ভারত থেকে বাংলাদেশে জ্বালানি সরবরাহের লক্ষ্যে এগিয়ে চলছে ‘বাংলাদেশ-ভারত মৈত্রী পাইপলাইন’ নির্মাণকাজ। বর্তমানে ভারতের পূর্বাঞ্চলীয় আসাম রাজ্যের গুয়াহাটির নুমালিগড় রিফাইনারি থেকে"/>
Home জাতীয় দ্রুত দীর্ঘমেয়াদি জ্বালানি প্রবাহ সৃষ্টিতে পাইপ লাইনের কাজ চলছে

দ্রুত দীর্ঘমেয়াদি জ্বালানি প্রবাহ সৃষ্টিতে পাইপ লাইনের কাজ চলছে

বাংলাদেশ-ভারত মৈত্রী পাইপলাইন

by Nahid Himel
ভারত থেকে বাংলাদেশে জ্বালানি সরবরাহের লক্ষ্যে এগিয়ে চলছে ‘বাংলাদেশ-ভারত মৈত্রী পাইপলাইন’ নির্মাণকাজ। বর্তমানে ভারতের পূর্বাঞ্চলীয় আসাম রাজ্যের গুয়াহাটির নুমালিগড় রিফাইনারি থেকে দিনাজপুরের  পার্বতীপুর পর্যন্ত হাইস্পিড ডিজেল আসছে রেলের মাধ্যমে। মৈত্রী পাইপলাইন নির্মাণকাজ শেষ হলে আরো টেকসইভাবে ভারত থেকে জ্বালানি তেল আসার সুযোগ সৃষ্টি হবে।

নুমালিগড় রিফাইনারির ব্যবস্থাপনা পরিচালক ভাস্কর জ্যোতি ফুকন কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘পাইপলাইন এখনো চালু হয়নি।

কূটনৈতিক সূত্রগুলো বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে জ্বালানি খাতে বিদ্যমান সহযোগিতা ও নির্মাণাধীন মৈত্রী পাইপলাইনের দিকে ইঙ্গিত করে বলেছেন, কভিড মহামারির কারণে ওই পাইপলাইনের কাজ শেষ হতে কিছুটা দেরি হচ্ছে। তবে শিঘ্রই তা শেষ হওয়ার কথা রয়েছে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক কূটনীতিক  বলেছেন, স্থায়ী পাইপলাইন নির্মাণের মধ্য দিয়েই জ্বালানি খাতে দুই দেশের দীর্ঘমেয়াদি সহযোগিতার ইঙ্গিত মিলছে। ভারতের দিক থেকেও বাংলাদেশে রপ্তানির আগ্রহ আছে। বাংলাদেশের উত্তরাঞ্চলে ডিজেলের চাহিদা মেটাতে ওই পাইপলাইন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। সমুদ্রপথে চট্টগ্রামে তেল আমদানি করে উত্তরের জেলাগুলোতে পৌঁছানো পর্যন্ত যে খরচ পড়ে তার চেয়ে ভারত থেকে আমদানি লাভজনক।

এদিকে জ্বালানিসংকট মোকাবেলায় ভারতের সঙ্গে দীর্ঘমেয়াদি সহযোগিতা চায় বাংলাদেশও। প্রধানমন্ত্রীর আসন্ন সফরে এ বিষয়ে আলোচনা হতে পারে বলে ইঙ্গিত দিয়েছেন পররাষ্ট্রসচিব মাসুদ বিন মোমেন। তিনি বলেন, ‘ভারতের যদি উদ্বৃত্ত জ্বালানি থাকে এবং তাদের সঙ্গে যদি আমরা দীর্ঘমেয়াদি চুক্তি করতে পারি, সেটি নিয়ে নিশ্চয়ই আমাদের চেষ্টা থাকবে। পূর্বাঞ্চলে যেসব রাজ্য আছে, সেখানে যদি তেল বেশি থাকে, তাহলে সেখান থেকেও আনার চেষ্টা করা হবে। ’

সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো জানায়, রাশিয়া থেকে ভারতের আমদানি করা তেল বাংলাদেশে রপ্তানির সুযোগ আছে কি না—এমন চিন্তাভাবনাও চলছে বিভিন্ন মহলে। রাশিয়া থেকে সরাসরি তেল আমদানির সম্ভাবনা, সুবিধা-অসুবিধা খতিয়ে দেখছে বাংলাদেশ। এমন প্রেক্ষাপটে জ্বালানি সহযোগিতা নিয়ে আলোচনা হতে পারে আগামী মঙ্গলবার নয়াদিল্লিতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির মধ্যকার বৈঠকে। ধারণা করা হচ্ছে, ওই বৈঠক থেকে জ্বালানি খাতে সহযোগিতা নিয়ে নতুন নির্দেশনা আসবে। এরপর দুই দেশের জ্বালানিবিষয়ক মন্ত্রণালয় বা সংশ্লিষ্ট পক্ষগুলো কারিগরি দিকগুলো নিয়ে আলোচনা শুরু করতে পারে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক কর্মকর্তা বলেন, নেপালের জিএমআর কম্পানির সঙ্গে ভারতের ওপর দিয়ে বাংলাদেশে জলবিদ্যুৎ আমদানি সংক্রান্ত একটি চুক্তি সই হতে পারে প্রধানমন্ত্রীর আসন্ন সফরে। এ ছাড়া রামপাল বিদ্যুৎ কেন্দ্রের প্রথম ইউনিটের কাজ শেষ হওয়ার আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দেয়াসহ আরো কয়েকটি বিষয় নিয়ে কাজ চলছে।

সেপা নিয়ে আলোচনা :  এদিকে বাণিজ্য খাতে ভারতের সঙ্গে প্রস্তাবিত ‘কমপ্রিহেনসিভ ইকোনমিক পার্টনারশিপ অ্যাগ্রিমেন্ট (সেপা)’ নিয়ে আলোচনা হতে পারে আসন্ন শীর্ষ বৈঠকে। সেপা স্বাক্ষরের লক্ষ্যে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় বা কারিগরি পর্যায়ে আনুষ্ঠানিক আলোচনা শুরুর নির্দেশনাও আসতে পারে ওই বৈঠক থেকে।

সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা বলেছেন, সেপা স্বাক্ষর করতে কিছুটা সময় লাগতে পারে। কারণ আনুষ্ঠানিক আলোচনা এখনো শুরু হয়নি। কেবল সমীক্ষা শেষ হয়েছে। সেপা নিয়ে আলোচনায় বেশ সময় প্রয়োজন।

সেপা সই করলে বাংলাদেশ কিভাবে লাভবান হতে পারে জানতে চাইলে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা বলেছেন, স্বল্পোন্নত দেশ (এলডিসি) হিসেবে বাংলাদেশ এখন যে শুল্কমুক্ত ও কোটামুক্ত সুবিধা পাচ্ছে সেগুলো এলডিসি উত্তরণের পর থাকবে না। এলডিসি থেকে বাংলাদেশের আনুষ্ঠানিক উত্তরণের পর বাণিজ্য বৃদ্ধিতে সেপা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে। এ ধরনের চুক্তির কারিগরি অনেক দিক আছে। অনেক শর্তও থাকে। চুক্তিতে পৌঁছার প্রক্রিয়াটিও খুব সহজ নয়।

এই বিভাগের আরো খবর

Leave a Comment