এ সময় বিশ্বব্যাংকের এমডি বাংলাদেশের উন্নয়নকে ‘অবিশ্বাস্য’ হিসাবে বর্ণনা করেন এবং উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখতে ঢাকার পাশে থাকার আশ্বাস দেন। তিনি বলেন, ‘আমরা ১৯৭২ সাল থেকে বাংলাদেশের পাশে আছি এবং দেশের উন্নয়ন প্রচেষ্টায় আমাদের সমর্থন অব্যাহত রাখব।’ অ্যাক্সেল ভ্যান ট্রটসেনবার্গ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দূরদর্শী নেতৃত্বে বাংলাদেশের ব্যাপক উন্নয়নের ভূয়সী প্রশংসা করেন।
সাক্ষাৎকালে শেখ হাসিনা বলেন, ‘বাংলাদেশের জনগণের মাথাপিছু আয় ছিল মাত্র ৫০ মার্কিন ডলার; কিন্তু তা এখন বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২৮২৪ মার্কিন ডলারে। তিনি বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনের ক্ষতিকর প্রভাবের জন্য মূলত উন্নত দেশগুলো দায়ী। এক্ষেত্রে তারা তাদের প্রতিশ্রুতি যথাযথভাবে পালন করছে না।’ প্রধানমন্ত্রী জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব থেকে উদ্ভূত চ্যালেঞ্জগুলো কাটিয়ে উঠতে তার সরকার কী করছে, তা সংক্ষেপে তুলে ধরেন। তিনি বলেন, সরকার ব্যাপক বনায়ন, গ্রিন বেল্ট নির্মাণ, দুর্বল মানুষের জন্য টেকসই আবাসনব্যবস্থা গ্রহণ এবং প্রজন্মের পর প্রজন্মকে উন্নত জীবন দিতে ‘ডেল্টা প্ল্যান-২১০০’ বাস্তবায়নের পাশাপাশি নিজস্ব অর্থায়নে জলবায়ু ট্রাস্ট ফান্ড গঠন করেছে।
সরকারপ্রধান বলেন, ‘রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা বজায় থাকার কারণে আমরা গত ১৪ বছরে দেশের দ্রুত উন্নয়ন করতে পেরেছি। কোভিড-১৯ মহামারির আগে বাংলাদেশ জিডিপিতে ক্রমাগত ৮ শতাংশের বেশি প্রবৃদ্ধি অর্জন অব্যাহত ছিল। কিন্তু মহামারির কারণে জিডিপি প্রবৃদ্ধি হ্রাস পেয়েছে এবং উন্নয়নে বাধা সৃষ্টি হয়েছে। তবে তা পুনরুদ্ধার করা হচ্ছে।’
তিনি বলেন, কোভিড-১৯ মহামারি এবং রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে জ্বালানি তেল, খাদ্যসামগ্রী ও পরিবহণ ব্যয় আকাশচুম্বী হওয়ায় উন্নয়নশীল দেশগুলো সমস্যায় পড়েছে।
বিশ্বব্যাংকের এমডি ট্রটসেনবার্গ বলেন, ‘কোভিড-১৯ মহামারি, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ এবং জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে বাংলাদেশের মতো উন্নয়নশীল দেশগুলো কিছু চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হবে। এ অবস্থায় টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করতে হলে উন্নয়নশীল দেশগুলোর উচিত নতুন প্রজন্মের জন্য কর্মসংস্থান সৃষ্টি করা।’
এ সময় প্রধানমন্ত্রীর আন্তর্জাতিক সম্পর্কবিষয়ক উপদেষ্টা ড. গওহর রিজভী, প্রধানমন্ত্রীর অ্যাম্বাসেডর অ্যাট লার্জ মোহাম্মদ জিয়াউদ্দিন, প্রধানমন্ত্রীর মুখ্যসচিব এম তোফাজ্জল হোসেন মিয়া এবং অর্থসচিব ফাতিমা ইয়াসমিন উপস্থিত ছিলেন।
বিশ্বব্যাংকের এমডি তিন দিনের সরকারি সফরে শনিবার বাংলাদেশে আসেন।