কর্মরতরা সাত মাস ধরে বেতন পাচ্ছেন না। বিছিন্ন করা হয়েছে বিদ্যুৎ। এছাড়া, আর্থিক সংকটে চরমভাবে ব্যাহত হচ্ছে সৈয়দপুর ফাইলেরিয়া হাসপাতালের চিকিৎসা সেবা।
এ সময় হাসপাতাল পরিচালনা পর্ষদ এর বিরুদ্ধে মামলা দায়ের হয়। পরে জরুরি ক্ষেত্রে জেনারেটর চালিয়ে সেবাকর্ম সম্পন্ন করছেন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।
জানা যায়, দীর্ঘ দিন থেকে হাসপাতালের বিদ্যুৎ বিল পরিশোধ করেনি বর্তমান পরিচালনা পর্ষদ। ফলে প্রায় ১ লাখ ৭০ হাজার টাকা বকেয়া পড়েছে। নেসকো সৈয়দপুর বিদুত বিতরণ ও বিক্রয় কেন্দ্র বারবার তাগাদা দিলেও ভ্রুক্ষেপ না করায় বাধ্য হয়ে অভিযান পরিচালনা করা হয়।
এ সময় বিদ্যুতের সংযোগ বিচ্ছিন্ন করাসহ হাসপাতালের পরিচালক ডা. রাকিবুল ইসলাম তুহিনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন নেসকো রংপুর বিভাগীয় আভিযানিক দল।
গতকাল শুক্রবার সরেজমিনে হাসপাতালে গেলে জানা যায়, শুধু বিদ্যুৎ বিলই নয়, দীর্ঘ ৭ মাস যাবত কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বেতনও বাকি রাখা হয়েছে। ফলে চরম মানবেতর জীবন যাপন করছেন কর্মরত চিকিৎসা সেবায় নিয়োজিত স্টাফরা। ৫২ জন স্টাফের প্রায় সবাই কমপক্ষে ৩ মাস থেকে কোনরকম দিন কাটাচ্ছে। এর মধ্যে উপ সহকারী মেডিকেল অফিসার মইনুল ইসলাম ৪ মাসের এবং অফিস সহকারী মো. বদরুজ্জামান তিন মাসের বেতন পায়নি।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে ভুক্তভোগীরা জানান, হাসপাতালে প্রায় ৫২ জন স্টাফ। প্রত্যেকের নিয়োগ প্রদানকালে পরিচালনা কমিটি ন্যুনতম ৫০ হাজার থেকে ৫ লাখ টাকা পর্যন্ত ডোনেশন নিয়েছে। কথা ছিল নিয়মিত বেতনের সঙ্গে দেয়া হবে বোনাস। অথচ এখন চরম দূরাবস্থায় পড়েছি। বোনাস দূরে থাক নিয়মিত বেতনও পাচ্ছি না।
এ নিয়ে হাসপাতালটির পরিচালক রাকিবুল ইসলাম তুহিন বলেন, কেন বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়েছে তা বিদ্যুৎ বিভাগ বলবেন। বেতন না দেয়ার অভিযোগ অস্বীকার করেন এবং এই বিষয়ে আর কোন মন্তব্য করতে চায়নি।
হাসপাতালটির কো অডিনেটর ফয়েজ আহমেদ বলেন, আমি আট মাস আগেই হাসপাতালের দায়িত্ব থেকে পদত্যাগ করে বেরিয়ে এসেছি। তবে বকেয়া বিদ্যুৎ বিল ইতোপূর্বের পরিচালনা কমিটির সময়ের। তবুও আমরা ইতোপূর্বে ওই বকেয়ার প্রায় ১ লাখ টাকা পরিশোধ করেছি। গত ৭ মাসে কি হয়েছে তা জানি না।
পরিচালনা কমিটির সভাপতি জিকো আহমেদ বলেন, এক লাখ টাকা বকেয়া বিদ্যুৎ বিল জমা দেওয়া হয়েছে এবং সময় নেওয়া হয়েছে। তিনিও কর্মকর্তা কর্মচারীদের বেতন বাকি থাকা বিষয়ে মন্তব্য করতে রাজি হননি।
বিদ্যুৎ না থাকায় রোগীরা এসে সেবা না পেয়ে ফিরে যাচ্ছে। ফলে ভোগান্তির শিকার হতে হচ্ছে রেগী ও স্বজনদের। সেই সঙ্গে দায়িত্বরতরাও পড়েছেন চরম বিড়ম্বনায়।