ভারতের কাশ্মীরের শ্রীনগরের বিখ্যাত পর্যটক কেন্দ্র ডাল লেকে কয়েকটি হাউজবোটে আগুন লেগে নিহত তিন বাংলাদেশি পর্যটকের সবার বাড়ি চট্টগ্রামে। মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়ার পর তাদের পরিবারে চলছে শোকের মাতম।
তারা তিনজনই চিকিৎসার জন্য ভারতে গিয়েছিলেন। সেখান থেকে কাশ্মীরে বেড়াতে গিয়ে অগ্নি দুর্ঘটনায় পড়েন।
শনিবার স্থানীয় সময় ভোর সোয়া ৫টার দিকে ডাল লেকের ৯ নম্বর ঘাটের কাছে সাফিনা নামের একটি হাউস বোটে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। এতে আরও সাতজন অগ্নিদগ্ধ হয়।
নিহতরা হলেন, রাঙামাটি গণপূর্ত বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী অনিন্দ্য কৌশল, চট্টগ্রামের উপ বিভাগীয় প্রকৌশলী ইমন দাশ গুপ্ত ও ঠিকাদার মো. মাঈনুদ্দীন। এর মধ্যে মাঈনুদ্দীন ও ইমনের বাড়ি চট্টগ্রামের রাউজান উপজেলায় এবং অনিন্দ্য কৌশলের বাড়ি মিরসরাই উপজেলায়। অনিন্দ্য কৌশল চুয়েটের ২০০৪-০৫ শিক্ষাবর্ষের পুরকৌশল বিভাগের সাবেক শিক্ষার্থী এবং ইমন দাশগুপ্ত কুয়েটের ২০০৬-০৭ শিক্ষাবর্ষের পুরকৌশল বিভাগের সাবেক শিক্ষার্থী ছিলেন।
নিহত মাঈনদ্দীনের আত্মীয় আসিফ মহিউদ্দিন জানান, গত ৩ নভেম্বর তারা তিন বন্ধু চিকিৎসার জন্য ভারতে গিয়েছিলেন। সেখান থেকে তারা কাশ্মীরে বেড়াতে যান। এর মধ্যে দুর্ঘটনায় তিনজনেরই মৃত্যু হয়। মাঈনুদ্দীন তার চাচাতো বোনের স্বামী। নিহতের এক ছেলে ও এক মেয়ে রয়েছে। ঘটনার পর থেকে তাদের বাড়িতে শোকের মাতম চলছে।
নিহত ইমন দাশ গুপ্ত পরিবার নিয়ে থাকতেন চট্টগ্রাম নগরীর পাঁচলাইশে। তার মা স্মৃতি রানী দাশ বলেন, দুর্ঘটনার একদিন আগে তার ছেলে ফোন করে বলেছিল, তার ভালো লাগছে না। দেশে চলে আসবে। তার জন্য কিছু আনতে হবে কিনা তাও জানতে চায়। কিন্তু একদিন পরেই শুনি আমার ছেলে অগ্নিকাণ্ডে মারা গেছে। ছেলের এমন মৃত্যু কোনোভাবেই মেনে নিতে পারছি না। ইমনের দুই শিশু সন্তানও পিতৃহারা হয়ে গেল।
ভারতীয় গণমাধ্যমগুলো জানায়, শনিবার ভোর সোয়া ৫টার দিকে ডাল লেকে প্রথমে একটি হাউজবোটে আগুন লাগে। পরে তা পাশে নোঙর করে রাখা আরও চারটি হাউজবোটে ছড়িয়ে পড়ে। পুড়ে যাওয়া পাঁচটি হাউজবোটের মধ্যে একটিতে তিন বাংলাদেশি পর্যটক অগ্নিদগ্ধ হয়ে মারা যায়।