তবে সূচকে এখনো ‘হাইব্রিড রেজিম’ বা ‘মিশ্র শাসনের’ দেশের তালিকায় রয়েছে দেশটি।
গত বৃহস্পতিবার যুক্তরাজ্যের লন্ডনভিত্তিক দ্য ইকোনমিস্ট ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (ইআইইউ) ‘গণতন্ত্র সূচক ২০২২’ প্রকাশ করে, তাতে এমন তথ্যচিত্র উঠে এসেছে।
১৬৭ দেশ ও অঞ্চল নিয়ে গণতন্ত্র সূচক তৈরি করে ইআইইউ। দুই ধাপ উন্নতিতে বাংলাদেশের স্কোর বেঞ্চমার্ক ১০ পয়েন্টের মধ্যে ৫ দশমিক ৯৯। সবার শীর্ষে আছে নরওয়ে। স্ক্যান্ডেনেভিয়ান দেশটির স্কোর ৯ দশমিক ৮১। দ্বিতীয় অবস্থানে থাকা নিউজিল্যান্ডের স্কোর ৯ দশমিক ৬১, তৃতীয় অবস্থানে ৯ দশমিক ৫২ স্কোর নিয়ে আছে ইউরোপের আরেক দেশ আইসল্যান্ড। তালিকায় চার ও পাঁচে আছে যথাক্রমে সুইডেন ও ফিনল্যান্ড। শূন্য দশমিক ৩২ স্কোর নিয়ে সবার নিচে অবস্থান করছে আফগানিস্তান। এর আগে ২০২১ ও ২০২২ সালে এ তালিকায় বিশ্বে বাংলাদেশের অবস্থান ছিল ৭৫ ও ৭৬তম।
দক্ষিণ এশিয়ায় বাংলাদেশের অবস্থান তৃতীয়। এ অঞ্চলে ৭ দশমিক ০৪ স্কোর নিয়ে সবার উপরে আছে পাশের দেশ ভারত। বাংলাদেশের আগে দুইয়ে থাকা শ্রীলংকার স্কোর ৬ দশমিক ৪৭। চতুর্থ অবস্থানে আছে ভুটান, পাঁচে নেপাল ও ছয়ে পাকিস্তান।
গণতন্ত্রের এমন চিত্রে বাংলাদেশ ইতিবাচক মনে হলেও মুদ্রার উল্টো পিঠও আছে। কারণ গত কয়েক বছরের মতো এবারও ‘হাইব্রিড রেজিম’ দেশের তালিকা থেকে বের হতে পারেনি দেশটি। ইআইইউ ‘হাইব্রিড রেজিম’ বলতে এমন সব দেশকে বোঝায় যেখানে গণতন্ত্র বিদ্যমান, নিয়মিত নির্বাচনও হয়। কিন্তু এসব দেশে চলে রাজনৈতিক দমন-পীড়ন। বাধাগ্রস্ত হয় অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচন। এসব দেশে গণমাধ্যমের স্বাধীনতা কম। পাশাপাশি দুর্নীতির ব্যাপক বিস্তার হয়।
২০০৬ সাল থেকে প্রতি বছর বিভিন্ন দেশের গণতান্ত্রিক পরিস্থিতি পর্যালোচনা করে প্রতিবেদন প্রকাশ করে ইআইইউ। এবার গণতন্ত্রের সূচক মূল্যায়নে পাঁচটি বিষয় বিবেচনা করা হয়েছে। বিষয়গুলো হলো নির্বাচনি প্রক্রিয়া ও বহুত্ববাদ, সরকারের কার্যকারিতা, রাজনৈতিক অংশগ্রহণ, রাজনৈতিক সংস্কৃতি ও নাগরিক স্বাধীনতা। এসবের ওপর ভিত্তি করে দেশ ও অঞ্চলগুলোকে চার ভাগে ভাগ করা হয়েছে। সেগুলো হলো পূর্ণ গণতন্ত্র, ত্রুটিপূর্ণ গণতন্ত্র, হাইব্রিড শাসনব্যবস্থা ও কর্তৃত্ববাদী শাসনব্যবস্থা।
পূর্ণ গণতন্ত্র বিভাগে রয়েছে ২৪টি দেশ। ত্রুটিপূর্ণ গণতন্ত্র বিভাগে ৪৮টি, হাইব্রিড শাসনব্যবস্থা ও কর্তৃত্ববাদী শাসনব্যবস্থা বিভাগে জায়গা পেয়েছে যথাক্রমে ৩৬ ও ৫৯টি দেশ।
এবারের তালিকায় বড় অবনমন হয়েছে ইউক্রেনে আক্রমণ চালানো রাশিয়ার। নতুন সূচকে দেশটি পিছিয়েছে ২২ ধাপ। গণতন্ত্র সূচকে বিশ্বে আগের ১২৪ থেকে ১৪৬ অবস্থানে পৌঁছেছে তারা। তবে উন্নতি করেছে কয়েকটি দেশ। চিলি, ফ্রান্স ও স্পেন পূর্ণ গণতন্ত্র দেশের বিভাগে জায়গা করে নিয়েছে আবারও।