Home মাঠে ময়দানে বাংলাদেশ দল ফাইনালেও একই ছন্দে খেলবে

বাংলাদেশ দল ফাইনালেও একই ছন্দে খেলবে

স্পোর্টস রিপোর্টার

by Nahid Himel
ইতিহাস গড়তে চাই আর একটি মাত্র জয়। সাফ নারী চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনালে পৌঁছে গেছে বাংলাদেশ জাতীয় নারী ফুটবল দল। সোমবার শিরোপা জেতার লড়াইয়ে প্রতিপক্ষ স্বাগতিক নেপাল। এদিন কাঠমান্ডুর দশরথ রঙ্গশালা স্টেডিয়ামে ফয়সালা হবে কার হাতে যাচ্ছে সুদৃশ্য ট্রফিটি। এবার চ্যাম্পিয়ন হতে যাচ্ছে নতুন কোন দেশ। কেননা আগের পাঁচ আসরেই চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল ভারত। চার আসরে ফাইনালে উঠেও শিরোপা জিততে পারেনি নেপাল। আর ২০১৬ আসরে ফাইনালে উঠে হেরেছিল বাংলাদেশ। এবার সেই অধরা শিরোপা ধরা দেবে তৃষ্ণার্ত হাতের মুঠোয়-এমনটাই আশা করছেন মারিয়া-আঁখি-মাসুরারা। শনিবার বাংলাদেশ দল সকালে প্রায় ঘণ্টাখানেক কাঠমান্ডুর আর্মি হেডকোয়ার্টার মাঠে অনুশীলন, পরবর্তীতে হোটেলে সুইমিং করে। 
অনুশীলনে তারা রিকভারি সেশন, এ্যাক্টিভেশন এবং সর্বশেষ সেমির ম্যাচের প্লেয়িং ইলেভেন ছাড়া বাকি খেলোয়াড়রা মাঠে মডারেট সেশন করে। এছাড়াও বাংলাদেশ দল হোটেলে বিকেলে ফোম রোলার এক্সারসাইজ এবং ইয়োগা করে। ফাইনাল পর্যন্ত আসতে কোন দলকেই পাত্তা দেয়নি বাংলার বাঘিনীরা। এমনকি টুর্নামেন্টের টপ ফেভারিট ভারতকে পর্যন্ত ৩-০ গোলে উড়িয়ে দিয়েছেন সাবিনা-মনিকা-ঋতুপর্ণারা। তবে ভারত ফাইনালে না থাকলেও প্রতিপক্ষ হিসেবে নেপাল কিন্তু যথেষ্ট শক্তিশালী ও বিপজ্জনক।
  
সাফে নেপালের কাছে বাংলাদেশ ২০১৯ আসরে গ্রুপ পর্বে ০-৩, ২০১৪ আসরে সেমিফাইনালে ০-১ এবং ২০১০ আসরে সেমিফাইনালে ০-৩ গোলে হেরেছিল। তার মানে সাফে তিন ম্যাচেই নেপালের কাছে হার এবং কোন গোলও করতে পারেনি বাংলাদেশ!  তবে হতশাজনক এই পরিসংখ্যান মাথায় না রেখে সেটা এবার পাল্টে দিতে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ বাংলাদেশ। দলের সহ-অধিনায়ক ও ডিফেন্সিভ মিডফিল্ডার মারিয়া মান্দা বলেন, ‘ফাইনালে আমাদের লক্ষ্য হচ্ছে তাদের (নেপাল) সঙ্গে কম্পিটিটিভ ম্যাচ খেলব। ফাইট করব। চেষ্টা করব জেতার। ওপরওয়ালার হাতেই সব। খেলায় হার-জিতম থাকবেই। তবে আমরা আমাদের চেষ্টা চালিয়ে যাব।’

ফাইনাল পর্যন্ত আসতে এবং একটাও গোল হজম করেনি বাংলাদেশ। এজন্য কৃতিত্ব পাবেন দলের ডিফেন্ডাররা। কাজটা ঠিকঠাকই করতে পেরেছেন তারা। এ প্রসঙ্গে ডিফেন্ডার আঁখি খাতুন বলেন, ‘যে ৪টা ম্যাচ খেলেছি, লক্ষ্য যেটা ছিল, সেটাই করতে পেরেছি। আমাদের ডিফেন্স লাইন অনেক কনসেন্টট্রেট ছিলাম যে কোন গোল খাব না। এ পর্যন্ত গোলকিপারসহ ডিফেন্স লাইন পুরো মনোযোগী ছিলাম। আশাকরি আমরা আমাদের স্বাভাবিক খেলাটাই খেলতে পারব ফাইনালে।

 

আর অন্য কিছু মাথায় রাখতে চাই না।’ আরেক ডিফেন্ডার মাসুরা পারভীন বলেন, ‘শুরু থেকেই বলে আসছি আমরা কোন গোল কনসিভ করব না। সেই কথাটা আমরা রাখতে পেরেছি। আশাকরি ফাইনালেও তা রাখতে পারব।’

এ পর্যন্ত বাংলাদেশ যে ২০ গোল করেছে (৭ জন মিলে), তার ২টি করেছেন মাসুরা। এ প্রসঙ্গে একগাল হেসে তিনি বলেন, ‘যে দুটি গোল করেছি, সেগুলো করার কোন পরিকল্পনা ছিল না। আল্লাহর রহমতে গোল দুটি হয়ে গেছে। এজন্য আমার খুব ভাল লেগেছে। আমাদের টিমি মিটিংয়ে সবসময়ই বলি আমরা সর্বোচ্চ চেষ্টাই করব যেন কোন গোল কনসিভ না করি। ফাইনালে লক্ষ্য তো অবশ্যই চ্যাম্পিয়ন হওয়া। তবে নেপালও অনেক শক্তিশালী টিম। তারাও ইন্ডিয়াকে হারিয়ে এসেছে। ফাইনালে আমরা সর্বোচ্চটা দিয়েই খেলব।’      বাংলাদেশ টিম ম্যানেজমেন্ট আশাবাদী- যে ধরনের ফুটবল খেলে ফাইনাল পর্যন্ত এসেছে বাংলাদেশ, তার ধারাবাহিকতা শিরোপার মঞ্চেও ধরে রাখবে তারা। এমনই বলেছেন দলীয় ম্যানেজার আমিরুল ইসলাম বাবু, ‘বিগত সাফগুলোত বাংলাদেশ নারী ফুটবল দল যে খেলা খেলেছে, তার সঙ্গে বর্তমান সময়ে সাফে খেলা নারী ফুটবলের দলের অনেক ডিফারেন্স।এখানে আমরা বাদে অংশগ্রহণকারী বাকি দলের কোচ-কর্মকর্তা সবার চোখেই ধরা পড়েছে আমাদের দলের পরিবর্তন এবং উন্নতির চিত্র।’ বাবু আরও যোগ করেন, ‘একের পর এক ম্যাচে, ৪ ম্যাচে আমাদের মেয়েরা দুর্দান্ত খেলে এই আসরে সর্বোচ্চ ২০ গোল করেছে। ফাইনালের আগ পর্যন্ত তারা যেভাবে খেলেছে, আশাকরি ফাইনালেও তারা একইভাবে খেলে প্রথমবারের মতো চ্যাম্পিয়ন হওয়ার গৌরব অর্জন করতে পারবে। দলের সবাই সুস্থ আছে।

শুধু সিরাত জাহান স্বপ্না একটু চোট পেয়েছে। সে বিশ্রামে আছে। আশাকরি ফিট হয়ে সে ফাইনালে খেলতে পারবে। মেয়েরা ফাইনালের জন্য মেন্টালি প্রিপেয়ার্ড। তারা নিজেরাও জানে আমাদের ‘শেষ ভাল যার, সব ভাল তার’।

এই বিভাগের আরো খবর

Leave a Comment