আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, ফৌজদারি মামলার আসামিদের মাঠে নামিয়ে বিএনপি দেশে ত্রাস ও নৈরাজ্য সৃষ্টির মাধ্যমে অস্থিতিশীল পরিবেশ সৃষ্টির পাঁয়তারা করছে। তবে আন্দোলনের নামে সন্ত্রাসের মাধ্যমে জনমনে আতঙ্ক ও অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সৃষ্টির কোন সুযোগ দেয়া হবে না। সরকার জনগণের জানমাল রক্ষা, জননিরাপত্তা নিশ্চিতকরণ এবং শান্তিপূর্ণ ও স্থিতিশীল পরিবেশ বজায় রাখতে বদ্ধপরিকর।
সোমবার গণমাধ্যমে দেয়া এক বিবৃতিতে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আরও বলেন, বিএনপি দেশে সন্ত্রাস, নৈরাজ্য সৃষ্টির মাধ্যমে একটি সাংবিধানিক ও নির্বাচিত সরকারকে উৎখাতের জন্য ষড়যন্ত্রে লিপ্ত রয়েছে। এরই ধারবাহিকতায় সারাদেশে আন্দোলনের নামে তারা সশস্ত্র মহড়া দিচ্ছে। একইভাবে আন্তর্জাতিক সংস্থা ও বন্ধু রাষ্ট্রসমূহের কাছে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে বিষোদগার করছে।
ওবায়দুল কাদের বলেন, আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা ধৈর্য নিয়ে পরিস্থিতি মোকাবেলা করছে। আমাদের দলের সভাপতি বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা নেতাকর্মীদের ধৈর্য ধারণ ও গণতান্ত্রিক ঔদার্য্য নিয়ে সহনশীল আচরণ করার নির্দেশনা প্রদান করেছেন। এরই সুযোগে বিএনপি তাদের সন্ত্রাসী বাহিনী মাঠে নামিয়ে রাজনৈতিক পরিবেশকে অস্থিতিশীল করার উদ্দেশে ক্রমাগত উস্কানি দিচ্ছে।
বিএনপির সমালোচনা করে তিনি আরও বলেন, এদেশে হত্যা-ক্যু-ষড়যন্ত্র-চক্রান্ত দুর্নীতি-দুর্বৃত্তায়ন সন্ত্রাস ও জঙ্গীবাদের প্রতিভূ এবং পৃষ্ঠপোষক হলো বিএনপি। বিএনপির জন্মই হয়েছে নিষ্ঠুর স্বৈরশাসনের গর্ভে। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট সপরিবারে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হত্যাকা- এবং ৩ নবেম্বর জেলখানায় চার জাতীয় নেতা হত্যার পর ষড়যন্ত্রের পথ বেয়ে বন্দুকের নলের মুখে অবৈধ ও অসাংবিধানিভাবে জিয়াউর রহমান রাষ্ট্রক্ষমতা দখল করে বিএনপি নামক দুর্বৃত্তায়নের সাংগঠনিক চক্র সৃষ্টি করে।
বিবৃতিতে ওবায়দুল কাদের বলেন, স্বৈরাচার জিয়ার বিএনপি একদিকে কার্ফু মার্কা গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করে, অন্যদিকে আওয়ামী লীগসহ অন্যান্য প্রগতিশীল গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক দলসমূহের নেতাকর্মীদের ওপর হত্যা, খুন, অত্যাচার-নির্যাতন ও নিপীড়নের স্টিম রোলার চালিয়ে বাঙালী জাতিকে ঘোর অন্ধকারের যুগে নিমজ্জিত করে।
তিনি বলেন, ১৯৯১-৯৬ ও ২০০১-০৬ সময়কালে বিএনপির শাসনামলে নির্বিচারে আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের হত্যা করা হয়; বিরোধী দলের নেতাকর্মীদের ওপর বিভীষিকাময় অত্যাচার-নির্যাতন ও নিপীড়ন চালানো হয়। এমনকি আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনাকে হত্যার উদ্দেশ্যে বিভিন্ন সময় একের পর এক হামলা পরিচালিত হয়। যার ভয়াবহ রূপ উন্মোচিত হয় বিএনপির শীর্ষ নেতা খালেদা জিয়া ও তার পুত্র তারেক রহমানের পৃষ্ঠপোষকতায় ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট সংঘটিত নারকীয় গ্রেনেড হামলার মধ্য দিয়ে।
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, রাষ্ট্রীয় ক্ষমতাকে অপব্যবহার করে পৃথিবীর কোথাও এমন ভয়াবহ ও বীভৎস হত্যাযজ্ঞ পরিচালিত হয়নি। মির্জা ফখরুলসহ বিএনপি নেতাদের বক্তব্য ও রাজনৈতিক আচরণ দেখে মনে হয়, তারা তাদের অতীতের এই হীন কর্মকা-ের জন্য অনুতপ্ত নয়; বরং তারা হত্যা ও খুনের রাজনীতিকে উস্কে দেয়ার জন্য স্লোগান দেয়- ‘৭৫-এর হাতিয়ার, গর্জে উঠুক আরেকবার!’ এবং ‘টেক ব্যাক বাংলাদেশ’ স্লোগানের মধ্য দিয়ে দুঃশাসনের অন্ধকার যুগে তারা বাংলাদেশকে ফিরিয়ে নিতে চায়।
তিনি বলেন, অন্ধকারের অপশক্তি বিএনপি সরকারে থাকা অবস্থায় যেমন রাষ্ট্রযন্ত্রকে ব্যবহার করে সন্ত্রাস ও জঙ্গীবাদ সৃষ্টি করেছিল, অপরদিকে বিরোধী দলে থেকে আগুন সন্ত্রাসের মাধ্যমে শত শত নিরীহ মানুষ হত্যা করেছে এবং দেশের উন্নয়ন-অগ্রগতি শান্তি-শৃঙ্খলা ও স্থিতিশীলতা বিনষ্টের ষড়যন্ত্রে মেতে উঠেছে।