ঠাকুরগাঁও শহরের শান্তিনগর মহল্লায়"/>
Home ৬৪ জেলা বাবাকে খুন করেছি’, থানায় গিয়ে বললেন ছেলে

বাবাকে খুন করেছি’, থানায় গিয়ে বললেন ছেলে

 ঠাকুরগাঁও সংবাদদাতা

by Nahid Himel

ঠাকুরগাঁও শহরের শান্তিনগর মহল্লায় ছেলের হাতে বাবা খুন হওয়ার ঘটনা ঘটে। বাবাকে খুন করার পরে থানায় গিয়ে আত্মসমর্পণ করে ঘাতক ছেলে। রোববার গভীর রাতে এ নির্মম ঘটনা ঘটে।

নিহত ফজলে হক (৬৮) চার ছেলে ও দুই মেয়ের বাবা। ঘাতক গোলাম আজম (২৯) তার দ্বিতীয় ছেলে। তিনি মানসিক ভারসাম্যহীন বলে জানান স্বজনরা।

গোলাম আজমের নিকটতম আত্মীয় মোতালেব হোসেন চৌধুরী বলেন, গোলাম আজম রাজশাহী প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (রুয়েট) শিক্ষার্থী ছিলেন। লেখাপড়া শেষ করে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে কর্মরত ছিলেন। সবশেষে দিনাজপুরে একটি সফটওয়ারে কোম্পানিতে চাকরি করছিলেন। তার স্ত্রী এবং দুই বছরের এক ছেলে সন্তানও রয়েছে। তবে এ ঘটনার সময় তার স্ত্রী সন্তান শ্বশুরবাড়ি বালিয়াডাঙ্গীতে অবস্থান করছিল।

জেলা আওয়ামী লীগের নেতা মোতালেব হোসেন চৌধুরী জানান, গোলাম আজমের বাবা কাঠ ব্যবসায়ী ছিলেন। সন্তানদের পড়াশোনার জন্য ঠাকুরগাঁওয়ের বালিয়াডাঙ্গী উপজেলার দুওসুও ইউনিয়নের সনগাঁও গ্রাম ছেড়ে জেলা শহরের শান্তিনগরে বসবাস শুরু করেন। ছেলে-মেয়েদের ভরণপোষণ ও লেখাপড়ার খরচ জোগাতে তিনি হিমশিম খেতেন। এজন্য পরিবারে অশান্তি লেগেই ছিল।

ওয়ার্ড কাউন্সিলর জমিরুল ইসলাম বলেন, নিহত ফজলে হকের ছেলে তাকে শ্বাসরোধে হত্যা করে। মৃত্যু নিশ্চিত করতে ধারালো অস্ত্র দিয়ে ফজলে হকের বুকে ছুরিকাঘাত করে। পরে ঠাকুরগাঁও থানায় গিয়ে ডিউটিরত পুলিশ কর্মকর্তা নির্মল রায়কে বলেন- আমি বাবাকে খুন করেছি। আমাকে গ্রেফতার করুন।

পুলিশ কর্মকর্তা নির্মল রায় জানান, গোলাম আজম রাতে থানায় গিয়ে জানায় সে তার বাবাকে কুপিয়ে হত্যা করেছে। পরে তাকে পুলিশের হেফাজতে নেওয়া হয়।

প্রতিবেশীরা জানান, পারিবারিক বিভিন্ন সমস্যা নিয়ে বাবা-ছেলের মাঝে-মধ্যেই বাগবিতণ্ডা হতো।

পুলিশ হেফাজতে নেওয়ার আগে সাংবাদিকরা গোলাম আজমের কাছে তার বাবাকে হত্যার কারণ জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমার নামের সমস্যা। গোলাম আজম আমার নাম হওয়ায় সরকারি চাকরি হয়নি। সবখানে নাম পরিবর্তন করতে বললে বিষয়টি আমার বাবাকে বারবার জানালেও তিনি নাম পরিবর্তন করতে দেননি।

রাজশাহীতে ছাত্র থাকা অবস্থায় নামের কারণে একাধিকবার জেলে যেতে হয়েছে। আমি সুস্থ, আমাকে মানসিক রোগী বানানো হয়েছে। শুধু তাই নয়, আমাকে বিভিন্নভাবে অত্যাচার-নির্যাতন করা হয়। আমি যে মানসিক রোগী নই, তা কাউকে বোঝাতে পারিনি। আমার বাবা এ বিষয়টি গুরুত্ব দেননি। এ অবস্থায় তিন মাসের শিশুসন্তান নিয়ে আমার স্ত্রী আমাকে ফেলে তার বাবার বাড়িতে চলে যায়। সবকিছু মিলিয়ে আমি হতাশা হয়ে পড়ি; এই বলে চোখ মুছেন তিনি।

ঠাকুরগাঁও থানার ওসি কামাল হোসেন বলেন, গোলাম আজম নিজেই তার বাবাকে হত্যা করেছে বলে স্বীকারোক্তি দেন। এ ঘটনায় গোলাম আজমের মা রমিসা বানু বাদী হয়ে থানা মামলা করেছেন।

এই পুলিশ কর্মকর্তা বলেন, তদন্ত শেষে বলা যাবে হত্যার আসল রহস্য। লাশ উদ্ধারের পর ময়নাতদন্তের জন্য ঠাকুরগাঁও জেনারেল হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে।

এই বিভাগের আরো খবর

Leave a Comment