প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা বলেছেন, তাঁর দল কখনো পলায়ন করে না বরং জনগণের সাথে থেকে তাদের উন্নতির জন্য কাজ করে যায়। তিনি ২০৪১ সালের ম"/>
Home Lead 1 রাজশাহীতে বিশাল জনসমুদ্রে প্রধানমন্ত্রী ৷৷ বঙ্গবন্ধুর মাটিতে কেউ গৃহহীন থাকবে না

রাজশাহীতে বিশাল জনসমুদ্রে প্রধানমন্ত্রী ৷৷ বঙ্গবন্ধুর মাটিতে কেউ গৃহহীন থাকবে না

নিউজ ডেস্ক

by Nahid Himel
প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা বলেছেন, তাঁর দল কখনো পলায়ন করে না বরং জনগণের সাথে থেকে তাদের উন্নতির জন্য কাজ করে যায়।
তিনি ২০৪১ সালের মধ্যে একটি উন্নত, সমৃদ্ধ এবং ‘স্মার্ট বাংলাদেশ’ গড়তে দেশবাসীকে আবারও নৌকা মার্কায় ভোট দিয়ে জয়যুক্ত করারও আহ্বান জানান।তিনি বলেন, ‘যারা (বিএনপি নেতারা) বলছে আওয়ামী লীগ পালানোর সুযোগ পাবে না, আমি তাদের একটা কথা পরিষ্কার করতে চাই যে, আওয়ামী লীগ কখনো পালায় না, কিন্তু তাদের নেতারাই পালিয়ে যায়।’
প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা গতকল বিকেলে নগরীর ঐতিহাসিক মাদ্রাসা মাঠে রাজশাহী মহানগর আওয়ামী লীগ ও জেলা আওয়ামী লীগের উদ্যোগে লাখো মানুষের অংশগ্রহণে জনসমুদ্রে পরিণত হওয়া মহাসমাবেশে প্রধান অতিথির ভাষণে একথা বলেন।
সমাবেশ স্থল থেকে প্রধানমন্ত্রী রাজশাহী সিটি করপোরেশনের (আরসিসি) সাতটিসহ  মোট ২৬টি প্রকল্পের উদ্বোধন ও ছয়টি প্রকল্পের ভিত্তিপ্রস্থর স্থাপন করেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আজকে বিরোধী দল অনেক কথাই বলে, তারা নোটিশ দেয় আবার বলে আমরা নাকি পালাবার পথ পাব না। তিনি বিএনপি-জামাতকে প্রশ্ন করেন পালায়  কে? কারণ আওয়ামী লীগ কখনও পালায় না, পিছু হটে না।
’৭৫ এ জাতির পিতাকে হত্যার পর সামরিক শাসক জিয়াউর রহমানের বাধা সত্ত্বেও ’৮১ সালে আওয়ামী লীগের সভাপতি নির্বাচিত হবার পর একরকম জোর করেই দেশে ফিরে আসার উল্লেখ করে তিনি বলেন, আবার ২০০৭ সালে ছেলের বউ অসুস্থ থাকায় তাঁকে বিদেশ যেতে হয়েছিল কিন্তু তাঁর ফেরায় আবারও বাধার সৃষ্টি করা হয়, মামলা হুমকি ধমকি উপেক্ষা করেও সে সময় বাংলার মানুষের কথা চিন্তা করে জোর করে তিনি দেশে ফিরে এসেছিলেন।
‘আজকে যারা বলে আওয়ামী লীগ পালানোর সুযোগ পাবে না, তাদের আমি স্পষ্ট বলতে চাই আওয়ামী লীগ পালায় না, পালায় আপনাদের নেতারাই,’ বলেন তিনি।
শেখ হাসিনা বলেন, বিএনপি নেতারা নাকি দুর্নীতির বিরুদ্ধে লড়াই করবে তাদের দুর্নীতিতে সাজাপ্রাপ্ত বর্তমান ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে নিয়ে। যে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময় স্ট্যাম্পে মুচলেকা দিয়ে দেশ থেকে পালিয়ে গিয়েছিল আর রাজনীতি করবে না বলে। সেই কথা কি বিএনপি নেতাদের মনে নাই। দুর্নীতিতে সাজাপ্রাপ্ত খালেদা ও তারেক। এমনকি খালেদা জিয়া তারেক কোকোর মাধ্যমে যে টাকা পাচার করেছিল তার ৪০ কোটি টাকা আমরা বিদেশ থেকে ফেরত আনতে সক্ষম হয়েছি।
তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ কখনো পালায়না বরং জনগণকে নিয়েই কাজ করে। কেননা এই সংগঠন জাতির পিতা শেখ মুজিবের হাতে গড়া সংগঠন। এই সংগঠন যখন ক্ষমতায় থাকে বাংলাদেশের মানুষের তখনই ভাগ্যের পরিবর্তন হয়।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আজকের বাংলাদেশ খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ। আমরা দারিদ্রের হার ৪০ ভাগ থেকে ২০ ভাগে নামিয়েছি। সামাজিক নিরাপত্তাবলয়ের কর্মসূচির আওতায় বিভিন্ন ভাতা ও সুবিধা প্রদানের পাশাপাশি তিনি ভূমিহীন-গৃহহীনদের জন্য তাঁর সরকারের বিনা মূল্যে ২ কাঠ জমিসহ ঘর নির্মাণ করে দেয়ার মাধ্যমে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবের এই বাংলায় একটি মানুষও যাতে গৃহহীন না থাকে, কেউ যেন খাদ্যের জন্য কষ্ট না পায় সেজন্য তাঁর সরকারের পদক্ষেপের উল্লেখ করেন তিনি।
গত নির্বাচনে (জাতীয় নির্বাচন) এবং মেয়র নির্বাচনে ভোট দেয়ার জন্য তিনি রাজশাহীর জনগনণকে কৃতজ্ঞতা জানিয়ে আগামী জাতীয় নির্বাচনেও নৌকায় ভোট প্রত্যাশা করেন।
তিনি বলেন, ‘আগামীতে নির্বাচন আসবে, এই বছরের শেষে বা আগামী বছরের শুরুতে সেখানে আপনারা নৌকা মার্কায় ভোট দেবেন কি না ওয়াদা চাই।’
সমবেত জনতা এই সময় দুই হাত তুলে সমস্বরে চিৎকার করে ওয়াদা করলে তিনি সকলকে ধন্যবাদ জানান এবং বলেন, ২০৪১ সালের মধ্যে স্মার্ট বাংলাদেশ যেন গড়তে পারি  সেজন্যই আপনারা সকলে নৌকায় ভোট দেবেন।
সমাবেশে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য আবদুর রহমান ও অ্যাডভোকেট জাহাঙ্গীর কবির নানক, রাজশাহী সিটি করপোরেশনের মেয়র এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন, যুগ্ম সম্পাদক এবং তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ ও মাহবুবউল আলম হানিফ, খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার, পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মো. শাহরিয়ার আলম, আইসিটি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক, আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক এসএম কামাল, আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য নুরুল ইসলাম ঠান্ডু, ছাত্রলীগের সভাপতি সাদ্দাম হোসেন প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।
এতে সভাপতিত্ব করেন রাজশাহী মহানগর আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মোহাম্মদ আলী কামাল এবং সাধারণ সম্পাদক ডাবলু সরকার সমাবেশ সঞ্চালনা করেন।
‘৮১ সালে তাঁর অনুপস্থিতিতে তাঁকে আওয়ামী লীগের সভাপতি নির্বাচিত করা হয় উল্লেখ করে জাতির পিতার কন্যা বলেন, আমি এমন একটি দেশে ফিরে আসি, যেখানে আমার কোনো বিচার চাওয়ার অধিকার ছিল না। জাতির পিতার খুনিদেরকে ইনডেমনিটি দিয়ে বিচারের হাত থেকে রেহাই দিয়ে পুরস্কৃত করা হয়েছিল। সে অবস্থায় আমি দেশে ফিরে আসি শুধু বাংলাদেশের মানুষের ভাগ্য পরিবর্তন করার জন্য। ১৯৯৬ সালে যখন সরকার গঠন করি তারপর চেষ্টা করেছি, বাংলাদেশকে উন্নত করতে। জিয়া, এরশাদ, খালেদা জিয়া কেউ এদেশের মানুষের খাদ্য নিরাপত্তা দেয়নি, চিন্তাও করেনি। আওয়ামী লীগ ক্ষমতা এসেই বাংলাদেশকে খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ করে।
তিনি বলেন, এই রাজশাহীতে জাতির পিতা স্বাধীনতার পর কলকারখানা করেন। এরপর সব বন্ধ হয়ে যায়। আওয়ামী লীগ বন্ধ কারখানা চালু করতে কাজ করে। পদ্মা নদীর ভাঙন থেকে রক্ষার জন্য দীর্ঘ বাঁধ করে দিয়ে সেই ভাঙন আমরা রোধ করে দেই। রাজশাহীর মানুষের কর্মসংস্থানের কোনো ব্যবস্থা নেই, তাদের জন্য অনেকগুলো পদক্ষেপ নিয়েছি আমরা।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, রাজশাহী সবসময় অবহেলায় ছিল। আপনারা এখানে নৌকায় ভোট দিয়েছেন। আমরা উন্নয়ন করেছি। রাজশাহীতে ১০ হাজার ৬৬০ কোটি টাকার উন্নয়ন করা হয়েছে এবং ৪ হাজার কোটি টাকার কাজ চলছে। আজ যে কাজগুলো উদ্বোধন করা হল এগুলো রাজশাহীবাসীকে আমার উপহার।
তিনি এ সময় তিনি রাজশাহীতে বেসরকারি উদ্যোগে আন্তর্জাতিক মানের হোটেল গড়ে তোলায় এগিয়ে আসার জন্য শিল্প উদ্যোক্তাদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেন, সেক্ষেত্রে এটি আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের ভেন্যু হিসেবেও বিকশিত হতে পারবে।
বিএনপির কঠোর সমালোচনা করে আওয়ামী লীগ প্রধান বলেন, নৌকায় ভোট দেওয়ায় অপরাধে ফাহিমা-মহিমা-রজুফাদের ওপর নির্যাতন হয়েছে। অনেক মানুষকে হত্যা করা হয়েছে। অথচ এই নৌকায় ভোট দিয়েছে বলেই এদেশ স্বাধীন হয়েছে। নৌকায় ভোট না দিলে খালেদা জিয়া প্রধানমন্ত্রী হতে পারতো না। নৌকায় ভোট দিয়েছে বলেই জিয়াউর রহমান মেজর জেনারেল হতে পেরেছিল। অথচ সেই নৌকার প্রতি এতো ক্ষোভ কেন?
‘বাংলাদেশের মানুষ ভালো থাকুক এটা বিএনপি সহ্য করতে পারে না,’ উল্লেখ করে  তিনি বলেন, বিএনপি ক্ষমতায় এলেই এদেশে লুটপাট আর দুর্নীতি করে। আর আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এলে এদেশের মানুষ শান্তিতে থাকে, ভালো থাকে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা মানুষের জন্য কাজ করি। আর বিএনপি কী করে? মানুষ খুন করা, অগ্নিসন্ত্রাস করা তাদের কাজ।
তিনি ২০১৩, ১৪ ও ১৫ সালে আন্দোলনের নামে বিএনপির অগ্নিসন্ত্রাস ও মানুষ হত্যা এবং বাংলাভাইসহ সন্ত্রাস জঙ্গিবাদ সৃষ্টির প্রসঙ্গও উল্লেখ করেন।
তিনি বলেন, বিএনপি ৩ হাজার ৮০০ বাস, ২৯টি ট্রেন, লঞ্চ, প্রায় ৭০টি সরকারি অফিস, ৬টি ভূমি অফিস আন্দোলনের নামে পুড়িয়েছে।
শেখ হাসিনা বলেন, আমি জানি না, আপনারা বিবেচনা করেন, কেমন করে মানুষ জীবন্ত মানুষকে পুড়িয়ে মারতে পারে? এই বিএনপি-জামায়াত কীভাবে জীবন্ত মানুষগুলোকে পুড়িয়ে মেরেছে? শুধু সাধারণ মানুষ নয়, পুলিশকে পর্যন্ত কীভাবে মাটিতে ফেলে এমনভাবে পিটিয়েছে!
তিনি বলেন, যখন জিয়াউর রহমান মারা গেল, তখন দেখা গেল কী? জিয়া কিছুই রেখে যায় নাই, একটা ভাঙা সুটকেস আর ছেঁড়া গেঞ্জি ছাড়া। পরে দেখা গেল, খালেদা জিয়ার সেই মূল্যবান শাড়ি (ফ্রেন্স শিফন) ফ্রান্স থেকে কিনে আনা। তারেক জিয়াদের সেই কোকো লঞ্চ, তাদের ইন্ডাস্ট্রি, এত টাকা চুরি করে বিদেশে পাচার করেছে যে এখনও দেখবেন কীভাবে আয়েশি জীবনযাপন করছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আপনারা দেখবেন, আমরা যে ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়েছি, তাতেই তারা আমাদের বিরুদ্ধে গীবত গায়, মানুষকে উসকানি দেয়। এরা দেশে লুটপাট, সন্ত্রাস এগুলোই করতে পারে।  বাংলা ভাই এই রাজশাহীতে প্রকাশ্যে অবৈধ অস্ত্র নিয়ে মিছিল করেছে, আর পুলিশ তাদের পাহারা দিয়েছে। তারা সন্ত্রাস আর জঙ্গিবাদ ছাড়া কিছু বোঝে না।
তিনি আরো বলেন, আমরা এদেশের খাদ্য নিরাপত্তা থেকে শুরু করে কমিউনিটি ক্লিনিক সব ক্ষেত্রে উন্নয়ন করেছি। ইসলামী আরবী বিশ্ববিদ্যালয় করেছি, দাওরায়ে হাদিসকে মাস্টার্স ডিগ্রির মর্যাদা দিয়েছি।
শেখ হাসিনা বলেন, আওয়ামী লীগ জনগণকে দিতে আসে। আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকলে জনগণ পায়। আমরা চাই আমাদের দেশ এগিয়ে যাক। দেশকে আমরা উন্নত করতে চাই।

রাজশাহীর জনসভায় প্রধানমন্ত্রী

পিএম

রাজশাহীর ঐতিহাসিক মাদ্রাসা মাঠের জনসভাস্থলে উপস্থিত হয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এর আগেই সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে শুরু হয় আওয়ামী লীগের এ জনসভা।

এর আগে রোববার সকাল থেকেই রাজশাহী ও বিভাগের বিভিন্ন জেলার নেতাকর্মীরা জনসভাস্থলে আসতে থাকেন। বেলা সাড়ে ১১টার দিকেই মাদ্রাসা মাঠ কানায় কানায় পূর্ণ হয়ে যায়।

এ কারণে বেলা সাড়ে ১১টার পর আসা নেতাকর্মীরা আর মাঠের ভেতরে ঠুকতে পারেননি। ফলে জনস্রোত ছড়িয়ে পড়েছে জনসভাস্থলের আশপাশের সড়কগুলোতে। একদিকে জনস্রোত গিয়ে ঠেকেছে সিঅ্যান্ডবি মোড় থেকে ঘোষপাড়ার মোড়, পাঠানপাড়া—এমনকি সাহেববাজার জিরো পয়েন্ট পর্যন্ত ছড়িয়ে পড়েছে জনসভার পরিসর।

এদিকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বেলা ১১টা ১৭ মিনিটে রাজশাহীর সারদা পুলিশ একাডেমিতে অবতরণ করেন। সেখানে শিক্ষানবিস পুলিশ সুপারদের অনুষ্ঠান শেষে তিনি রাজশাহী জেলা ও মহানগর আওয়ামী লীগ আয়োজিত জনসমাবেশে উপস্থিত হন।

আ’লীগের জনসভায় নারীদের ঢল

প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার সমাবেশ সফল করতে মাদ্রাসামাঠে নারীদের ঢল নেমেছিলো। রোববার (২৯ জানুয়ারি) সকাল ৯ টা থেকেই মাদ্রাসামাঠের প্রধান ফটক দিয়ে নারীরা প্রবেশ করতে থাকে। এই গেটটি নারীদের জন্যই নির্ধারিত ছিলো। ছোট ছোট মিছিল নিয়ে নারীরা সমাবেশে প্রবেশ করছিলেন।

প্রধানমন্ত্রীর জনসভায় যোগ দিতে সকাল থেকে সমাবেশস্থলে হাজার হাজার নেতাকর্মী ও সমর্থকদের ঢল নামতে শুরু করে। যেখানে নারীদের অংশগ্রহণ নজরকাড়ে কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দের।

নারী নেতা-কর্মীরা বলছেন, প্রধানমন্ত্রী রাজশাহীবাসীকে অনেক কিছু দিয়েছেন। রাজশাহীজুড়ে ব্যাপক উন্নয়ন কাজ হয়েছে। এর পাশাপাশি নারীর ক্ষমতায়নে, তার যে ভূমিকা সেটা যুগান্তকারী। তিনি নারীর উন্নয়নে যেভাবে কাজ করেছেন, তা এ অঞ্চলের নারীরা ভুলে যায় নি। তাই প্রধানমন্ত্রীকে এক পলক দেখতে দলে দলে সমাবেশে যোগ দিয়েছেন।

নাটোর থেকে আসা মহিলা আওয়ামী লীগের সদস্য হাসিনা আক্তার বলেন, আমরা রাজশাহী বিভাগের মানুষ, প্রধানমন্ত্রীর কাছে কৃতজ্ঞ। আমরা প্রধানমন্ত্রীকে শুভেচ্ছা জানাতেই ও তার প্রতি সমর্থন নিয়েই সমাবেশে এসেছি।

সাবেক প্রতিমন্ত্রী বেগম আখতার জাহান বলেন, নারীর ক্ষমতায়ণে প্রধানমন্ত্রী অনেক কাজ করেছেন। শেখ হাসিনার নেতৃত্বে নারী সমাজের মাঝে জাগরণ তৈরি হয়েছে। নারীকে আত্মনির্ভরশীল করতে প্রধানমন্ত্রী নানা পদক্ষেপ নিয়েছে। আর এটিকেই সমর্থন জানিয়েই আওয়ামী লীগের বিভাগীয় সমাবেশে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক নারীর স্বত:স্ফূর্ত অংশগ্রহণ ছিলো।

এছাড়া সমাবেশে বক্তব্যের শুরুতেই নারীদের শুভেচ্ছা জানান, আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবাইদুল কাদেরসহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দ।

প্রধানমন্ত্রীর জনসভায় যেন ইদে ঘরমুখো মানুষের বাড়ি ফেরার প্রতিচ্ছবি

ছবি ঃ নাটোর রেল স্টেশন


রাজশাহীতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জনসভায় আসার জন্য বিশেষ ট্রেনে যেন ইদে ঘরমুখো মানুষের বাড়ি ফেরার প্রতিচ্ছবি ফুটে উঠেছে। ট্রেনে করে রাজশাহী বিভাগের বিভিন্ন জেলা থেকে নগরীর ঐতিহাসিক মাদ্রাসা ময়দানে ছুটে এসেছেন। ট্রেনের ভিতরে যাত্রীতে পরিপূর্ণ ট্রেনের ছাদে চেপে বাড়ি ফেরেন মানুষ। এমন দৃশ্যও দেখা গেল আরেকবার।

আওয়ামী লীগের রাজশাহী বিভাগীয় সমাবেশে যোগ দিতে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে নাটোর থেকে বিশেষ ট্রেনে রাজশাহী সমাবেশ এসেছেন নেতাকর্মীরা। ট্রেনের ভেতর আসন পরিপূর্ণ হওয়ায় নেতাকর্মীরা উঠেছেন ট্রেনের ছাদেও। ইঞ্জিনের সামনেও জীবনের ঝুঁকি নিয়ে দাঁড়াতে দেখা গেছে তাদের। এ যেন ইদে ঘরমুখো মানুষের বাড়ি ফেরার প্রতিচ্ছবি। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জনসভা সফল করতে নেতাকর্মীরা ট্রেনে চেপে, ঝুলে ও দাঁড়িয়ে জনসভায় এসেছেন।

রোববার (২৯ জানুয়ারি) সকাল সাড়ে ১০টায় বিশেষ ট্রেনটি নলডাঙ্গা মাধনগর, নলডাঙ্গা স্টেশন হয়ে নাটোর রেলস্টেশনে এসে থামে। প্রায় ৫ মিনিট স্টেশনে ট্রেনটি অবস্থান করে। এসময় স্টেশনে অপেক্ষায় থাকা শতশত আওয়ামী লীগ নেতাকর্মী ট্রেন থামলে উঠতে শুরু করেন। বিশেষ ট্রেনটি দেখার জন্য বহু উৎসুক মানুষও অপেক্ষা করছিলেন স্টেশনে।

আব্দুল গণি মিয়া নামে এক আওয়ামী লীগ কর্মী বলেন, আমাদের প্রাণের নেত্রী শেখ হাসিনা রাজশাহীতে আসছেন। নেত্রীকে এক পলক দেখতে রাজশাহীতে এসেছি। তাকে সারাসরি দেখার জন্য জীবনের ঝুঁকি নিয়ে নাটোর থেকে ছুটে এসেছি।
আতাউর রহমান নামে এক কর্মী বলেন, ট্রেনে প্রচন্ড ভিড়, পা ফেলার জায়গা নেই। বাধ্য হয়ে দরজায় দাঁড়িয়ে এসেছি। নেত্রীকে একবার দেখার পর সব কষ্ট আর ক্লান্তি চলে যাবে।

শফিকুল ইসলাম নামে এক যুবলীগ কর্মী বলেন, অনেক আনন্দ লাগছে সব নেতাকর্মী একসাথে এসেছি। আমরা আবারো শেখ হাসিনাকে ক্ষমতায় আনতে নিরলস কাজ করবো।

নলডাঙ্গা থেকে আসা ৮০ বছরের বৃদ্ধ আওয়ামী লীগ কর্মী লিয়াকত প্রমানিক বলেন, প্রধানমন্ত্রীর রাজশাহী জনসভা সফল করতে আমরা নেতাকর্মী সবাই একত্রে ট্রেনে এসেছি। জীবনের প্রথমবার সরাসরি প্রধানমন্ত্রীকে দেখবো। কাছ থেকে তার ভাষণ শুনবো। কখনো সরাসরি প্রধানমন্ত্রীকে দেখা হয়নি। আজ নিজ চোখে নেত্রীকে এক পলক দেখবো।

নাটোর রেলস্টেশনের কর্তব্যরত স্টেশন মাস্টার কামরুন নাহার বলেন, সাধারণত ইদে প্রচুর যাত্রীর চাপ সামলাতে হয়। অনেক সময় শৃঙ্খলা থাকে না। এবার চাপ একইরকম হলেও শৃঙ্খলা রয়েছে। তবে অনেক যাত্রী ছাদে উঠে গেছেন। আমরা এমন বিপজ্জনক যাত্রা নিরুৎসাহিত করলেও তারা শুনছেন না।

তিনি আরো জানান, রেল কর্তৃপক্ষ ১ লাখ ২৪ হাজার ৩২৪ টাকায় একটি বিশেষ ট্রেন বরাদ্দ দিয়েছে। আজ ঢাকা-রাজশাহী চলাচলকারী আন্তঃনগর সিল্কসিটি ট্রেনটি সাপ্তাহিক বন্ধ থাকায় ওই ট্রেন বিশেষ ট্রেন হিসেবে চলাচল করছে। ট্রেনটি চলাচলে অন্য ট্রেনের সময়সূচিতে তেমন কোনো সমস্যা হয়নি।

চাঁপাইনবাবগঞ্জ রহনপুর থেকে ট্রেনে আসা সাইফুল ইসলাম বলেন, আমরা রাজশাহীতে এসেছি প্রধানমন্ত্রীকে। চাচা-ভাতিজা সকালের ট্রেনে উঠে পড়েছি। রাজশাহীতে নেমে দেখছি বিশাল আয়োজন। চারিদিকে শুধু প্রধানমন্ত্রীর পোস্টার। অনেক ভালো লাগলো রাজশাহীতে এসে।

ট্রেনে করে সিরাজগঞ্জ থেকে এসেছেন রাকিবুল ইসলাম। তিনি বলেন, সকালে প্রথমে বাসে উঠেছিলাম। বাস থেকে নেমে ট্রেনে চড়ি। সব জায়গাতেই প্রধানমন্ত্রী ও তার উন্নয়ন নিয়ে আলোচনা। নির্বাচনের বছরে হওয়ায় রাজশাহীর জনসভা বেশ গুরুত্বপূর্ণ। এর আগে প্রধানমন্ত্রী যশোর, চট্টগ্রামের জনসভায় ভোট চেয়েছেন। প্রধানমন্ত্রীকে এক পলক কাছে থেকে দেখতে অনেক দূর-দূরান্ত থেকে মানুষ ছুটে এসেছে।

প্রধানমন্ত্রীর জনসভায় জয়পুরহাট থেকে আসা রাজিব হোসেন জানান, বাসে করে রাজশাহীতে আসলাম প্রধানমন্ত্রীর জনসভা দেখতে। টিভি চ্যানেল, পেপার পত্রিকায় দেখেছি প্রধানমন্ত্রীর আগমনকে কেন্দ্র করে অনেক সুন্দর করে রাজশাহী সাজানো হয়েছে। এসে সাজানো দেখলাম। সত্যিই অনেক ভালো লাগছে। প্রধানমন্ত্রী সভাস্থলে আসার আগ পর্যন্ত রাজশাহী নগরী ঘুরবো। পরে প্রধানমন্ত্রী কথা শুনে বাড়ি ফিরে যাব।

রাজশাহী সড়ক পরিবহন গ্রুপের সাধারণ সম্পাদক মতিউল হক টিটু জানান, রাজশাহী সব রুটে যানবাহন চলাচল স্বাভাবিক রয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর জনসভাকে কেন্দ্র করে রাজশাহীতে প্রচুর মানুষ এসেছেন। তাদের মধ্যে বেশিরভাগ মানুষ বাসে এসেছে।
রাজশাহী রেলওয়ের স্টেশন ম্যানেজার আব্দুল করিম জানান, ট্রেনগুলো বিভিন্ন জয়গা থেকে ছেড়ে আসছে। এছাড়া রাজশাহী থেকে বিভিন্ন রুটে ট্রেনগুলো ছেড়ে যাচ্ছে। সিডিউল বিপর্যয়ের কোনো ঘটনা ঘটেনি। আর বিশেষ সাতটি ট্রেন শুধুমাত্র চলেছে।

এই বিভাগের আরো খবর

Leave a Comment