আল্লা মোর কপালোত কি এই রকমেই থুচলো। মুই কি এমন দোষ করছুং যে মোক এত বড় শাস্তি দিলু। মোর স্বামীক কারি নিলু ছওয়াটাক কারি নেইস না আল্লা। মোর ছওয়াটা বাপক একমুট মাটি ও দিবার পাইল না শ্যাষ দেখা দেখিরও পাইল না।
সড়ক দুর্ঘটনায় স্বামীকে হারিয়ে ও একই দুর্ঘটনায় সন্তান হাসপাতালে চিকিৎসাধীন থাকায় এভাবেই কথাগুলো বলছেন আর বারবার জ্ঞান হারিয়ে ফেলছেন আরজিনা বেগম (৩৫)।
সোমবার সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় রংপুরের তারাগঞ্জে অ্যাম্বুলেন্সের ধাক্কায় অটোরিকশার পাঁচজন যাত্রী নিহত হন। রংপুর-দিনাজপুর মহাসড়কের তারাগঞ্জ উপজেলার নেংটিছেড়া ব্রিজ নামক এলাকায় এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।
মঙ্গলবার দুপুরে উপজেলার শেরমস্ত পাতিলপাড়া গ্রামে দুর্ঘটনায় নিহত খাদেমুল ইসলামের বাড়িতে গেলে দেখা যায়, দূর-দূরান্ত থেকে আত্মীয় স্বজনসহ আশপাশের হাজার হাজার নারী ও পুরুষ খাদেমুলের বাড়িতে তার পরিবারের সদস্যদের সান্ত্বনা দিয়ে এসেছেন।
খাদিমুলের স্ত্রী আরজিনা বেগম স্বামীর এমন মৃত্যু ও একমাত্র সন্তান রংপুর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন থাকায় বারবার জ্ঞান হারিয়ে ফেলছেন।
এ সময় কথা হয় খাদিমুলের বড়ভাই সিরাজুল ইসলামের সঙ্গে। তিনি বলেন, ভাইয়ের একমাত্র ৫ বছরের ছেলে ইব্রাহিমকে জানুয়ারি মাসে স্কুলে ভর্তি করে দেবে এজন্য সোমবার বিকালে শীতের গরম কাপড় ও শার্ট প্যান্ট নিয়ে দেওয়ার জন্য ছেলেকে সঙ্গে নিয়ে তারাগঞ্জ বাজারে যান। কেনাকাটা করে সন্ধ্যার পর তারাগঞ্জ বাসস্ট্যান্ড থেকে অটোরিকশায় চড়ে বাড়িতে ফেরার পথে ভাই খাদেমুল মারা যান। কিন্তু ভাগ্যক্রমে ভাতিজা ইব্রাহিম (৬) বেঁচে গেলেও বর্তমানে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রয়েছে। ইব্রাহিম বাবার মুখটা শেষবারের জন্য দেখতে পেল না, বাবাকে একমুট মাটিও দিতে পারল না হতভাগা।
তারাগঞ্জ হাইওয়ে থানার অফিসার ইনর্চাজ মাহাবুব মোর্শেদ বলেন, সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত ৫ জনের লাশ তাদের পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। অ্যাম্বুলেন্সটি বর্তমানে হাইওয়ে থানার হেফাজতে রয়েছে।