তাইওয়ানকে ঘিরে যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক মহড়া ও সৈন্য সমাবেশ আরো বৃদ্ধি পাছে। শি চিনপিং সুস্পষ্টভাবে জানিয়েছেন, তাইওয়ান চীনের কাছে ‘প্রথম লাল লাইন (ফার্স্ট রেড লাইন)’, যা নীতিগতভাবে কোনো প্রকারেই লঙ্ঘন করা যাবে না। বাইডেন প্রত্যুত্তরে জানিয়েছেন, সেটা নিয়ে নতুন পরিসরে আরেকটি শীতল যুদ্ধের সূচনা করার প্রয়োজন নেই। তবে তিনি তাঁর সহযোগী মিত্র দেশ জাপান ও দক্ষিণ কোরিয়ার প্রতিরক্ষা নিশ্চিত করতে বদ্ধপরিকর। এ অবস্থায় যুক্তরাষ্ট্রের নিরাপত্তাবিষয়ক উপদেষ্টা জেইক সোলিভানের এ অঞ্চলে তাঁদের সেনাবাহিনীর সংখ্যা বৃদ্ধি করার প্রত্যয়ের মুখেও প্রেসিডেন্ট বাইডেন বলেছেন, এ অঞ্চলে বিরাজমান সংকটের নিরসনকল্পে তিনি তাঁর পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্থনি ব্লিংকেনকে বেইজিং পাঠাবেন বিস্তারিত আলোচনার জন্য। বাইডেন ও শি চিনপিং উভয়েই এ ক্ষেত্রে দ্বিপক্ষীয়ভাবে আলোচনা ও যোগাযোগ বৃদ্ধির ওপর জোর দেন।
এ অবস্থায় আগামী ২০২৪ সালে অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্রের পরবর্তী প্রেসিডেন্ট নির্বাচন, যাতে দ্বিতীয় টার্মে লড়ার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছেন বৃদ্ধ বাইডেন। ট্রাম্পের ভাগ্যে ভবিষ্যতে যা-ই ঘটুক, প্রতিনিধি পরিষদে সংখ্যাগরিষ্ঠতা পাওয়া তাঁর বিরোধী রিপাবলিকান দল এরই মধ্যে ভেতরে-বাইরে শুরু করেছে প্রেসিডেন্ট বাইডেন ও ডেমোক্র্যাটদের বিরোধিতা। প্রতিনিধি পরিষদের ওভারসাইট কমিটি অভিযোগ করেছে, নিজ পরিবারে প্রেসিডেন্টের অংশগ্রহণের পরিমাণ সর্বোচ্চ পর্যায়ে রয়েছে। বাইডেনের প্রেসিডেন্ট থাকা অবস্থায় তাঁর পুত্র হান্টার বাইডেন বিদেশে তাঁর পরিচয়ে বিশাল অঙ্কের বাণিজ্য করেছেন এবং কর ফাঁকি দিয়েছেন। তাতে প্রেসিডেন্ট জড়িত। এ বিষয়টি ও অন্যান্য অভিযোগ নিয়ে তাঁর বিরুদ্ধে অভিসংশন প্রস্তাব উত্থাপন করা হতে পারে। সুতরাং এসবের প্রেক্ষাপটে প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন বিরোধী রিপাবলিকানদের কাছ থেকে কতটুকু সহযোগিতা পাবেন তা সহজেই অনুমেয়। এ অবস্থায় রাশিয়া, চীন কিংবা তাঁর বিভিন্ন সাম্রাজ্যবাদী বা আধিপত্যবাদী কর্মসূচি নিয়ে কত দূর এগোতে পারবেন প্রেসিডেন্ট বাইডেন? এ বিষয়গুলো নিয়ে আমেরিকার ঘরে ঘরে এখন নতুন হিসাব-নিকাশ শুরু হয়েছে।
লেখক : বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থার (বাসস) সাবেক প্রধান সম্পাদক ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক
gaziulhkhan@gmail.com