বেসরকারি সংগঠন পাওয়ার অ্যান্ড পার্টিসিপেশন রিসার্চ সেন্টার (পিপিআরসি) এবং ব্র্যাক ইনস্টিটিউট অব গভর্ন্যান্স স্টাডিজের (বিআইজিডি)-এর চলতি বছরের মে মাসের একটি সমীক্ষায় দেশের জনসংখ্যার ১৮ দশমিক ৫৪ শতাংশ (৩০.৯ মিলিয়ন)কে ‘নব্য দরিদ্র’ হিসেবে শ্রেণিবদ্ধ করেছে। করোনা মহামারি এবং বর্তমান বিশ্বব্যাপী অস্থিরতার ফলে মূল্যস্ফীতি, সরবরাহ শৃঙ্খলে বিঘ্ন, জ্বালানি ও বিদ্যুতের ঘাটতি এবং বৈদেশিক রিজার্ভ হ্রাসের মতো বৈশ্বিক এবং জাতীয় আর্থিক সমস্যা দেখা দিয়েছে।
বিশেষজ্ঞদের পূর্বাভাস অনুযায়ী, বাংলাদেশের বার্ষিক মুদ্রাস্ফীতির হার আগস্টে ৯ দশমিক ৫২ শতাংশে পৌঁছে যাওয়ায় অর্থনৈতিক অস্থিরতা কিছু সময়ের জন্য অব্যাহত থাকবে। সাউথ এশিয়ান নেটওয়ার্ক অন ইকোনমিক মডেলিং (সানেম) এর সাম্প্রতিক সমীক্ষা অনুযায়ী গার্মেন্ট শ্রমিকদের খাদ্য নিরাপত্তা এপ্রিলের ৯৪ শতাংশ থেকে কমে সেপ্টেম্বরে ৮৬ শতাংশে নেমে এসেছে।
এমন অবস্থায় নিম্নআয়ের জনগোষ্ঠীর জন্য আর্থিক স্থিতিস্থাপকতা তৈরি করা জরুরি।
সুইসকন্ট্যাক্ট এবং মেটলাইফ ফাউন্ডেশনের অর্থায়নে পরিচালিত ‘সারথী- ইমপ্রুভিং ফাইন্যান্সিয়াল হেলথ’ নামক ফ্ল্যাগশিপ আর্থিক অন্তর্ভুক্তি প্রকল্প হতে ‘বাংলাদেশের স্বল্প-আয়ের জনসংখ্যার অর্থনৈতিক স্থিতিস্থাপকতা বৃদ্ধির জন্য আর্থিক সমাধান’ শীর্ষক আলোচনাসভা মঙ্গলবার আয়োজন করে।
উদ্যোগের মাধ্যমে বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংক, বাণিজ্যিক ব্যাংক, মোবাইল আর্থিক পরিষেবা প্রদানকারী প্রতিষ্ঠান, ক্ষুদ্রঋণ প্রতিষ্ঠান, বীমা প্রদানকারী প্রতিষ্ঠান, ট্রেড অ্যাসোসিয়েশন, ফিন-টেক প্রতিষ্ঠান, গার্মেন্ট ফ্যাক্টরি এবং আন্তর্জাতিক ক্রেতাদের মতামত এবং মুক্ত আলোচনার দুয়ার উন্মোচিত হয়।
সারথী-ইমপ্রুভিং ফিনান্সিয়াল হেলথ-এর টিম লিডার বিপাশা শারমিন হোসেন আর্থিক বাস্তুতন্ত্রের বর্তমান পরিস্থিতি তুলে ধরে মূল বক্তব্য উপস্থাপন করেন। এরপর ব্যাংক এশিয়ার ফার্স্ট অ্যাসিস্ট্যান্ট ভাইস-প্রেসিডেন্ট রুমানা আক্তার তুলি ইন্টারেক্টিভ সেশনটি পরিচালনা করা শুরু করেন যেখানে পরিস্থিতি উপযুক্ত বেশ কিছু বিষয় তুলে ধরা হয়। যেমন নিম্নআয়ের জনগোষ্ঠীর জন্য আর্থিক স্বাস্থ্য সমাধানের প্রাপ্যতা; মুদ্রাস্ফীতির সময়কালে অর্থনৈতিক স্থিতিস্থাপকতা তৈরিতে আর্থিক সমাধানের ভূমিকা এবং সর্বসাধারণের জন্য আর্থিক বাজারের যথার্থ সুযোগ তৈরির কার্যকর উপায়গুলি আলোচনা করা হয়।
আলোচনায় বিভিন্ন পরিস্থিতি উপযোগী এজেন্ডা তুলে ধরা হয়, যারমধ্যে রয়েছে সরকারি ও বেসরকারি উভয় ক্ষেত্রেই বিদ্যমান আর্থিক স্বাস্থ্য সমাধান সম্পর্কে সচেতনতার অভাব; নিম্নআয়ের জনগণের উপর সঠিক বাজার গবেষণা করে আর্থিক পণ্য ডিজাইন করা এবং খাদ্য নিরাপত্তাহীনতা ও মুদ্রাস্ফীতির অন্যান্য প্রভাব কমাতে কি কি উদ্যোগ নেয়া যায়।
বাংলাদেশ ব্যাংকের ফাইনান্সিয়াল ইনক্লুশন ডিপার্টমেন্টের পরিচালক জয়শ্রী বাগচী বলেন, আজকের আলোচনাটি দেশের অর্থনৈতিক বাস্তুতন্ত্রের চাহিদা ও যোগানের মধ্যে তথ্য বিস্তারের একটি সুযোগ করে দিয়েছে। এতে আমরা সকলেই বেশ কিছু নতুন উদ্যোগ সম্পর্কে জানতে পারলাম। আগামী বছর আমরা যৌথ উদ্যোগে দেশের অর্থনৈতিক পরিস্থিতির উন্নয়ন করতে পারব।
kalerkantho