আজ শনিবার (১১ মার্চ) সকালে বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে ‘বাংলাদেশ বিজনেস সামিট’ এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ এখন উন্নয়নের রোল মডেল। করোনায় পুরো বিশ্ব থমকে গেলেও আমাদের অর্থনীতি থামেনি। ২০০৬ এর ৬০ বিলিয়ন ডলারের জিডিপি এখন ৪৬৫ বিলিয়ন ডলারে পরিণত হয়েছে।
তিনি বলেন, পোশাক খাতে বিশ্বে এখন দ্বিতীয় অবস্থানে বাংলাদেশ। বেসরকারি খাতকে গুরত্ব না দিলে এতো কিছু করা সম্ভাব হতো না।
সরকারপ্রধান বলেন, নিজস্ব অর্থায়নের পদ্মা সেতু নির্মাণ করে বাংলাদেশ তাদের সক্ষমতার পরিচয় দিয়েছে। আমরা যে পারি নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতু নির্মাণ করে সেটা প্রমাণ করেছি। রূপকল্প ২০৪১ বাস্তবায়নে কাজ শুরু করেছি।

এর আগে, দেশের ব্যবসা ও বিনিয়োগকে সম্প্রসারণের লক্ষ্যে ‘বাংলাদেশ বিজনেস সামিট’ উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি, পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আবদুল মোমেন, প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ বিষয়ক উপদেষ্টা সালমান এফ রহমানসহ সরকারের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা ও ব্যবসায়ী নেতৃবৃন্দ উপস্থিত রয়েছেন।
প্রতিষ্ঠার ৫০ বছর উদযাপন উপলক্ষে বিজনেস সামিটের আয়োজন করেছে ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন এফবিসিসিআই।
তিন দিনব্যাপী এই সম্মেলন ১৩ মার্চ পর্যন্ত চলবে। সামিটে বাংলাদেশের বিভিন্ন খাত নিয়ে ১৭টি সেমিনার ও ৩টি প্লেনারি সেশন অনুষ্ঠিত হবে। এতে অংশ নেবেন দুই শতাধিক আন্তর্জাতিক ব্র্যান্ড, ব্যবসায়ী ও বিনিয়োগকারী।
সম্মেলনে যুক্তরাজ্য, সৌদি আরব, চীন, ভুটান, সংযুক্ত আরব আমিরাতসহ ১২টি আন্তর্জাতিক সংস্থার সিইও এবং ২০০ এর বেশি-বিদেশি বিনিয়োগকারী, বিশ্বের ১৭টি দেশের ব্যবসায়ী নেতারা অংশ নেবেন। ইতোমধ্যে অনেকেই সম্মেলনে অংশ নিয়েছেন।
সামিটের আন্তর্জাতিক মিডিয়া পার্টনার সিএনএন এবং দেশীয় মিডিয়া পার্টনার আরটিভি।
উল্লেখ্য; প্রতিষ্ঠার ৫০ বছর উদযাপন উপলক্ষে দেশে প্রথমবারের মতো বিজনেস সামিট আয়োজন করতে যাচ্ছে ফেডারেশন অব বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (এফবিসিসিআই)। এতে প্রাকৃতিক সম্পদ অনুসন্ধান ও উত্তোলন, যোগাযোগ, টেলিযোগাযোগ, পোশাক ও বস্ত্র, হালকা প্রকৌশল, স্বাস্থ্য-শিক্ষার মতো খাতে বিদেশি বিনিয়োগের বড় সুযোগ রয়েছে।
এ বিষয়ে এফবিসিসিআইয়ের সভাপতি জসিম উদ্দিন বলেন, চট্টগ্রামের মিরসরাইয়ে ৩০ হাজার একর জমির ওপর বঙ্গবন্ধু স্পেশাল ইকোনোমিক জোন হচ্ছে। সেখানে অনেক বিদেশি কোম্পানি রেজিস্টার্ড করেছেন, জমি কিনেছেন। কোরিয়া, জাপান, চীনসহ বাংলাদেশের অনেক বড় বড় কোম্পানিগুলো সেখানে জমি কিনেছে বিনিয়োগ করার জন্য।
তিনি বলেন, বিজনেস সামিটে বিদেশি বিনিয়োগকারী ও ব্যবসায়ী প্রতিনিধিরা আসছেন বাংলাদেশে ব্যবসায়ের কী পরিমাণ সুযোগ রয়েছে, সেটি দেখার জন্য। এই সামিট নিয়ে আমাদের অনেক পরিকল্পনা রয়েছে। সেখানে আমরা আমাদের অনেকগুলো খাতকে তুলে ধরাতে চাচ্ছি। এটি যে নতুন একটি বাংলাদেশ, আমরা ট্রিলিয়ন ডলারের ইকোনমিতে যাচ্ছি, বাংলাদেশের যে একটি বড় সম্ভাবনা ইতোমধ্যে তৈরি হয়েছে, সেটাই আমরা তুলে ধরব।
পরিবহন বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ড. সামছুল হক বলেন, যারা দূরদর্শী, দীর্ঘসময়ের জন্য বিনিয়োগ করতে চায়। তাদের কাছে এই দুর্দিনের সময়ে এই প্যারামিটারগুলো অত্যন্ত গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা হবে। আমার মনে হয়, এই সম্ভাবনাকে কাজে লাগানোর যথেষ্ট সুযোগ রয়েছে। আমাদের আশপাশের দেশগুলো থেকেও আমরা অনেক ভালো অবস্থানে রয়েছি এবং সেটি প্রমাণও
করেছি যে, আমাদের সক্ষমতার জায়গার মধ্যে অনেকগুলো অন্যদের তুলনায় ঈর্ষণীয়। সেই হিসেবে নিজেদের অর্জনগুলোকে এখন অন্যদের কাছে সুন্দরভাবে তুলে ধরতে হবে।
বিশেষজ্ঞরা বলেন, বিদেশি বিনিয়োগের সুযোগ করে দিতে সব ধরনের প্রণোদনা দিতে হবে। কারণ, বিদেশি বিনিয়োগ বৃদ্ধি পেলে দেশের উন্নয়নের গতি আরও বেগবান হবে।