আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, এখন এমন এমন লোকের কাছ থেকে দুর্নীতির কথা শুনতে হচ্ছে, যারা"/>
Home Lead 1 যৌথ সভায় প্রধানমন্ত্রী ৷৷ দুর্নীতিগ্রস্তদের কাছে দুর্নীতির কথা শুনতে হচ্ছে  

যৌথ সভায় প্রধানমন্ত্রী ৷৷ দুর্নীতিগ্রস্তদের কাছে দুর্নীতির কথা শুনতে হচ্ছে  

নিউজ ডেস্ক

by Nahid Himel
আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, এখন এমন এমন লোকের কাছ থেকে দুর্নীতির কথা শুনতে হচ্ছে, যারা নিজেরাই দুর্নীতিগ্রস্ত। যাদের আমলে দুর্নীতিতে বাংলাদেশ চ্যাম্পিয়ন হয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী গত শনিবার আওয়ামী লীগের জাতীয় পরিষদ, কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদ ও উপদেষ্টা পরিষদের যৌথ সভায় এসব কথা বলেন। প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন গণভবনে এই সভা অনুষ্ঠিত হয়।
আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা বলেন, ‘দুর্নীতি নিয়ে যে কথা বলে; আমি তো পার্লামেন্টে বলেছি, কোথায় দুর্নীতি হচ্ছে আমাকে তথ্য দিন। আমি ব্যবস্থা নেব।’

গত ৭ জানুয়ারি গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়া উপজেলা আওয়ামী লীগের কার্যালয়ে আওয়ামী লীগের নবনির্বাচিত কমিটির যৌথ সভা অনুষ্ঠিত হয়। তখন সভাটি মুলতবি করা হয়। মুলতবি সভা গতকাল অনুষ্ঠিত হয়।
দুর্নীতিগ্রস্ত যেসব ব্যক্তি দুর্নীতির অভিযোগ তুলছেন তাঁদের সমালোচনা করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, কেউ বলতে গেলে ওই ক্ষুদ্রঋণের ব্যবসা করতে গিয়ে গরিব মানুষের ওপর এমন চাপ দিয়েছে যে সুদ দিতে দিতে তাদের অনেক সময় বাড়িঘর ছেড়ে এলাকা থেকে চলে যেতে হয়েছে। অথবা আত্মহত্যা করতে হয়েছে। এই গরিব মানুষের টাকা দিয়েই কিন্তু বিদেশে নাম-টাম করে বেশ ভালোই আছে এবং প্রচুর অর্থ-সম্পদের মালিক। পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে বিনিয়োগও করে ফেলেছে। এই টাকাগুলো কোথা থেকে এলো, এগুলো গরিবের রক্তচোষা টাকা।

আওয়ামী লীগ ওয়াদা রক্ষা করে : সরকারের উন্নয়নকাজের সমালোচকদের প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘জাতির পিতা যা যা চেয়েছিলেন আমরা সেগুলো কিন্তু একে একে করে দিচ্ছি মানুষকে। তাঁর যে স্বপ্নটা বাস্তবায়ন করা আমাদের লক্ষ্য। এত কাজ করার পরও কিছু লোক আছে, তাদের কোনো কিছু ভালো লাগে না।’

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘প্রতি বাজেটে নির্বাচনের ইশতেহার সামনে রেখে আমরা পরিকল্পনা নিই।…অর্থাৎ যে ওয়াদা জাতিকে দিই, সেটা আমরা রক্ষা করি।’

আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, আওয়ামী লীগ যেটা বলে, মানুষের জন্য যে ওয়াদা করে, সে ওয়াদা আওয়ামী লীগ রক্ষা করে। এটা হলো বাস্তবতা। সার কথা হলো, আওয়ামী লীগ যে কথা দেয়, সে কথা রাখে। জাতির কল্যাণে আমরা কাজ করি এবং মানুষ তার শুভ ফল পাচ্ছে।

দেশের পরিবর্তন অনেকেই নিতে পারে না : প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘গত ১৪ বছরে আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে বাংলাদেশের যে পরিবর্তন ঘটেছে, আমি জানি এটা অনেকেই নিতে পারে না। নানা ধরনের কথা রটায়। কিন্তু মানুষের জীবনযাত্রায় যে পরিবর্তন এসেছে। এ ছাড়া রাস্তাঘাটসহ যোগাযোগব্যবস্থার উন্নতি আমরা করেছি। এটাকেও অনেকেই স্বীকার করতে চায় না। করতে চাইবেও না।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে বিশ্বব্যাপী দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতিতে মানুষের অসুবিধা হচ্ছে। সে জন্য বিদেশ থেকে অনেক টাকা খরচ করে খাবার আনা হচ্ছে। ভর্তুকি মূল্যে সেটা দেওয়া হচ্ছে।

চাষাবাদে আধুনিক প্রযুক্তির গুরুত্ব দিচ্ছি : দেশের কোথাও জমি পতিত না রাখার পরামর্শ দিয়েছেন শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, ‘আমি আমার এলাকায় (টুঙ্গিপাড়া-কোটালীপাড়া) খুঁজে দেখলাম প্রায় ১০ হাজার বিঘা জমি আছে অনাবাদি। কৃষি মন্ত্রণালয় থেকে আনাবাদি জমিতে আবাদ করার একটা প্রকল্প নেওয়া হয়েছে। কিন্তু প্রকল্পের বাইরেও অনেক জমি রয়ে গেছে। আমি উদ্যোগ নিয়েছি, আমার ওখানে যত অনাবাদি জমি রয়েছে, সেখানে আধুনিক প্রযুক্তি দিয়ে আবাদ করা।’

বেকার থাকার কোনো সুযোগ নেই : প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘কেউ ইচ্ছা করলে বেকার থাকতে পারে। কিন্তু প্রকৃতপক্ষে বেকার থাকার কোনো সুযোগ নেই। কারণ আমরা এত সুযোগ সৃষ্টি করে দিয়েছি। ফ্রিল্যান্সিংয়ের মাধ্যমে অনেক ছেলেমেয়ে কিন্তু এখন গ্রামে বসে টাকা উপার্জন করছে।’

দলের বিবাদ নিরসনের পরামর্শ দিলেন নেতারা : আগামী জাতীয় নির্বাচনের আগে দলের অভ্যন্তরীণ বিবাদ নিরসন করতে জোরালো উদ্যোগ নিতে আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনাকে পরামর্শ দিয়েছেন জাতীয় কমিটি ও উপদেষ্টা পরিষদের নেতারা। যৌথ সভায় উপস্থিত একাধিক নেতা কালের কণ্ঠকে এমন তথ্য জানিয়েছেন।

গতকাল দলের যৌথ সভায় জাতীয় কমিটি ও উপদেষ্টা পরিষদের অন্তত ২০ জন নেতা বক্তব্য দেন।

দলীয় একাধিক সূত্র জানায়, সভায় জাতীয় কমিটি ও উপদেষ্টা পরিষদের কয়েকজন নেতা দলের অভ্যন্তরীণ কোন্দলই বর্তমানে আওয়ামী লীগের জন্য বড় সমস্যা বলে মত দেন। একাধিক নেতা বলেন, আগামী নির্বাচনে বিএনপি যতই চেষ্টা করুক, আওয়ামী লীগের ক্ষতি করতে পারবে না। বিএনপির চেয়ে আওয়ামী লীগ অনেক শক্তিশালী দল। কিন্তু আওয়ামী লীগের ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছেন আওয়ামী লীগের নেতারাই। নেতাদের দ্বন্দ্বে আওয়ামী লীগ বিভক্ত হয়ে পড়েছে। এই অবস্থার দ্রুত নিরসন জরুরি।

এই বিভাগের আরো খবর

Leave a Comment