প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, বিশ্ব অর্থনীতির এই সংকটময়  মুহুর্তেও দেশি-বিদেশি বিনিয়োগ আকর্ষণে বাংলাদেশ সফল হয়েছে। দেশ এখন আর্থসামাজিক উন্নয়নে ‘রোল মডেল’।
তিনি বলেন, ‘ আওয়ামী লীগ ২০০৯ সাল থেকে এ"/>
Home Lead 2 আর্থসামাজিক উন্নয়নে  বাংলাদেশ এখন রোল মডেল : প্রধানমন্ত্রী 

আর্থসামাজিক উন্নয়নে  বাংলাদেশ এখন রোল মডেল : প্রধানমন্ত্রী 

দেশব্যাপী তথ্যপ্রযুক্তির জাগরণ তৈরি হয়েছে : প্রধানমন্ত্রী 

by Nahid Himel

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, বিশ্ব অর্থনীতির এই সংকটময়  মুহুর্তেও দেশি-বিদেশি বিনিয়োগ আকর্ষণে বাংলাদেশ সফল হয়েছে। দেশ এখন আর্থসামাজিক উন্নয়নে ‘রোল মডেল’।

তিনি বলেন, ‘ আওয়ামী লীগ ২০০৯ সাল থেকে একাধারে তিন বার সরকার গঠন করে ক্ষুধামুক্ত, দারিদ্র্যমুক্ত বৈষম্যহীন রাষ্ট্র ব্যবস্থা গড়ার প্রত্যয়ে এবং অন্তর্ভুক্তিমূলক ও টেকসই অর্থনৈতিক উন্নয়নের লক্ষ্যে বিশ্ব^ অর্থনীতির এই সংকটময়  মুহুর্তেও দেশি-বিদেশি বিনিয়োগ আকর্ষণে সফল হয়েছে। বাংলাদেশ এখন আর্থসামাজিক উন্নয়নে ‘রোল মডেল’।
প্রধানমন্ত্রী  আজ আর্ন্তজাতিক কাস্টমস দিবস’ উপলক্ষ্যে  গতকাল এক বাণীতে এসব কথা বলেন।   তিনি বলেন, অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশেও জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের উদ্যোগে আগামীকাল ‘আর্ন্তজাতিক কাস্টমস দিবস’ পালিত হচ্ছে জেনে তিনি আনন্দিত। এ উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রী  বাংলাদেশ কাস্টমসের সকল কর্মকর্তা-কর্মচারী ও সংশ্লিষ্ট সবাইকে আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিবাদন জানান।‘আন্তর্জাতিক কাস্টমস দিবস ২০২৩’এর মূল প্রতিপাদ্য ‘ভবিষ্যৎ প্রজন্মে লালন: কাস্টমসে জ্ঞানচর্চা ও উত্তম পেশাদারিত্বের বিকাশ)-সময়োপযোগী হয়েছে বলে মনে করে তিনি বলেন, ‘আমি বিশ্বাস করি, দিবসটি পালনের মাধ্যমে বাংলাদেশ কাস্টমসে জ্ঞান চর্চার সংস্কৃতি এবং পেশাগত উৎকর্ষতা সৃষ্টি হবে।
শেখ হাসিনা বলেন, পদ্মা সেতুর স্বপ্ন জয়ের পর আরেকটি স্বপ্ন জয় করে মেট্রোর যুগে প্রবেশ করেছে দেশ। রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র, রামপাল বিদ্যুৎ কেন্দ্র, এলএনজি টার্মিনাল ও গ্যাস পাইপলাইন প্রকল্প, মাতারবাড়ী বিদ্যুৎ কেন্দ্র, পায়রা গভীর সমুদ্র বন্দর, বঙ্গবন্ধু টানেলসহ বিভিন্ন মেগা প্রকল্পের কাজ এগিয়ে চলেছে। এসব প্রকল্প বাস্বয়নের অক্সিজেন হলো রাজস্ব। ন্যায়ানুগভাবে রাজস্ব আহরণ করার লক্ষ্যে আধুনিক রাজস্বনীতি প্রণয়ন, ডিজিটাল কাস্টমস সেবা, উন্নত তথ্য ভান্ডার নির্মাণ, ওয়ানস্টপ সার্ভিস প্রদানসহ জ্ঞানচর্চার সংস্কৃতি এবং উত্তম পেশাদারিত্বের নানা ধরনের উদ্যোগ বাংলাদেশ কাস্টমস গ্রহণ করেছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান দেশ স্বাধীন হওয়ার পর পরই দেশের অর্থনীতিকে শক্তিশালী করার লক্ষ্যে অভ্যন্তরীণ ব্যবসা-বাণিজ্য, শিল্পায়ন এবং আন্তর্জাতিক বাণিজ্য বৃদ্ধির ওপর গুরুত্বারোপ করেন। তিনি জাতীয় রাজস্ব বোর্ড গঠন করেন, যার ফলে দেশে রাজস্ব আদায়ের বহুমুখী খাত তৈরি হয়  এবং সম্ভাবনা বৃদ্ধি পায়। জাতির পিতার সুদূরপ্রসারী দর্শন, যোগ্য  নেতৃত্ব ও নিখুঁত কর্মপরিকল্পনার ফলে মাত্র সাড়ে তিন বছরের মধ্যে যুদ্ধবিধ্বস্ত একটি দেশ খাদ্য উৎপাদন, ব্যবসা-বাণিজ্য প্রসারসহ বিভিন্ন সূচকে স্বল্পোনত দেশে পরিণত হয়।
শেখ হাসিনা বলেন, তিনি আশা করেন বাংলাদেশ কাস্টমস এর সকল কর্মকর্তা-কর্মচারীর ঐকান্তিক প্রচেষ্টা, পেশাগত দক্ষতা, ডিজিটাল ব্যবস্থাপনা ও যৌক্তিক সংস্কার বাস্তবায়নের মাধ্যমে অভ্যন্তরীণ রাজস্ব আদায় বৃদ্ধি, মজবুত অর্থনীতির ভিত গঠন, অপবাণিজ্য রোধ, জঙ্গিবাদ ও সন্ত্রাসবাদে অর্থায়ন প্রতিরোধ, অর্থপাচার প্রতিরোধসহ রাজস্ব প্রশাসনে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত হবে।

দেশব্যাপী তথ্যপ্রযুক্তির জাগরণ তৈরি হয়েছে : প্রধানমন্ত্রী

জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবের স্বপ্নের ‘সোনার বাংলাদেশ’ গড়তে রাজস্ব প্রশাসনের রাজস্ব সৈনিকদের ঐকান্তিক প্রচেষ্টাকে  সাধুবাদ জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘এসব কার্যক্রমের ধারাবাহিকতায় ‘ভিশন ২০৪১’ বাস্তবায়নের মাধ্যমে আমরা ‘স্মার্ট বাংলাদেশ’ গড়ে তুলতে সক্ষম হবো, ইনশাআল্লাহ।’ তিনি ‘আন্তর্জাতিক কাস্টমস দিবস ২০২৩’ এর সার্বিক সাফল্য কামনা করেন।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, আওয়ামী লীগ সরকার টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তির সুফল দেশের প্রতিটি প্রান্তে পৌঁছে দিতে অবকাঠামো উন্নয়ন, প্রায়োগিক উৎকর্ষ সাধন, প্রযুক্তির ব্যাপক ব্যবহার নিশ্চিত করাসহ এ খাতে ব্যাপক উন্নয়ন কর্মসূচি বাস্তবায়ন করেছে।

প্রধানমন্ত্রী আজ থেকে শুরু হওয়া ‘ডিজিটাল বাংলাদেশ মেলা ২০২৩’ উপলক্ষ্যে গতকাল  দেয়া এক বাণীতে এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, আগামী ২৬-২৮ জানুয়ারি ‘ডিজিটাল বাংলাদেশ মেলা ২০২৩’ অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে জেনে তিনি আনন্দিত। টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি খাতে বর্তমান সরকারের গৃহীত নানাবিধ পদক্ষেপের ফলে দেশব্যাপী তথ্যপ্রযুক্তির জাগরণ তৈরি হয়েছে। এর সুফল হিসেবে রূপকল্প-২০২১ সফলভাবে বাস্তবায়িত হয়েছে। শেখ হাসিনা বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণ, ইন্টারনেটের ব্যবহার বৃদ্ধি, সাবমেরিন ক্যাবলের ক্যাপাসিটি বৃদ্ধি, নতুন সাবমেরিন ক্যাবল স্থাপনসহ টেলিযোগাযোগ খাতের সকল সেবা আধুনিক ও যুগোপযোগী করা হয়েছে। তথ্য-প্রযুক্তিবান্ধব নীতি প্রণয়ন করা হয়েছে। দেশে পরীক্ষামূলকভাবে ৫জি প্রযুক্তির নেটওয়ার্ক চালু করা হয়েছে। ইতোমধ্যে আমরা ব্যবহার করতে শুরু করেছি বাংলাদেশের নিজস্ব স্যাটেলাইট ‘বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট’ এর সেবা।’
প্রধানমন্ত্রী  বলেন, ‘রূপকল্প ২০২১-এর আলোকে ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার পর আমাদের পরবর্তী লক্ষ্য হলো স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ে তোলা। স্মার্ট বাংলাদেশে হবে স্মার্ট গভর্মেন্ট, স্মার্ট জনগোষ্ঠী এবং স্মার্ট শিল্প কলকারখানা। ব্যবসা-বাণিজ্য, স্বাস্থ্য, শিক্ষা, কৃষিসহ সকল ক্ষেত্রে রোবোটিকস, আর্টিফিসিয়াল ইন্টেলিজেন্স, ন্যানো টেকনোলজি, জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং, জৈবপ্রযুক্তি অর্থাৎ ডিজিটাল ডিভাইস ব্যবহার নিশ্চিত করা হবে।’
স্বল্পোন্নত দেশ হতে উন্নয়নশীল দেশে উত্তরণের পর উন্নত রাষ্ট্র ও জ্ঞানভিত্তিক সমাজ গঠন রূপকল্প ২০৪১-এর মূল লক্ষ্য জানিয়ে শেখ হাসিনা  বলেন,  জনকল্যাণে তথ্যপ্রযুক্তির সর্বজনীন ব্যবহার, ৪র্থ শিল্পবিপ্ল¬বের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় ৫জি প্রযুক্তি, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ইত্যাদির সঠিক প্রয়োগের মাধ্যমে প্রান্তিক পর্যায়ে আর্থসামাজিক উন্নয়ন হচ্ছে পরবর্তী চ্যালেঞ্জ। তিনি বলেন, ইউনিয়ন পর্যায়ে অপটিক্যাল ফাইবার সংযোগ, সকল উপজেলায় অপটিক্যাল ফাইবার কানেকটিভিটি, সকল জেলায় জেলা তথ্য বাতায়ন এবং সারাদেশে সাড়ে চার হাজারেরও বেশি ডিজিটাল সেন্টার প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে। ৮,৫০০টি ডাকঘরকে পোস্ট ই-সেন্টারে রূপান্তরিত করা হয়েছে। ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে পারস্পরিক যোগাযোগকে দ্রুত ও সহজতর করা হয়েছে। করোনাকালে ভিডিও কনফারেন্সিং দেশের অর্থনীতির চাকা সচল রাখতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে। এসকল উদ্যোগ বাস্তবায়নের ফলে সরকারি সেবা জনগণের দোরগোড়ায় পৌঁছে দেওয়া সম্ভব হয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন,  দেশের শিক্ষা, স্বাস্থ্য, ব্যবসা-বাণিজ্য, সামাজিক যোগাযোগসহ প্রতিটি খাতে অমিত সম্ভাবনার দ্বার উন্মোচিত হয়েছে। তরুণ প্রজন্মের জন্য নতুন নতুন কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী আশা করেন, ‘ডিজিটাল বাংলাদেশ মেলা ২০২৩’ এর মাধ্যমে দেশের জনগণ টেলিযোগাযোগ ও তথ্য প্রযুক্তির বিভিন্ন দিক সম্পর্কে আরো অবহিত হবেন এবং সারা বিশ্বের সঙ্গে তাল রেখে ডিজিটাল সেবা ব্যবহার করবেন। তিনি ‘ডিজিটাল বাংলাদেশ মেলা ২০২৩’ উপলক্ষ্যে গৃহীত সকল কর্মসূচির সার্বিক সাফল্য কামনা করেন।

এই বিভাগের আরো খবর

Leave a Comment