Home রাজনীতি দেয়ালে পিঠ ঠেকে গেছে মানুষের : রাজশাহীতে মির্জা ফখরুল

দেয়ালে পিঠ ঠেকে গেছে মানুষের : রাজশাহীতে মির্জা ফখরুল

নিউজ ডেস্ক

by Nahid Himel

‘এই আন্দোলন বিএনপির জন্য নয়, খালেদা জিয়াকে প্রধানমন্ত্রী বানানোর জন্য নয়, তারেক রহমানের জন্য নয়, আমাদের মন্ত্রী হওয়ার জন্য নয়। এই আন্দোলন আমাদের অধিকার ফিরে পাওয়ার আন্দোলন। আমি যে গত দুবার ভোট দিতে পারলাম না, দেশের যুবসমাজ দুবার ভোট দিতে পারল না, আমরা ভোটের অধিকার ফিরে পেতে আন্দোলন করছি। দেয়ালে পিঠ ঠেকে গেছে, দেশের মানুষ মুক্তি চায়।

গতকাল শনিবার রাজশাহীতে বিএনপির বিভাগীয় গণসমাবেশে এসব কথা বলেন দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেন, ‘তত্ত্বাবধায়ক সরকার বিধান চাই। নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন হতে হবে। অন্যথায় এ দেশে কোনো নির্বাচন হবে না। ’

বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার নিঃশর্ত মুক্তি ও নির্বাচনকালীন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবি এবং জ্বালানি তেল, চাল-ডালসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি, পুলিশ ও সন্ত্রাসীদের গুলিতে দলীয় নেতাকর্মী হত্যা, হামলা এবং মিথ্যা মামলার প্রতিবাদে এই গণসমাবেশ হয়।

বিএনপি নেতাদের নির্যাতনের কথা উল্লেখ করে বিএনপির মহাসচিব বলেন, ‘বিএনপিকে এত পেটায়, এত মামলা দেয়, তার পরও বিএনপি উঠে আসে কোত্থেকে? বিএনপি মাটি ফুঁড়ে বেরিয়ে আসে। এ জন্য ভয় পেয়েছে। ১০ তারিখেও ভয় পেয়েছে। ’

তিনি বলেন, ‘আমরা বলেছি, পার্টি অফিসের সামনে সমাবেশটা করতে চাই। ওদের ঘুম হারাম হয়ে গেছে। আমরা নয়াপল্টনে অনেক সমাবেশ করেছি। লক্ষ লক্ষ মানুষ হয়েছে। ওই দিন তো কোনো সমস্যা হয় নাই। আজকে হঠাৎ আপনাদের মাথায় সমস্যা আসছে কেন?’

kalerkanthokalerkantho

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক, কী যেন নাম তাঁর? ওবায়দুল কাদের সাহেব। তিনি বলছেন, সংবিধান অনুযায়ী নির্বাচন হবে। কোন সংবিধান? যে সংবিধান তোমাদের ক্ষমতায় রাখার জন্য বারবার কাটাছেঁড়া করেছ, সেই সংবিধান? তিনটি অনুচ্ছেদ রেখেছ, যার অধীনে একটা কথাও বলা যাবে না। সেই সংবিধান চলতে পারে না। ’

গণসমাবেশে সভাপতিত্ব করেন রাজশাহী মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক বীর মুক্তিযোদ্ধা এরশাদ আলী ঈসা। অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান, সাবেক বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী ও বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু, স্থায়ী কমিটির সদস্য সেলিনা রহমান, জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার মীর হেলাল উদ্দীন, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা মিজানুর রহমান মিনু, রাজশাহী বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক রুহুল কুদ্দুস তালুকদার দুলু, সহসাংগঠনিক সম্পাদক সৈয়দ শাহীন সওকত ও ওবাইদুর রহমান, সহদপ্তর সম্পাদক তাইফুল ইসলাম টিপু, বগুড়ার সংসদ সদস্য গোলাম মাহমুদ সিরাজ ও সংসদ সদস্য মোমাররফ হোসেন।

নেতাকর্মীদের মধ্যে সংঘর্ষ : গণসমাবেশে দুটি পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ হয়েছে। গতকাল দুপুর ২টার দিকে সমাবেশ মঞ্চের সামনে তৃণমূলের নেতাকর্মীদের মধ্যে কথা-কাটাকাটিকে কেন্দ  করে সংঘর্ষ বেধে যায়। এ সময় নেতাকর্মীরা দলীয় ফেস্টুন-ব্যানার দিয়ে একে অন্যের ওপর হামলা চালান। তবে এ সংঘর্ষ কিছুক্ষণ পরই থেমে যায়। এতে কেউ জখম হয়নি। সংঘর্ষের সময় প্রধান অতিথি বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন।

ইন্টারনেট সেবা বন্ধ : সমাবেশ শুরু হওয়ার কিছুক্ষণ পর সমাবেশস্থল ও আশপাশের এলাকায় ইন্টারনেট সেবা বন্ধ হয়ে যায়। সমাবেশ শেষে বিকেল ৫টার দিকে এই সেবা চালু হয়। এতে সাত ঘণ্টার মতো বন্ধ ছিলে ইন্টারনেট সেবা।

নেট বন্ধ থাকায় দুর্ভোগ পোহান গণমাধ্যমকর্মীরা। সমাবেশস্থলে আসা একটি বেসরকারি টিভি চ্যানেলের ক্যামেরা পারসন মাহফুজ আহমেদ বলেন, ‘সকাল ৮টায় আমরা লাইভ করেছি। কিন্তু সমাবেশ শুরুর পর থেকে ইন্টারনেট সেবা বন্ধ। ’

নাম প্রকাশ না করে এক পুলিশ কর্মকর্তা বলেন, সমাবেশ চলাকালে ইন্টারনেট সভা বন্ধ থাকবে। এমনটাই আগে থেকে নির্দেশনা ছিল।

পরিবহন ধর্মঘট প্রত্যাহার : রাজশাহী বিভাগীয় মালিক সমিতির ডাকা ধর্মঘট প্রত্যাহার করা হয়েছে। গতকাল রাজশাহী বিভাগীয় সড়ক পরিবহন মালিক-শ্রমিক পরিষদের সভাপতি সাফকাত মঞ্জুর বিপ্লব কালের কণ্ঠকে এ তথ্যের সত্যতা নিশ্চিত করেন।

তিনি জানান, বিকেল ৩টায় রাজশাহী বিভাগীয় কমিশনারের সঙ্গে আলোচনা শেষে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। তাঁদের ১০ দফা দাবির বেশির ভাগ প্রশাসন মেনে নেওয়ায় সন্ধ্যা ৬টা থেকে সব জেলায় বাস চলাচল করবে।

১ ডিসেম্বর ১০ দফা দাবিতে রাজশাহী বিভাগে যাত্রী পরিবহন ধর্মঘট ডাকা হয়। গত শুক্রবার দুপুর সাড়ে ১২টা থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য সিএনজিচালিত অটোরিকশা, থ্রি হুইলার মালিকরাও ধর্মঘটের ডাক দেন।

এই বিভাগের আরো খবর

Leave a Comment