আহমদিয়াদের সালানা জলসা বন্ধ হওয়ার পর শনিবার দিনভর কোনো অঘটন না ঘটলেও রাত ৯টার দিকে দুজনকে জবাই করার গুজব রটানো হলে পঞ্চগড় শহর উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। মুহূর্তের মধ্যে বিক্ষুব্ধ জনতা লাঠিসোঁটা নিয়ে রাস্তায় নেমে পড়ে। যানবাহন চলাচল ও দোকানপাট বন্ধ হয়ে যায়। ওয়াকার শোরুমসহ কয়েকটি দোকানপাট ভাঙচুর ও মালামাল লুটপাট করা হয়। ট্রাক টার্মিনাল এলাকায় মাইক্রোবাসে আগুন দেওয়া হয়। সিনেমা হল সড়কে পুলিশের সঙ্গে বিক্ষোভকারীদের সংঘর্ষ বাধে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে গুজব ঠেকাতে জেলাজুড়ে ইন্টারনেট সেবা সাময়িক বন্ধ করা হয়। এদিকে শুক্রবার জলসাকে কেন্দ্র করে হত্যা, ভাঙচুর, লুটপাট ও অগ্নিসংযোগের ঘটনায় সদর থানায় আহমদিয়াদের পক্ষ থেকে একটি এবং পুলিশের পক্ষ থেকে দুটি মামলা করা হয়েছে। এসব মামলায় আসামির সংখ্যা সাত হাজার।
এদিকে শনিবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে গুজব ঠেকাতে পঞ্চগড় জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সতর্কতামূলক মাইকিং করেন। পঞ্চগড় বাজার মসজিদের মাইকে তিনি জনগণকে আতঙ্কিত না হওয়ার আহ্বান জানান। তিনি বলেন, আহমদিয়াদের দ্বারা কোনো মানুষকে জবাই করা হয়নি। গুজব ঠেকাতে শহরের কয়েকটি মসজিদ থেকেও মাইকিং করা হয়। অটোভ্যানে জেলা প্রশাসন ও পুলিশ প্রশাসনের পক্ষ থেকেও প্রচার চালানো হয়। আহমদিয়া মুসলিম জামাতের বহিঃসম্পর্ক, গণসংযোগ ও প্রেস বিভাগের প্রধান আহমদ তবশির চৌধুরী বলেন, আহমদনগর ও শালশিরি গ্রামের কয়েক হাজার আহমদিয়া আতঙ্কের মধ্যে রয়েছে। তিনি বলেন, একটি মহল গুজব ছড়িয়ে আহমদিয়া সম্প্রদায়ের বাড়িঘর, দোকানপাটে হামলা, ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ ও লুটপাটের ঘটনা ঘটাচ্ছে। আমরা শান্তিপূর্ণভাবে জলসা করতে চেয়েছিলাম। জলসা বন্ধের পরও হামলা ও লুটপাটের ঘটনা ঘটেছে। সহিংস ঘটনার প্রতিবাদে রোববার বিক্ষোভ মিছিল ও শান্তি সমাবেশ করেছে জেলা আওয়ামী লীগ ও জেলা ছাত্রলীগ। দলীয় কার্যালয়ের সামনে আয়োজিত সমাবেশে জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি নাঈমুজ্জামান মুক্তা, সাধারণ সম্পাদক আনোয়ার সাদাত সম্রাট বক্তব্য দেন। তারা বলেন, আহমদিয়াদের জলসাকে কেন্দ্র করে দুদিনের ঘটনায় বিএনপি-জামায়াত জড়িত। সুকৌশলে গুজব ছড়িয়ে দোকান ভাঙচুর ও লুটপাটের ঘটনা ঘটিয়েছে। সন্ত্রাস, নৈরাজ্যের বিরুদ্ধে আওয়ামী লীগ-ছাত্রলীগ মাঠে আছে।