Home মত-দ্বিমত মসিউর রহমান রাঙ্গা পাল্টা চিঠি দিলেন স্পিকারকে

মসিউর রহমান রাঙ্গা পাল্টা চিঠি দিলেন স্পিকারকে

নিউজ ডেস্ক

by Nahid Himel

বিরোধীদলীয় নেতার পদ থেকে রওশন এরশাদকে সরাতে জাতীয় পার্টির সংসদীয় দলের চিঠি প্রত্যাহারের আবেদন করেছেন সংসদে বিরোধীদলীয় চিফ হুইপ মসিউর রহমান রাঙ্গা। স্পিকারকে দেয়া পাল্টা চিঠিতে তিনি সংসদীয় দলের সিদ্ধান্ত যথাযথ হয়নি বলে দাবি করেছেন।

গতকাল মঙ্গলবার বিকেলে স্পিকারের সংসদ ভবনস্থ কার্যালয়ে দেখা করেন জাতীয় পার্টির সকল পদ থেকে অব্যাহতি পাওয়া বিরোধীদলীয় চিফ হুইপ মসিউর রহমান রাঙ্গা এমপি। তিনি বেশকিছু সময় স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সঙ্গে বৈঠক কর

এ সময় বিরোধীদলীয় নেতা রওশন এরশাদের রাজনৈতিক সচিব গোলাম মসীহ উপস্থিত ছিলেন।

বৈঠক থেকে বের হয়ে মসিউর রহমান রাঙ্গা সাংবাদিকদের বলেন, ‘সংসদীয় দলের সিদ্ধান্তের বিষয়ে যে চিঠি আমি দিয়েছিলাম, সেটা আমি প্রত্যাহার করতে চাই। বিষয়টি স্পিকার মহোদয়কে জানিয়েছি। বিরোধীদলীয় নেতাকে সরাতে চিঠি দেয়ার প্রক্রিয়াটা যে ঠিক হয়নি, সেটা আমি সংবাদ সম্মেলনে বলেছিলাম। যেহেতু প্রক্রিয়া ঠিক হয়নি, সেহেতু আমি আমার সই করা চিঠিটা প্রত্যাহার করার জন্য বলেছি। স্পিকার বলেছেন আইনি দিক বিবেচনা করে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবেন। আমি দলের গঠনতন্ত্র স্পিকারকে দিয়েছি। ’

বিরোধীদলীয় চিফ হুইপ বলেন, ‘একই সময় জাতীয় পার্টির দুটি গঠনতন্ত্র। এক জায়গায় বলা আছে, প্রধান পৃষ্ঠপোষক সব কাজ করতে পারবেন। চেয়ারম্যান ও মহাসচিব তার সঙ্গে পরামর্শ করবেন। আরেকটায় প্রধান পৃষ্ঠপোষকের কোনো খবরই নেই। গঠনতন্ত্র নকল করে আরেকটা করা হয়েছে। ’

এক প্রশ্নের জবাবে রাঙ্গা বলেন, ‘একটা দলের যখন মিটিং হয়, তখন সভাপতিত্ব যিনি করেন তিনি চিঠি দেবেন। উনি (জি এম কাদের) সেটা না করে আমাকে দিয়ে করেছেন। চিফ হুইপের এটা দেয়ার কথা না। আমি যে মিটিং করেছি সেটা ৩১ আগস্টের। এমপিরা করেছেন পহেলা সেপ্টেম্বর। এই তারিখের মিটিংয়ে আমার কাছ থেকে সই করিয়ে নেয়া হয়েছে। ’

তিনি আরো বলেন, ‘স্পিকারকে বলেছি, এজেন্ডা ছাড়া মিটিং দিয়ে বিরোধী দলের নেতাকে বাদ দিয়ে উপনেতা নেতা হয়ে, তবে এটা দুঃখজনক। বৈঠকের তো এজেন্ডা থাকতে হবে। স্পিকার বলেছেন, আমি চিঠি দিতেই পারি। উনি দেখবেন। ’

এখন রওশনের সঙ্গে আছেন কি না জানতে চাইলে সংসদ সদস্য রাঙ্গা বলেন, ‘আমি দলের সঙ্গে আছি। দল একটাই থাকবে। এখনো চাই ওনারা বসে ঠিক করুন। দলে আমাদের একসঙ্গে থাকতে হবে। ’

উল্লেখ্য, গত ৩০ আগস্ট রওশন এরশাদের নামে একটি সংবাদ বিজ্ঞপ্তি গণমাধ্যমে পাঠানো হয়। ওই বিজ্ঞপ্তির সঙ্গে বিরোধীদলীয় নেতার কার্যালয়ের প্যাডে রওশনের রাজনৈতিক সচিব গোলাম মসীহর নামে একটি চিঠিও ছিল। তিন পৃষ্ঠার ওই বিজ্ঞপ্তিতে দলের ভেতরকার রাজনীতির নানা বিষয় বর্ণনা করে আগামী ২৬ নভেম্বর দলের সম্মেলন আহ্বান করেন রওশন। নিজেকে সম্মেলন প্রস্তুতি কমিটির আহ্বায়ক করে আট সদস্যের একটি কমিটিরও ঘোষণা দেন।

রওশনের আচমকা এই ঘোষণায় জাতীয় পার্টির শীর্ষ নেতৃত্ব প্রথমে কোনো মন্তব্য না করলেও পরে দলের চেয়ারম্যানের প্রেস সচিব খন্দকার দেলোয়ার জালালী একটি বিবৃতি দিয়ে বলেন, কাউন্সিল ডাকার এখতিয়ার রওশনের নেই। তার পদক্ষেপ ‘অবৈধ’।

রওশনের ওই পদক্ষেপের পরদিনই তাঁকে সংসদে বিরোধী দলের নেতার পদ থেকে সরানোর সিদ্ধান্ত নেন দলটির সংসদ সদস্যরা। দলের মহাসচিব মুজিবুল হক চুন্নু গত ১ সেপ্টেম্বর তাদের সিদ্ধান্ত জানান স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরীকে। পরে দলের প্রধান হুইপ মসিউর রহমান রাঙ্গাও চিঠি দেন স্পিকারকে। গত ১৪ সেপ্টেম্বর দলের সব পদ থেকে মসিউর রহমানকে অব্যাহতি দেন জাপা চেয়ারম্যান জি এম কাদের।

রাঙ্গার দাবি, রওশন এরশাদকে সরিয়ে জি এম কাদেরকে সংসদের বিরোধীদলীয় নেতা করার বিষয়ে যে চিঠি দেয়া হয়েছে, তার প্রক্রিয়া সঠিক ছিল না। একটি টেলিভিশনে এ নিয়ে কথা বলায় তাকে বহিষ্কার করা হয়েছে বলে মনে করছেন মসিউর রহমান রাঙ্গা।

এই বিভাগের আরো খবর

Leave a Comment