দেশের সব মুদ্রণ শিল্প-কারখানাগুলোকে একই স্থানে নিতে ২০১৬ সালের জানুয়ারি মাসে ‘বিসিক মুদ্রণ শিল্পনগরী প্রকল্প’ হাতে নিয়েছিল সরকার। এই প্রকল্পের মেয়াদ শেষ হওয়ার কথা ছিল ২০২১ সালের ডিসেম্বরে। কিন্তু কাজে কোনো ধরনের অগ্রগতি না হওয়ায় প্রকল্পের সংশোধনী অনুমোদন দিয়েছে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটি (একনেক)।
প্রকল্পটি সংশোধনীর পর ব্যয় বেড়েছে ১২৫ কোটি টাকা।
পূর্বে যেটির ব্যয় ধরা হয়েছিল ১৩৮ কোটি ৭০ লাখ টাকা, এখন তা বেড়ে ২৬৪ কোটি ৫৫ লাখ টাকায় দাঁড়িয়েছে। আর সময় বেড়েছে তিন বছর। প্রকল্পের সংশোধনী অনুযায়ী প্রকল্পের মেয়াদ আবারও বাড়ানো হয়েছে ২০২৪ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত। প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করছে বাংলাদেশ ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প করপোরেশন।
প্রকল্পটির মূল উদ্দেশ্যগুলো হলো ঢাকা শহর ও দেশের অন্যান্য স্থানে অপরিকল্পিতভাবে গড়ে ওঠা মুদ্রণ শিল্প-কারখানা একটি সুবিধাজনক পরিবেশবান্ধব স্থানে স্থানান্তরসহ যাবতীয় সহযোগিতা দেওয়া। বেসরকারি শিল্পোদ্যোক্তাদের ২৯৯টি মুদ্রণ শিল্প স্থাপনে অবকাঠামোগত সুবিধা এবং কর্মসংস্থান সৃষ্টির মাধ্যমে দারিদ্র্য বিমোচন ও অর্থনৈতিক উন্নয়ন করা। প্রকল্পের প্রধান কার্যক্রমগুলো হলো ৫০ একর ভূমি অধিগ্রহণ ও আট লাখ চার হাজার ঘনমিটার ভূমি উন্নয়ন। ৩৭৫ বর্গমিটার অফিস ভবন ও ৯৩ বর্গমিটার পাম্প ড্রাইভার কোয়ার্টার্স নির্মাণ। এ ছাড়া এক হাজার ৮৬৪ মিটার সীমানাপ্রাচীর ও একটি গেট নির্মাণ। ৪৫ হাজার ৬৭৩ বর্গমিটার রাস্তা নির্মাণ, ৯ হাজার ৪৭৫ মিটার ড্রেনেজ ব্যবস্থা করা। ২৮টি কালভার্ট-ক্রসড্রেন নির্মাণ, ১৬০.৫৩ মিটার প্যালাসাইডিং ও একটি গভীর নলকূপ স্থাপন করা। চার হাজার ৮০৫ মিটার পানির লাইন ও পাঁচ হাজার ৩৫০ মিটার বিদ্যুত্লাইন স্থাপন, সোলার প্যানেল স্থাপন এবং এক হাজার ৪৮৭ বর্গমিটার সলিড ওয়েস্ট ম্যানেজমেন্ট/ডাম্পিং ইয়ার্ড নির্মাণ।
এ বিষয়ে একনেক পরবর্তী সংবাদ সম্মেলনে পরিকল্পনা বিভাগের সচিব মো. মামুন-আল-রশীদ জানান, প্রকল্পটি বাস্তবায়ন হলে মুদ্রণশিল্পে কর্মসংস্থান সৃষ্টির মাধ্যমে দারিদ্র্য বিমোচন করা সম্ভব হবে, যা প্রত্যক্ষ-পরোক্ষভাবে অর্থনৈতিক উন্নয়নকে গতিশীল করবে এবং জিডিপিতে অবদান রাখবে। শিল্প মন্ত্রণালয়ের আওতায় বাংলাদেশ ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প করপোরেশন সম্পূর্ণ সরকারি অর্থায়নে বিসিক মুদ্রণ শিল্পনগরী স্থাপন করবে।