আইটিসি মৌর্য্য হোটেলে তাদের ওই সাক্ষাতের পর পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন আলোচনার বিষয় সম্পর্কে সাংবাদিকদের অবহিত করেন।
ভারতে সফরকালে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের অনেকগুলো বিষয় এবং অনিষ্পন্ন এজেন্ডা নিয়ে আলোচনা হওয়ার কথা রয়েছে; সই হতে পারে বেশ কয়েকটি চুক্তি। দিল্লীর পালাম বিমানবন্দরে লালগালিচা সংবর্ধনায় বরণ করার পর বিকালে তাঁর সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী। পরে নিজামউদ্দিন আউলিয়ার দরগাহে যান প্রধানমন্ত্রী।
মঙ্গলবার ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মধ্যে দ্বিপক্ষীয় বৈঠকের পাশাপাশি একান্ত বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে। বৈঠক শেষে দু’দেশের মধ্যে সাতটি চুক্তি ও এমওইউ সই হওয়ার কথা রয়েছে।
‘ফিজিক্যাল কানেক্টিভিটির’ বিষয়ে বৈঠকের আলোচনা হয়েছে উল্লেখ করে পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বলেন, গ্রিড কানেক্টিভিটি…যার মাধ্যমে আমরা ভারত থেকে বিদ্যুৎ আনতে পারি। এবং একইভাবে নেপাল, ভুটানের থেকে বিদ্যুৎ এবং ভারতেরও এক অংশ থেকে আরেক অংশে বিদ্যুৎ নিয়ে যাওয়ার যে ব্যাপার আছে, সেগুলোর ব্যাপারে ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন। এবং আমাদের প্রধানমন্ত্রীও তাঁর সাথে সহমত হয়েছেন।
ভারতকে বাংলাদেশঃ রপ্তানি বন্ধ করলে আগেভাগে জানান
রপ্তানি বন্ধ করার ক্ষেত্রে আগেভাগে জানাতে ভারতের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে বাংলাদেশ। ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী সুব্রামনিয়ামকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এ আহ্বান জানান।
প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর আলোচনা প্রসঙ্গে পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন সাংবাদিকদের বলেন, ‘বিভিন্ন স্ট্র্যাটেজিক কমোডিটিজ’ যেগুলো আমরা ভারত থেকে নিই সেগুলোর বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত নেয়ার আগে ভারত যাতে আমাদের জানায়।
পররাষ্ট্র সচিব জানান, বাংলাদেশ এ বিষয়ে আগাম পূর্বাভাস পাওয়ার ওপর গুরুত্ব দিয়েছে। ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে প্রধানমন্ত্রীর আলোচনায় জ্বালানি খাত গুরুত্ব পেয়েছে। ইউক্রেন সংকটের কারণে জ্বালানিসহ বিভিন্ন খাতে যে প্রভাব পড়েছে তা মোকাবেলায় ভারত বাংলাদেশকে কীভাবে সহযোগিতা করতে পারে সে বিষয়েও আলোচনা হয়েছে। ভারতে জ্বালানি তেল উদ্বৃত্ত থাকলে বাংলাদেশ যেন তা পেতে পারে সে বিষয়েও আলোচনা হয়েছে।
কৌশলগত পণ্য রপ্তানির বেলায় ভারতের নিষেধাজ্ঞার মত সিদ্ধান্ত নেয়ার ক্ষেত্রে বাংলাদেশ যাতে আগেভাগে জানতে পারবে, সেই ব্যবস্থা সরকার চাইছে বলেও জানান তিনি। এ বিষয়ে তিনি বলেন, স্ট্র্যাটেজিক কমোডিটিজ যেগুলো আমরা ভারত থেকে নিই, সেগুলোর ব্যাপারে যাতে করে কোনো একটা সিদ্ধান্ত নেয়ার আগে ভারত যেন আমাদেরকে ইনফর্ম করে। পাশাপাশি জ্বালানি বাণিজ্যের যে বিষয়টি আছে, ভারতসহ নেপাল ও ভুটান, এগুলোর মধ্যে অলরেডি এক হাজার মেগাওয়াট আসছে, সুতরাং এটার সুবিধাগুলো আমরা ভোগ করছি।
ভারতের উদ্বৃত্ত তেল যাতে কেনা যায়, সেই ব্যবস্থা বাংলাদেশ এই সফরে চাইবে জানিয়ে পররাষ্ট্র সচিব বলেন, বর্তমানে যে ক্রাইসিসটা যাচ্ছে, সেখানে ডিজেল থেকে আরম্ভ করে পেট্রল বা অন্যান্য প্রডাক্টস, গ্যাস- এটা প্রকিউর করার ক্ষেত্রে অনেক দেশই সমস্যার মধ্যে পড়ছে। ওইটা নিয়েও আলাপ করা হবে যে, যাতে করে তাদের যদি উদ্বৃত্ত থাকে এটা কীভাবে আমরা মিউচুয়ালি এগ্রিড টার্মস অ্যান্ড কন্ডিশন্সের মাধ্যমে যদি আমরা অ্যাসিউরড সাপ্লাই করতে পারি বা আমাদের ডিমান্ডটা মিট করতে পারি, তাহলে সেটাও বর্তমান যে সংকটটা যাচ্ছে ইউক্রেইন-রাশিয়া ক্রাইসিসের কারণে সেটা আমরা সহজে কাটিয়ে উঠতে পারব বলে আমরা আশা রাখি।
এক প্রশ্নে তিনি বলেন, রাশিয়া থেকে কিনতে পারা যাবে না, এটা ঠিক না। কিন্তু রাশিয়ার টেকনিক্যাল স্পেসিফিকেশন্স সেগুলো আমরা এখন যাচাই বাছাই করছি। তাছাড়া কোন মিডিয়াম অব ট্রানজেকশানের মাধ্যমে এই ট্রানজেকশানটা সেটেলড হবে। ভারতের কাছে যদি তাদের উদ্বৃত্ত থাকে সেটা যে কোনো সময়ে যদি আমাদের ফেভারেবল টার্মসে আমরা পাই, তাহলে আমরা অবশ্যই সেটা কনসিডার করব।
মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে সাম্প্রতিক অস্থিরতার দিকে নজর রাখছে ভারত
আঞ্চলিক ইস্যুর মধ্যে মিয়ানমারে সাম্প্রতিক সংঘাতের বিষয় প্রধানমন্ত্রী বৈঠকে তুলে ধরেছেন জানিয়ে তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী তুলে ধরেছেন যে, সাম্প্রতিক সময়ে বিশেষ করে রাখাইনে যে অস্থিরতা আমরা দেখছি এটা কোনোভাবে প্রত্যাবাসনের ক্ষেত্রে বিরূপ প্রতিক্রিয়া বা বিরূপ প্রভাব ফেলবে কি না, এটা সবার মনে একটা শঙ্কা আছে। তাঁরা আমাদেরকে বলেছেন যে, ভারতও লক্ষ্য রাখছে। এখানে কিছুটা অশান্তি বিরাজ করছে। তো, এটা কারও জন্য মঙ্গলজনক নয়।
ইউক্রেইন ও রাশিয়া যুদ্ধের বিরূপ প্রভাব মোকাবিলার বিষয়ে সহযোগিতা নিয়ে আলোচনা হওয়ার কথা জানিয়ে পররাষ্ট্র সচিব বলেন, ইউক্রেইন-রাশিয়া যে ক্রাইসিস, তাতে করে যে সমগ্র বিশ্বে অর্থনীতির উপরে বা বিভিন্নভাবে যে একটা বিরূপ প্রভাব এসেছে সবাই এটার জন্য ক্ষতিগ্রস্ত। এ বিষয়ে আলোচনা হয়েছে এবং আশাবাদ ব্যক্ত করা হয়েছে যে, আমরা কীভাবে আমাদের সহযোগিতা আরও বৃদ্ধি করতে পারি, যাতে এই সংকট মোকাবেলায় আমরা আরও একসাথে কাজ করতে পারি, সে বিষয়েও কিছুটা আলোকপাত করা হয়েছে।
পানি বন্টন ইস্যু
পানি বন্টনের ইস্যুগুলোর কীভাবে আরও অগ্রগতি করা যায়, সে বিষয়ে বৈঠকে কিছুটা আলোকপাত করা হয়েছে জানিয়ে পররাষ্ট্র সচিব বলেন, “মূল আলোচনা মঙ্গলবারে হবে। আজকে জাস্ট এগুলো ফ্ল্যাগ করার মত।”
তিস্তা নদীর পানিবন্টন চুক্তি ঝুলে থাকার মধ্যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভারত সফরে কুশিয়ারা নদীর পানিবন্টন চুক্তি চূড়ান্ত হতে পারে বলে রোববার জানিয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মোমেন।
তিস্তা নিয়ে আলোচনা হবে কি না, এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, আলোচনায় তো সবকিছু থাকবে। গঙ্গাও থাকতে পারে, যেহেতু মেয়াদ শেষ হয়ে যাচ্ছে। এগুলো নিয়ে সামনে আরও আলোচনা করার অবকাশ আছে।
সেপা চুক্তি
একটি অফিসিয়াল ডকুমেন্টের তথ্য বলছে, একটি দ্বিপাক্ষিক বৈঠক শেষে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও নরেন্দ্র মোদি কম্প্রিহেনসিভ ইকোনমিক পার্টনারশিপ অ্যাগ্রিমেন্ট (সেপা) স্বাক্ষরের জন্য আনুষ্ঠানিক আলোচনা শুরুর ঘোষণা দেবেন দুই দেশের প্রধানমন্ত্রী। সেপা স্বাক্ষর হলে এটিই হবে কোনো দেশের সঙ্গে বাংলাদেশের স্বাক্ষরিত প্রথম মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি।
সেপার লক্ষ্য বিবৃতিতে পারস্পরিক বাণিজ্য সম্প্রসারণ ও বিনিয়োগ বাড়ানোর পাশাপাশি রিজিয়নাল ভ্যালু চেইন গড়ে তোলা। এ চুক্তি হলে বাংলাদেশ ও ভারতের মোট দেশ উৎপাদনে (জিডিপি) যথাক্রমে ১.৭২ শতাংশ ও ০.০৩ শতাংশ প্রবৃদ্ধি অর্জিত হবে বলে দুই দেশের যৌথ সমীক্ষা প্রতিবেদনে উঠে এসেছে।
দু-বছর ধরে ভারতে বাংলাদেশের রপ্তানি আয় বাড়ছে। এক বছর আগে দেশটিতে রপ্তানির পরিমাণ প্রথমবারের মতো ১ বিলিয়ন ডলার হওয়ার পর গত অর্থবছরে তা প্রায় দ্বিগুণ হয়েছে। বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, সেপা স্বাক্ষরিত হলে ভারতে বাংলাদেশের রপ্তানি ১৯০ শতাংশ বাড়বে। তবে সেইসঙ্গে বাংলাদেশে ভারতের রপ্তানি ১৮৮ শতাংশ বাড়বে। অর্থাৎ ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের বিদ্যমান বাণিজ্য ঘাটতি এতে খুব একটা কমবে না; তবে পরিস্থিতির উন্নতি হতে পারে।
গত অর্থবছরে ভারত থেকে বাংলাদেশের আমদানির পরিমাণ প্রায় ১৪ বিলিয়ন ডলার; যার বড় অংশই খাদ্যপণ্য ও শিল্পের কাঁচামাল এবং যন্ত্র ও যন্ত্রাংশ।
তবে সেপার অন্যান্য সুফলও রয়েছে। সেপার আওতায় ভারত থেকে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য, কাঁচামাল ও যন্ত্রপাতি স্বল্পমূল্যে ও আরও সহজে আমদানি করা যেতে পারে। এ চুক্তি হলে ভারতে বাংলাদেশের রপ্তানির ক্ষেত্রে বিদ্যমান বিভিন্ন নন-ট্যারিফ ও প্যারা-ট্যারিফ প্রত্যাহার হবে। ফলে ভারতে রপ্তানি সম্ভাবনা ও বাংলাদেশে ভারতীয় বিনিয়োগ বাড়বে।
একইসঙ্গে দেশটির ভারতের সেভেন সিস্টার্সে (ভারতের উত্তরপূর্বের সাত রাজ্য—অরুণাচল, আসাম, মেঘালয়, মণিপুর, মিজোরাম, নাগাল্যান্ড ও ত্রিপুরা বাংলাদেশিদের বিনিয়োগে সম্ভাবনার নতুন দ্বার উন্মোচিত হবে। প্রধানমন্ত্রীর সফরকালে বাংলাদেশের পাটপণ্যের উপর আরোপিত অ্যান্টি-ডাম্পিং শুল্ক প্রত্যাহারের ঘোষণা দিতে পারে ভারত।
২০১৭ সালে প্রতি টন বাংলাদেশি পাটপণ্যের উপর ১৯ ডলার থেকে ৩৫২ ডলার পর্যন্ত অ্যান্টি-ডাম্পিং শুল্ক আরোপ করে দেশটি। ২০১৯ সালে শেখ হাসিনার ভারত সফরকালে নরেন্দ্র মোদি এই শুল্ক প্রত্যাহারের আশ্বাস দিলেও এতদিনেও তা প্রত্যাহার করেনি দেশটি।
ভারতের বাণিজ্য সচিব বি ভি আর সুব্রামান্যামের সঙ্গে গত মাসে সাক্ষাৎ করে নয়াদিল্লিতে অবস্থিত বাংলাদেশ হাইকমিশন বাণিজ্য মন্ত্রণালয়কে জানিয়েছে যে, প্রধানমন্ত্রীর সফরের আগেই ভারত পাটপণ্যের উপর বিদ্যমান অ্যান্টি-ডাম্পিং শুল্ক প্রত্যাহার করবে, যা সফরের সময় যৌথ বিবৃতিতে উল্লেখ থাকবে।
এছাড়া প্রধানমন্ত্রীর সফরকালে চাল, গম, পেঁয়াজসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় খাদ্যপণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে বাংলাদেশের জন্য একটি কোটা নির্ধারণ করে দিতে পারে ভারত, যা চলমান বৈশ্বিক পরিস্থিতিতে বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ খাদ্য চাহিদা মেটাতে সহায়ক হবে।বর্তমানে মালদ্বীপকে এ ধরনের সুবিধা দেয় ভারত।
খাদ্যপণ্য রপ্তানিতে কোটা পদ্ধতি চালু হলে আন্তর্জাতিক বাজারে খাদ্যপণ্যের যত সংকটই হোক না কেন, কিংবা অভ্যন্তরীণ উৎপাদন কমে গেলে ও অভ্যন্তরীণ বাজারে অস্থিরতা থাকলেও বাংলাদেশকে নির্ধারিত পরিমাণ পণ্য দেবে ভারত।
জ্বালানি ইস্যু
প্রধানমন্ত্রীর সফরে ভারত থেকে দীর্ঘমেয়াদে জ্বালানি তেল পাওয়ার অংশীদারত্বের ঘোষণাও আসতে পারে। বর্তমানে দুই দেশের মধ্যে নির্মাণাধীন পাইপলাইনের মাধ্যমে আগামী ১৫ বছরে ভারত থেকে জ্বালানি তেল আমদানির বিষয়ে চুক্তি রয়েছে। \
সম্প্রতি ভারতের রাষ্ট্রীয় পরিশোধনাগার নুমালিগড় রিফাইনারি লিমিটেড ঢাকার সাংবাদিকদের জানিয়েছে, আগামী বছরের শুরুর দিকে এই পাইপলাইনের মাধ্যমে ভারত থেকে বাংলাদেশে তেল রপ্তানি শুরু হবে। আন্তর্জাতিক বাজারে জ্বালানি তেলের দাম ব্যারেলপ্রতি ১০০ ডলারের বেশি হলেও ভারত অনেক কম দামে রাশিয়া থেকে তেল আমদানি করে বিভিন্ন দেশে রপ্তানি করছে।
রাশিয়াকে আন্তর্জাতিক লেনদেন ব্যবস্থা সুইফট থেকে বাদ দেয়ায় ডলারে মূল্য পরিশোধে জটিলতার কারণে রাশিয়া থেকে সরাসরি জ্বালানি তেল আমদানি করতে পারছে না ঢাকা। এ অবস্থায় ভারত থেকে প্রয়োজনীয় জ্বালানি তেল আমদানির বিষয়ে গুরুত্ব দিচ্ছেন সরকারের নীতিনির্ধারকরা।
রোববার আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আবদুল মোমেন বলেন, দুই পক্ষ জ্বালানি তেল নিয়েও আলোচনা করবে।
শেখ হাসিনার সফরে অর্থনৈতিক, বাণিজ্যিক, বিদ্যুৎ ও জ্বালানি সহযোগিতার পাশাপাশি সার্বিক দ্বিপাক্ষিক বিষয়ের মধ্যে যোগাযোগ, নিরাপত্তা, অভিন্ন নদীর পানি বণ্টন ও সীমান্ত ব্যবস্থাপনা গুরুত্ব পাবে বলে প্রধানমন্ত্রীর কাছে পাঠানো সারসংক্ষেপে উল্লেখ করেছে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।
তবে প্রধানমন্ত্রীর এবারের সফরেও তিস্তা নদীর পানি বণ্টন চুক্তি হচ্ছে না। তবে কুশিয়ারা নদীর পানি বণ্টনে একটি সমঝোতা চুক্তি স্বাক্ষর হতে পারে বলে সম্প্রতি যৌথ নদী কমিশনের বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়েছে।
সাতটি সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর হবে
পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আবদুল মোমেন বলেছেন, প্রতিবেশী দেশটিতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সফরকালে বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে সাতটির মতো সমঝোতা স্মারক (এমওইউ) সই হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
পানি, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি, রেলওয়ে, আইন, তথ্য ও সম্প্রচারের মতো অন্যান্য খাতগুলো নিয়ে সমঝোতা স্মারকগুলো স্বাক্ষর হবে বলে আশা করা হচ্ছে।
ট্রান্সশিপমেন্ট চালু হচ্ছে
দুই প্রধানমন্ত্রীর বৈঠকে ভারতের পক্ষ থেকে চট্টগ্রাম ও মোংলা বন্দর ব্যবহার করে ভারতীয় পণ্যের নিয়মিত ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা চালুর বিষয়ে আলোচনা হতে পারে বলে নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের কাছ থেকে জানা গেছে।
প্রধানমন্ত্রীর সফরের আগেই দ্রুততম সময়ের মধ্যে বাংলাদেশের চট্টগ্রাম ও মোংলা বন্দর ব্যবহার করে নির্ধারিত চারটি ট্রায়াল রান সম্পন্ন করেছে ভারত। ফলে এ দুটি বন্দর ব্যবহার করে নিয়মিত ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা চালুর বিষয়ে গুরুত্ব দিচ্ছে ভারত।
গত মার্চে ঢাকায় অনুষ্ঠিত দুই দেশের জয়েন্ট ওয়ার্কিং গ্রুপ অভ কাস্টমসের সভায় বাংলাদেশের এই দুই বন্দর ব্যবহার করে রেগুকার ট্রান্সশিপমেন্ট চালুর প্রস্তাব করে ভারত। নিয়মিত ট্রান্সশিপমেন্ট চালুর আগে বাংলাদেশ চারটি ট্রায়াল রান এবং ট্রান্সশিপমেন্ট ফি ও এসকর্ট চার্জ পুনঃনির্ধারণের প্রস্তাব করে।
ভারত চার্জ ও ফি অপরিবর্তিত রাখার অনুরোধ জানিয়েছে এবং আগস্ট ও চলতি সেপ্টেম্বরে চারটি ট্রায়াল রান সম্পন্ন করেছে।
সাসটেইনেবল ডেভেলপমেন্ট লিডারশিপ অ্যাওয়ার্ড পাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী
৬ সেপ্টেম্বর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে সাসটেইনেবল ডেভেলপমেন্ট লিডারশিপ অ্যাওয়ার্ডে (এসডিএলএ) ভূষিত করবে দি এনার্জি অ্যান্ড রিসোর্সেস ইন্সটিটিউট (টিইআরআই)। ২০০৫ সাল থেকে টিইআরআই এই পুরস্কার দিয়ে আসছে।
পুরস্কার পাওয়া ব্যক্তিদের মধ্যে রয়েছেন—টয়োটা মোটর করপোরেশনের সাবেক চেয়ারম্যান শোইচিরো তোয়োদা, মেক্সিকোর সাবেক প্রেসিডেন্ট এর্নেস্তো জেদিলো, যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়া রাজ্যের সাবেক গভর্নর আর্নল্ড শোয়ার্জনেগার, জাতিসংঘের সাবেক মহাসচিব বান কি-মুন, ভারতের সাবেক প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিং, মাহিন্দ্র অ্যান্ড মাহিন্দ্র লিমিটেডের চেয়ারম্যান আনন্দ মাহিন্দ্র প্রমুখ।
মঙ্গলবার (৬ সেপ্টেম্বর) নয়াদিল্লিতে পৃথক এক অনুষ্ঠানে বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে অংশগ্রহণকালে ভারতের সশস্ত্র বাহিনীর প্রাণ হারানো ও যুদ্ধাহত সৈন্যদের পরিবারের সদস্যদের ‘মুজিব স্কলারশিপ’ নামে বৃত্তি তুলে দেবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা