গত ২৩ ডিসেম্বর সপরিবারে গণভবনে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে দেখা করেছিলেন কাদের সিদ্দিকী। এরপর থেকেই রাজনৈতিক মহলে গুঞ্জন ওঠে, আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন জোটে যোগ দেবেন তিনি।

"/>
Home রাজনীতি কাদের সিদ্দিকীর বক্তব্য: টাঙ্গাইলে আ.লীগ নেতাদের ক্ষোভ

কাদের সিদ্দিকীর বক্তব্য: টাঙ্গাইলে আ.লীগ নেতাদের ক্ষোভ

নিউজ ডেস্ক

by Nahid Himel

গত ২৩ ডিসেম্বর সপরিবারে গণভবনে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে দেখা করেছিলেন কাদের সিদ্দিকী। এরপর থেকেই রাজনৈতিক মহলে গুঞ্জন ওঠে, আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন জোটে যোগ দেবেন তিনি।

প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাতের পর মঙ্গলবার টাঙ্গাইলে ছিল বঙ্গবন্ধুর কাছে কাদেরিয়া বাহিনীর অস্ত্র জমা দেয়ার ঘটনার ৫০ বছর পূর্তি অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন মুক্তিযুদ্ধ বিষয়কমন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক ও কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক সম্পাদক মৃণাল কান্তি দাস। আওয়ামী লীগের দুই জ্যেষ্ঠ নেতা ওই অনুষ্ঠানে যোগ দেয়াকে কাদের সিদ্দিকীর ক্ষমতাসীন দলের জোটে ভেড়ার ইঙ্গিত বলেই মনে করছেন অনেকে। তবে কেন্দ্রীয় দুই নেতা অনুষ্ঠানে যোগ দিলেও জেলা আওয়ামী লীগের কেউ সেখানে ছিলেন না।

একদিকে জেলার নেতাদের না জানিয়ে কাদের সিদ্দিকীর অনুষ্ঠানে মন্ত্রী ও কেন্দ্রীয় নেতার যোগ দেয়া, অন্যদিকে জেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি ও সংসদ সদস্যদের নিয়ে কাদের সিদ্দিকীর নেতিবাচক মন্তব্যে ক্ষোভে ফুঁসছেন টাঙ্গাইল জেলা আওয়ামী লীগের অনেক নেতা।

সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও জেলা আওয়ামী লীগের সদ্য বিদায়ী কমিটির যুগ্ম সম্পাদক শাহজাহান আনছারী বলেন, ‘কাদের সিদ্দিকী জোটে আসার ইঙ্গিত পেয়ে আমরা খুশি হয়েছি। আরও খুশি হতাম, যদি নেতারা জেলা আওয়ামী লীগকে জানিয়ে ওই অনুষ্ঠানে আসতেন। মন্ত্রীর সামনে তিনি জেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি ও সংসদ সদস্যদের নিয়ে যে বক্তব্য দিয়েছেন, তা অমার্জনীয় ও নিন্দনীয়। তাঁর মুক্তিযুদ্ধের পরের সব ভূমিকা বিতর্কিত। তিনি রাজাকার মীর কাশেমের দিগন্ত টেলিভিশনে উপস্থাপনা করেছেন। জামায়াত-বিএনপির সঙ্গে জোটবদ্ধ হয়ে নির্বাচন করেছেন। জিয়াউর রহমান যেমন মুক্তিযুদ্ধের কলঙ্ক, তেমনি কাদের সিদ্দিকীও। আগামী সংসদ নির্বাচনে তাঁকে জোটবদ্ধ করলে টাঙ্গাইল জেলা আওয়ামী লীগের ক্ষতির বিষয়টিও কেন্দ্রকে ভাবতে হবে।’

এদিকে, মুক্তিযুদ্ধ বিষয়কমন্ত্রী মোজাম্মেল হক বলেন, ‘বঙ্গবীরের বক্তব্যে স্থানীয় আওয়ামী লীগ সম্পর্কে যে মনোভাব প্রকাশ পেয়েছে, তা আমার জন্য বিব্রতকর। আমরা এই অনুষ্ঠানকে জাতীয় রাজনীতির প্রেক্ষাপটে দেখতে চাই। সম্পর্কের কোনো অবনতি থাকলে তা জাতীয়ভাবে নিতে চাই না।’

জেলা আওয়ামী লীগের সদ্য বিদায়ী কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক ও টাঙ্গাইল পৌরসভার সাবেক মেয়র জামিলুর রহমান বলেন, ‘বহুদিন পর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে কাদের সিদ্দিকীর সাক্ষাৎ হয়েছে। আমরা আশাবাদী হয়েছিলাম; কিন্তু মন্ত্রীর উপস্থিতিতে দলীয় সংসদ সদস্য ও নেতাদের সম্পর্কে যে বক্তব্য দিয়েছেন, তাতে আমরা হতাশ।’

জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সংসদ সদস্য জোয়াহেরুল ইসলাম জোয়াহের বলেন, ‘কাদের সিদ্দিকীর সঙ্গে জোট হওয়ার বিষয়ে কেন্দ্র থেকে কোনো নির্দেশনা পাইনি। বঙ্গবন্ধুর কাছে কাদেরিয়া বাহিনীর অস্ত্র জমাদানের ৫০ বছর পূর্তি অনুষ্ঠানে একজন মন্ত্রী ও একজন কেন্দ্রীর নেতার আগমন সম্পর্কে আমাদের কেউ জানায়নি। আমরা দলের কেন্দ্রীয় নির্দেশনার বাইরে নই। তবে জেলায় দলের শৃঙ্খলা যাতে বজায় থাকে, সে বিষয়টিও কেন্দ্রীয় নেতারা দেখবেন।’

১৯৯৯ সালে আওয়ামী লীগ থেকে বের হয়ে যান কাদের সিদ্দিকী। পরে কৃষক শ্রমিক জনতা লীগ নামে নতুন একটি রাজনৈতিক দল গঠন করেন তিনি।

এই বিভাগের আরো খবর

Leave a Comment