চার জেলায় ২৫ সার ব্যবসায়ীকে সোমবার জরিমানা করেছেন ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের ভ্রাম্যমাণ আদালত। এদের মধ্যে নেত্রকোনায় ১৩, ঠাকুরগাঁওয়ে ৩, ময়মনসিংহের ঈশ্বরগঞ্জ ও গৌরীপুরে ৭ এবং মুন্সীগঞ্জের টঙ্গীবাড়ীতে ২ ডিলার ও ব্যবসায়ী রয়েছেন। সার-সংকটের মিথ্যা গুজব ছড়ানো, অধিক মূল্যে বিক্রয়, ক্রেতাদের তালিকা সংরক্ষণ না করা, রসিদ না দেওয়া বিভিন্ন অনিয়মের কারণে এ জরিমানা করা হয়। এদিকে, বগুড়ার সারিয়াকান্দিতে পাচারকালে ৯ বস্তা ইউরিয়া, টিএসপি ও ডিএপি সার জব্দ করা হয়েছে। সারের কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি করে কৃষকদের হয়রানি বন্ধ, সারের সিন্ডিকেট চক্রের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের দাবিতে জেলা প্রশাসক বরাবর স্মারকলিপি দিয়েছে বাংলাদেশ কৃষক সমিতি গাইবান্ধা জেলা কমিটি।
প্রতিনিধিদের পাঠানো খবর-
ঠাকুরগাঁও :
ঠাকুরগাঁওয়ের ৩ সার ও চাল ব্যবসায়ীকে ১৮ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে। সদর উপজেলার খোচাবাড়ী হাটের মেসার্স ট্রেডার্সকে ৩ হাজার টাকা, চালের দোকান মেসার্স সুরুজ ট্রেডার্সকে ১০ হাজার টাকা ও সার ও কীটনাশকের দোকান মেসার্স মা-বাবা ট্রেডার্সকে ৫ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়।
ঈশ্বরগঞ্জ (ময়মনসিংহ) :
ময়মনসিংহের ঈশ্বরগঞ্জে বিসিআইসির ডিলারসহ ৩ জনকে জরিমানা করেছেন ভ্রাম্যমাণ আদালত। এদের মধ্যে নশতি বাজারে বিসিআইসি ডিলার গোপাল এন্টারপ্রাইজকে ১০ হাজার, সাব ডিলার শামছুলের দোকানের জুয়েলকে ১০ হাজার ও কাঁঠালবাজারের তাহের উদ্দিনের দোকানে ৫ হাজার এবং এরশাদুলকে ১০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। ভ্রাম্যমাণ আদালতের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা হাফিজা জেসমিন এ অভিযান পরিচালনা করেন।
গৌরীপুর (ময়মনসিংহ) :
ময়মনসিংহের গৌরীপুরে ৪ ব্যবসায়ীকে ১৩ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে। এদের মধ্যে পৌর শহরের পৌরসভা মাছ বাজারে খুচরা সার বিক্রেতা মো. চান মিয়াকে ৪ হাজার টাকা, শাহগঞ্জ বাজারে আল-আমিনকে ৩ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। একই দিন খুচরা বিক্রেতা মো. জামাল উদ্দিন ও মো. ফিরোজ মিয়াকে ৬ হাজার টাকা জরিমানা করেন ভ্রাম্যমাণ আদালত।
টঙ্গীবাড়ী (মুন্সীগঞ্জ) :
মুন্সীগঞ্জের টঙ্গীবাড়ীতে ২ সার ব্যবসায়ীকে জরিমানা করা হয়েছে। অভিযান পরিচালনা করেন জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের জেলা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক আসিফ আল আজাদ। এদের মধ্যে মেসার্স মোল্লা এন্টারপ্রাইজের মালিককে ৩ হাজার ও রাজিব অ্যান্ড ব্রাদার্সের মালিককে ১০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়।
নেত্রকোনা ও বারহাট্টা :
নেত্রকানার মদন, বারহাট্টা ও সদর উপজেলায় ১৩ ডিলারকে জরিমানা করা হয়েছে। এর মধ্যে মদনে ৪ ডিলারকে ৬০ হাজার টাকা ও বারহাট্টায় ৬ ব্যবসায়ীকে ২১ হাজার, সদরে ৩ ব্যবসায়ীকে ২১ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। মদন পৌরশহরে মেসার্স মাতৃ-পিতৃ ট্রেডার্সকে ২০ হাজার, মেসার্স স্বপন কুমার পালকে ১০ হাজার, মেসার্স কাইয়ুম ট্রেডার্সকে ১৫ হাজার ও মেসার্স বিপাশা ট্রেডার্সকে ১৫ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। বারহাট্টা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট এসএম মাজহারুল ইসলাম আদালত পরিচালনা করেন। যে ৬ ব্যবসায়ীকে জরিমানা করা হয়েছে তারা হলেন-উড়াদিঘি বাজারের মাসুম, রূপগঞ্জ (বাউশী) বাজারের অরুণ চন্দ্র সাহা ও সুজন ফকীর, বারহাট্টা-গোপালপুর বাজারের শেখ ফরিদ, ব্রজেশ পাল ও সাইফুল ইসলাম। সদর উপজেলার পঞ্চাননপুর এলাকায় অবৈধভাবে সার মজুতের দায়ে এক ব্যবসায়ীকে ৭ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। জেলা শহরের অজহর রোড ও সাকুয়া বাজার এলাকায় দুই ব্যবসায়ীকে ৭ হাজার টাকা করে জরিমানা করা হয়।
বগুড়া :
সারিয়াকান্দি উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ আবদুল হালিম সোমবার দুপুরে উপজেলার হাটফুলবাড়ি ইউনিয়নের আমতলি গ্রামের রাস্তা থেকে টিএসপি ও ডিএপি সার জব্দ করেন। পরে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ রেজাউল করিমের ভ্রাম্যমাণ আদালত ডিলার ও ক্রেতাকে ১৩ হাজার টাকা জরিমানা করেছেন। এছাড়া সারগুলো স্পট নিলামে আট হাজার টাকা বিক্রি করে কোষাগারে জমা করা হয়েছে। সার ডিলার নিশাত এন্টারপ্রাইজের মালিক আবদুর রাজ্জাককে ৫ হাজার টাকা, সিরাজ ট্রেডার্সের মালিক খুচরা বিক্রেতা আশরাফ আলীকে ৫ হাজার টাকা এবং ক্রেতা গাবতলী উপজেলার নেপালতলী ইউনিয়নের বকসিপাড়া গ্রামের মৃত হাবিবুর রহমানের ছেলে কৃষক টিপু মিয়াকে ৩ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়।
গাইবান্ধা :
বাংলাদেশ কৃষক সমিতি গাইবান্ধা জেলা কমিটি সোমবার জেলা প্রশাসকের কাছে এ স্মারকলিপি দেয়। এ সময় উপস্থিত ছিলেন কৃষক সমিতি জেলা কমিটির সভাপতি সুভাষ শাহ রায়, সাধারণ সম্পাদক ছাদেকুল ইসলাম মাস্টার, জেলা কমিটির সদস্য ও সিপিবির সাবেক সভাপতি ওয়াজিউর রহমান প্রমুখ। স্মারকলিপিতে বলা হয়, বর্তমানে গাইবান্ধায় ইউরিয়া, পটাশসহ সারের কৃত্রিম সংকট তৈরি করে অতিরিক্ত টাকা কৃষকদের কাছ থেকে হাতিয়ে নেওয়া হচ্ছে।