বিজিএমইএ সভাপতি বলেন, ‘চলতি বছরে দেশের রপ্তানিতে রেকর্ড প্রবৃদ্ধি হয়েছে। তৈরি পোশাকের একক বাজার হিসেবে যুক্তরাষ্ট্রে সবচেয়ে বেশি প্রবৃদ্ধি হয়েছে। ওমিক্রন বা নিষেধাজ্ঞার ফলে রপ্তানিতে এখনো কোনো প্রভাব পড়েনি। এ জন্য দেশটির বিভিন্ন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কাজ করছি আমরা। বিজিএমইএর নির্বাচিত বোর্ডকে তারা সহাযোগিতা করছে। আমাদের আশা, ওমিক্রমের গুরুতর কোনো প্রভাব না পড়লে আগামী এপ্রিল পর্যন্ত এই ধারা অব্যাহত থাকবে।’
যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে জিএসপি বিষয়ক এক প্রশ্নের জবাবে ফারুক হাসান বলেন, ‘বৃহত্তম এই বাজারে তৈরি পোশাক জিএসপি সুবিধা পেত না। এখনো পাচ্ছে না। তবে যুক্তরাষ্ট্র যেসব শর্ত দিয়েছিল, সেগুলো পোশাক মালিকরা ও সরকার বাস্তবায়ন করেছে। কমপ্লায়েন্স বা নিরাপদ কর্মপরিবেশ নিশ্চিত করতে এ দেশের উদ্যোক্তারা প্রচুর বিনিয়োগ করেছেন। ফলে ১৫৩টি গ্রিন কারখানা এখন বাংলাদেশে।’
এলডিসি থেকে উত্তরণের প্রস্তুতিকাল নিয়ে ফারুক হাসান বলেন, ‘স্বল্পোন্নত দেশের (এলডিসি) তালিকা থেকে বাংলাদেশের বের হয়ে যাওয়া নিয়ে তাঁরা উদ্বিগ্ন নন। কারণ এলডিসি উত্তরণ-পরবর্তী চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় বিজিএমইএ এরই মধ্যে সরকার ও ক্রেতা দেশগুলোর সঙ্গে কাজ শুরু করেছে। দক্ষতা উন্নয়ন, বিনিয়োগ বাড়ানো, পণ্য ও বাজার বহুমুখীকরণের মাধ্যমে প্রতিযোগিতা সক্ষমতা বাড়ানোর বিভিন্ন উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে। ফলে কোটা ও শুল্কমুক্ত সুবিধাহীন বিশ্ববাজারে বাংলাদেশের তৈরি পোশাকের টিকে থাকা নিয়ে আপাতত কোনো সংশয় দেখা যাচ্ছে না।’ করোনার প্রভাব মোকাবেলার প্রণোদনার ঋণ পরিশোধ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘অনেক কারখানা এরই মধ্যে ঋণের কিস্তি দেওয়া শুরু করেছে। আর কিছু প্রতিষ্ঠান পারছে না। কারণ ওই সব প্রতিষ্ঠানের ক্রেতারা মূল্য পরিশোধ করেননি। এই ধরনের প্রতিষ্ঠানকে বিশেষ বিবেচনায় সময় দেওয়ার অনুরোধ জানান তিনি।’
গতকাল বুধবার অর্থনৈতিক সাংবাদিকদের সংগঠন ইকোনমিক রিপোর্টার্স ফোরাম (ইআরএফ) আয়োজিত সংলাপে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে বিজিএমইএ সভাপতি এ মন্তব্য করেন। রাজধানীর পল্টনে ইআরএফ কার্যালয়ে আয়োজিত সংলাপটি পরিচালনা করেন সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক এস এম রাশিদুল ইসলাম।
সাম্প্রতিক সময়ের রপ্তানি বৃদ্ধির কারণ সম্পর্কে তিনি বলেন, ‘প্রথমত বেড়েছে আমদানি মূল্য বেড়ে যাওয়ার কারণে। এ ছাড়া করোনার সময়ে ক্রেতাদের অনেক দাবি দেশের রপ্তানিকারকরা রেখেছেন। বিশেষ করে পরে ডেলিভারি, দেরিতে মূল্য পরিশোধ, ডিসকাউন্ট ইত্যাদি সুবিধা দেওয়া হয়েছে। যে কারণে ক্রেতাদের সঙ্গে রপ্তানিকারকদের একটি সুসম্পর্ক তৈরি হয়েছে। ফলে এখন ক্রেতারা তাঁদের বাড়তি চাহিদার পণ্য বাংলাদেশ থেকেই নিচ্ছেন। তবে পোশাকের সামগ্রিকভাবে মূল্য সামান্য বাড়লেও কাটিং ও মেকিং চার্জ বাড়েনি।’
পোশাকের ন্যূনতম দর বিষয়ে তিনি বলেন, ‘বিজিএমইএ ও বিকেএমইএ যৌথভাবে একটি কমিটি করেছে। এ কাজটি হবে, তবে সময় লাগবে।’