Home রাজনীতি মাঠ পাহাড়ায় রাখবে ক্ষমতাসীনরা ৷৷ রাজপথেও বিএনপিকে ছাড় নয়

মাঠ পাহাড়ায় রাখবে ক্ষমতাসীনরা ৷৷ রাজপথেও বিএনপিকে ছাড় নয়

নিউজ ডেস্ক

by Nahid Himel

আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে রাজনীতির মাঠ কোনোভাবেই হাতছাড়া করতে চায় না আওয়ামী লীগ। চায় না বিরোধী জোট আন্দোলনের নামে রাজনৈতিক মাঠ ঘোলাটে করতে  না পারেএবং সেই ঘোলা পানিতে অপশক্তি মাছ শিকার করতে না পারে।সেজন্য ক্ষমতাসীন দল মাঠ পাহাড়ায় রাখাটাকে রাজনীতির অংশ বলে মনে করে। ফলে বিএনপিসহ বিরোধীদের নির্বাচনে চাইলেও রাজপথে ছাড় দিতে নারাজ ক্ষমতাসীনরা। একই সঙ্গে সামনে দিনগুলোতে বড় ধরনের সংঘর্ষও এড়িয়ে চলতে চায় দলটি। তারা চায় না-ভোটের আগে কোনোভাবেই অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সৃষ্টি হোক। এজন্য বিএনপির কর্মসূচি প্রতিহতে কেন্দ্রীয়ভাবে পালটা বড় কর্মসূচি না দিয়ে স্থানীয়ভাবে দল ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীদের মাঠে রাখার পরিকল্পনা রয়েছে তাদের। পাশাপাশি নেতাকর্মীদের সতর্ক করা হচ্ছে কোনো ‘উসকানিতে’ পা না দিতে। আওয়ামী লীগের নীতিনির্ধারণী নেতারা বলছেন-বিএনপির শান্তিপূর্ণ কর্মসূচিতে বাধা দেওয়া হচ্ছে না, হবেও না। কিন্তু বিএনপি চাচ্ছে নির্বাচনের আগে পরিস্থিতি অস্থিতিশীল করতে। এর মধ্য দিয়ে রাজনৈতিক ফায়দা লুটতে চায়। এটা করতে চাইলে ছাড় দেয়ার সুযোগ নেই।

জানতে চাইলে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবউল আলম হানিফ জানান,বিএনপির কোনো কর্মসূচিতে বাধা দেয়া হচ্ছে না। শান্তিপূর্ণভাবে যে কেউ চাইলে তাদের কর্মসূচি পালন করতেই পারে। কিন্তু বিএনপি চায় পায়ে পাড়া দিয়ে ঝগড়া করতে। তারা নির্বাচন সামনে রেখে আন্দোলনের নামে দেশকে অস্থিতিশীল করতে চায়। যাতে সরকারের চলমান উন্নয়ন কর্মকাণ্ড বাধাগ্রস্ত হয়। দেশের জনগণ ভালো না থাকে। তারা চায় অস্থিতিশীল পরিস্থিতি তৈরি করতে। এতে করে যদি সরকারকে ‘স্টেপ ডাউন’ করা যায় তাহলে তারা ফায়দা লুটতে পারবে। এজন্যই এসব কর্মকাণ্ড করছে।

বেশ কিছুদিন হলো আওয়ামী লীগ ও সরকারের বিভিন্ন পর্যায় থেকে বলা হয়েছিল, বিরোধীদের কর্মসূচিতে বাধা দেয়া হবে না। আওয়ামী লীগ নেতারাও তাদের বক্তব্যে প্রায়ই বিএনপি কেন আন্দোলন করতে পারে না তা নিয়ে হাস্য-কৌতুক করছেন। সম্প্রতি আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা একাধিক অনুষ্ঠানে বিরোধীদের বিনা বাধায় কর্মসূচি পালন করার সুযোগ দেওয়ার কথা বলেছেন। এও বলেছেন, বিএনপি যদি প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় ঘেরাও কর্মসূচি দেয়, তাতেও বাধা দেয়া হবে না। এছাড়া ভারত সফর-পরবর্তী সংবাদ সম্মেলনে সব দলের অংশগ্রহণে নির্বাচনের কথাও বলেছেন প্রধানমন্ত্রী।

এদিকে মাঠ দখলে নেয়ার ঘোষণা দিয়ে বেশ কিছুদিন হলো টানা কর্মসূচি নিয়ে মাঠে নেমেছে বিএনপি। ঢাকাসহ দেশের বেশ কয়েকটি স্থানে বিএনপির কর্মসূচিতে বিপুল মানুষের উপস্থিতিও দেখা যাচ্ছে। নির্বাচন ঘনিয়ে এলে রাজনীতির মাঠে এই উত্তাপ আরও বাড়বে। বিষয়টিকে হালকাভাবে নিচ্ছে না আওয়ামী লীগ। চলমান পরিস্থিতিকে সামনে রেখে সব দলকে নির্বাচনে আনতে মাঠের পরিস্থিতি কিছুটা সহনীয় রাখতে চায় তারা। তবে ক্ষমতাসীনরা একেবারে বসে থাকতে রাজি নয়। বিএনপির কর্মসূচির প্রতিবাদে মূল দলের বড় কোনো কর্মসূচি না থাকলেও ইতোমধ্যে সহযোগী সংগঠনগুলো মাঠে নেমেছে। এছাড়া ঢাকা মহানগরেও স্থানীয়ভাবে থানা বা ওয়ার্ড নেতারা পালটাপালটি কর্মসূচি পালন করছে। রাজপথ যেন হাতছাড়া না হয় সেজন্য সামনের দিনে এসব কর্মসূচি আরও বাড়ানোর পরিকল্পনা রয়েছে দলটির নেতাদের।

জানতে চাইলে ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ বজলুর রহমান আসওয়াম নিউজকে বলেন, বিএনপি তাদের রাজনৈতিক কর্মসূচি পালন করবে, আমরা আমাদের কর্মসূচি পালন করব। একইদিন কোনো কর্মসূচি থাকলে আমরা কমপক্ষে এক মাইল দূরে কর্মসূচি পালন করব। সম্প্রতি ঢাকায় দু-একটি স্থানে বিএনপি ও আওয়ামী লীগের কর্মসূচি ঘিরে সংঘর্ষ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, উত্তরার যে কর্মসূচি সেখানে কিন্তু প্রথমে তারাই (বিএনপি) আমাদের কর্মসূচির ওপর ট্রাক চালিয়ে দিয়েছিল। পরে হয়তো কেউ ক্ষুব্ধ হয়ে ঢিল ছোঁড়ে। তবে আমাদের নেতাকর্মীদের সতর্ক থাকতে বলেছি। আমরা রাজনৈতিক কর্মসূচি রাজনৈতিকভাবেই মোকাবিলা করতে চাই।

এদিকে বিএনপি-জামায়াতের ‘দেশবিরোধী নৈরাজ্যে’ প্রতিবাদে সারা দেশে  যুবলীগ ধারাবাহিকভাবে সমাবেশ ও বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করছে । এরই অংশ হিসাবে রোববার ভাটারায় ঢাকা মহানগর উত্তর যুবলীগ সমাবেশ ও বিক্ষোভ কর্মসূচির আয়োজন করে। এতে প্রধান অতিথি ছিলেন যুবলীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য তাজউদ্দিন আহমেদ। জানতে চাইলে তিনি আসওয়াম নিউজকে বলেন, যুবলীগ সভাপতি-সাধারণ সম্পাদকের নির্দেশে থানা-ওয়ার্ডে আমাদের নেতাকর্মীরা মাঠে রয়েছে।

অন্যদিকে ঢাকার বাইরেও এমপি এবং আওয়ামী লীগ নেতারাও মাঠে রয়েছেন। ইতোমধ্যে কয়েক স্থানে বিএনপির কর্মসূচিতে বাধা দেয়ার ঘটনা ঘটেছে। জানতে চাইলে সিরাজগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আবদুস সামাদ তালুকদার  বলেন, গণতান্ত্রিক আন্দোলন করলে আমরা স্বাগত জানাব। কিন্তু তারা আবার জ্বালাও-পোড়াও, সহিংস আন্দোলনের দিকে হাঁটছে। আমরা এর বিরুদ্ধে জনমত গঠন করছি। তারা সহিংসতার পথে হাঁটলেই জনগণকে সঙ্গে নিয়ে প্রতিরোধ গড়ে তুলব। যেখানেই সন্ত্রাস-সহিংসতা সেখানেই প্রতিরোধ-প্রতিবাদ।

 

facebook sharing button
messenger sharing button
whatsapp sharing button
twitter sharing button
linkedin sharing button

এই বিভাগের আরো খবর

Leave a Comment