দীর্ঘদিন পর পাশাপাশি চেয়ারে বসে সমাবেশ করলেন বিরোধী দলের নেতা রওশন এরশাদ ও জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জিএম কাদের। দলের ৩৭তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষ্যে রাজধানীর কাকরাইলে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে সমাবেশে জিএম কাদের উপস্থিত থাকলেও আদালতের নিষেধাজ্ঞার কারণে তিনি কোনো বক্তব্য দেননি। এ সময় প্রধান অতিথির বক্তব্যে জাতীয় পার্টির প্রধান পৃষ্ঠপোষক ও বিরোধীদলীয় নেতা রওশন এরশাদ বলেন, জাতীয় পার্টি নির্বাচন বর্জন করেনি ভবিষ্যতেও করবে না। আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন সংবিধান অনুযায়ী অনুষ্ঠিত হবে। সেই নির্বাচনে জাতীয় পার্টি অংশগ্রহণ করবে। নির্বাচনে আশানুরূপ ফলাফল অর্জনে আমাদের এখন থেকেই প্রস্তুতি গ্রহণ করতে হবে। কর্মতৎপরতা আরও বৃদ্ধি করতে হবে। তৃণমূল পর্যায়ে দলকে শক্তিশালী করতে হবে। স্বজনপ্রীতি পরিহার করে সব পর্যায়ের কমিটি গঠনে যোগ্যতার মাপকাঠি বজায় রাখার পরামর্শ দেন তিনি।
জাতীয় পার্টি সব সময় গঠনমূলক রাজনীতিতে বিশ্বাসী উল্লেখ করে তিনি বলেন, আমরা কখনো ধ্বংসাত্মক রাজনীতিতে বিশ্বাসী নই। ভবিষ্যতেও ধ্বংসাত্মক এবং অপরাজনীতিতে জড়াব না। জাপা শান্তিতে বিশ্বাসী। আমরা আমাদের সুআচরণ, ভালোবাসা এবং গঠনমূলক রাজনীতির মাধ্যমে জনগণের মন জয় করে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিপুল ভোটে জয়ী হব।
আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দলীয় মনোনয়ন দেয়ার ক্ষেত্রে যোগ্য, জনপ্রিয় এবং ত্যাগী নেতাদের অগ্রাধিকার দিতে হবে-এমন পরামর্শের কথা তুলে ধরে রওশন এরশাদ বলেন, অতীত এবং দুঃসময়ে যাদের ব্যাপক ত্যাগ ও শ্রম ছিল, তাদের দলীয় বিভিন্ন পদে যথাযথ মূল্যায়ন করতে হবে। আগামী কাউন্সিলে এই বিষয়কে যথেষ্ট গুরুত্ব দেওয়া হবে। দলের গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে সিনিয়র নেতাদের একত্রে বসে আলোচনার মাধ্যমে সর্বসম্মতিক্রমে সিদ্ধান্ত নিতে হবে। দলীয় কর্মীদের মনোভাবকে মূল্যায়ন করতে হবে। তাহলেই নিজেদের মধ্যে মান-অভিমান অনেকটাই কমে যাবে। একইভাবে দলও সাংগঠনিকভাবে যথেষ্ট শক্তিশালী হবে। এরশাদের বিভিন্ন উন্নয়ন কর্মকাণ্ডের কথা তুলে ধরে রওশন এরশাদ বলেন, আজ আমাদের দায়িত্ব হলো তার অসম্পূর্ণ কাজকে সম্পূর্ণ করা।
এর আগে বিকাল ৪টা ১০ মিনিটে হুইল চেয়ারে করে মঞ্চে আসেন রওশন এরশাদ। চেয়ারে বসেই বক্তব্য দেন তিনি। কর্মসূচিতে দলের বিপুলসংখ্যক নেতাকর্মী উপস্থিত হন। বক্তব্যে কেন্দ্রীয় নেতারা দুটি বিষয় একেবারেই পরিষ্কার করেন। তা হলো, সংবিধান অনুযায়ী আগামী নির্বাচনে অংশ নেবে জাপা। তবে কোনো দলের সঙ্গে জোট না করে ৩০০ আসনে প্রার্থী দেওয়ার কথা স্পষ্টই জানিয়েছেন শীর্ষ নেতারা। জাতীয় পার্টির মহাসচিব মুজিবুল হক চুন্নু এমপি সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন। প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষ্যে সাবেক প্রতিমন্ত্রী ও জাতীয় পার্টির কো-চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট সালমা ইসলাম এমপির নির্বাচনি এলাকা দোহার-নবাবগঞ্জসহ বিভিন্ন এলাকা থেকে বিপুলসংখ্যক নেতাকর্মী কর্মসূচিতে যোগ দেন।