বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী গোলাম দস্তগীর গাজী বলেছেন, প্রধানমন্ত্রীর প্রত্যক্ষ তত্ত্বাবধান, নির্দেশনা ও পরামর্শে আমরা পাটখাতের প্রবৃদ্ধির ধারাকে বেগবান করতে পেরেছি। পরিবেশবান্ধব পাট জাতীয় অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখে স্মার্ট বাংলাদেশ গড়তে সহায়ক ভূমিকা রাখবে।
আজ সোমবার রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে জাতীয় পাট দিবস উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন। পাট দিবস উদযাপন ও পাটখাতে বিশেষ অবদানের জন্য সম্মাননা দিতে বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী গোলাম দস্তগীর গাজী। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন শিল্পমন্ত্রী নূরুল মজিদ হুমায়ুন। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন শ্রম ও কর্মসংস্থান প্রতিমন্ত্রী বেগম মন্নুজান সুফিয়ান। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন বস্ত্র ও পাট সচিব মো. আব্দুর রউফ।
পাটমন্ত্রী বলেন, বর্তমান টেকসই উন্নয়নের যুগে বিশ্বব্যাপী পরিবেশবান্ধব পাট ও পাটপণ্যের চাহিদাকে আমাদের কাজে লাগাতে হবে। পাটের মতো পরিবেশবান্ধব পণ্য আর নেই। আমাদের বিজ্ঞানীরা ইতোমধ্যে পাটের জীবন রহস্য উন্মোচনের ফলে পাট বিষয়ক গবেষণা ও উন্নয়নের পথ সুগম হয়েছে। এখন গবেষণার মাধ্যমে পাটের আরও মূল্য সংযোজিত স্মার্ট পণ্য উৎপাদনের পথ সুগম হোক। এজন্য আমাদের পাটের গবেষকদের আরও আন্তরিক গবেষণা প্রত্যাশা করি।
মন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রী পাটপণ্যকে বর্ষপণ্য ২০২৩ এবং পাটকে কৃষিপণ্য হিসেবে ঘোষণা করেছে। আমি, বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়, পাটচাষি, পাটপণ্যের উৎপাদনকারী ব্যবসায়ী, বহুমুখী পাটজাত পণ্যের উদ্যোক্তা, পাটজাত পণ্যের ব্যবহারকারীগণ, ব্যবসায়ী সংগঠনের পক্ষ থেকে প্রধানমন্ত্রীর প্রতি গভীর কৃতজ্ঞতা ও শ্রদ্ধা জানাচ্ছি। পাটখাত সংশ্লিষ্ট অংশীজনবৃন্দ এখাতের সমৃদ্ধিকে আরও বেগবান করতে তাদের প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখবে।
তিনি বলেন, আমরা পাটের উৎপাদনের দিকে যেমন গুরুত্ব দিচ্ছি, পাটপণ্য উৎপাদনে আরও জোর দিচ্ছি। জুট ডাইভারসিফিকেশন প্রমোশন সেন্টার (জেডিপিসি) এর বহুমুখী পাটজাত পণ্যের উদ্ভাবন, সম্প্রসারণে কাজ করেছে। জেডিপিসি পাটপণ্য উৎপাদনকারী, বিপণনকারী, ব্যবহারকারী এবং বিদেশীদের সঙ্গে অধিক যোগাযোগ স্থাপনে সহায়ক হিসেবে কাজ করেছে। ইতোমধ্যে অনেকেই দৃষ্টিনন্দন, আধুনিক ও স্মার্ট বহুমুখী পাটপণ্য উৎপাদন করছেন যার অধিকাংশই বিদেশে রপ্তানি করা হচ্ছে।
তিনি আরও বলেন, পাটখাতে সরকার অংশীজনদের নীতি সহায়তা অব্যাহত রেখেছে। পাটখাতের আরেকটি সম্ভাবনাময় দিক উন্মোচন করেছে চারকোল। ৩৪-৪০টি চারকোল উৎপাদন প্রতিষ্ঠানে প্রায় ১৫-২০ হাজার লোক প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি হয়েছে।
২০১০-১১ অর্থবছরে চারকোল রপ্তানি করে প্রায় ১০০ কোটি টাকা বৈদেশিক মুদ্রা অর্জিত হয়।
তিনি আরও বলেন, পাটের ব্যাগের ব্যবহার ঠিক মতো হচ্ছে না। পাটের ব্যাগ ব্যবহারে অভিযান আরও বেশি জোরদার করতে আমরা পাট অধিদপ্তরকে নির্দেশ দিয়েছি। প্রধান অতিথির বক্তব্যে শিল্পমন্ত্রী নূরুল মজিদ হুমায়ুন বলেন, ‘বিশ্বে পাটের জন্য আমাদের বাজার অনেক বড়। পরিবেশ আন্দোলন আমাদের সহায়ক হিসেবে কাজ করছে। আন্তর্জাতিকভাবে পরিবেশ আন্দোলন যেভাবে সহায়তা পাচ্ছে তাতে পাটকে এগিয়ে নেওয়ার সুযোগ রয়েছে।
বিশ্বের বিভিন্ন দেশে আপনাদের (রপ্তানিকারকদের) যেতে হবে।’ শ্রম ও কর্মসংস্থান প্রতিমন্ত্রী মন্নুজান সুফিয়ান বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী পাটকে কৃষিপণ্য হিসেবে ঘোষণা দিয়েছেন। আমি দাবি করতে চাই, পাটকে বহুমুখী কৃষিপণ্য হিসেবে ঘোষণা করা হোক।’