আজই সাংগঠনিক শাস্তি পেতে পারে রাজশাহী জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি সাকিবুল ইসলাম ও সাধারণ সম্পাদক জাকির হোসেন। দুজনকেই তাঁদের পদ থেকে অব্যাহতি দেয়া হতে পারে। এ দুই নেতার বিরুদ্ধে অপকর্মের অভিযোগে গঠিত তদন্ত কমিটির প্রতিবেদনের ভিত্তিতে এ ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে। ছাত্রলীগের একাধিক সূত্র বিষয়টি নিশ্চিত করেছে।
গতকাল শনিবার রাতে ছাত্রলীগের সভাপতি আল নাহিয়ান খান জয় বলেন, ‘তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন আমাদের হাতে এসেছে। আমরা আজই বসে এগুলো দেখব। অভিযোগের সত্যতা পেলে অবশ্যই সাংগঠনিক শাস্তি দেয়া হবে। আমরা কোনো অপরাধীকেই ছাড় দেব না। ’
ছাত্রলীগের একাধিক সূত্র জানায়, গতকাল কেন্দ্রীয় দপ্তরে ছাত্রলীগের তদন্ত কমিটির তিন সদস্য তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেন। প্রতিবেদনে জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি সাকিবুল ইসলামের বিরুদ্ধে সংগঠনের ক্ষমতা ব্যবহার করে নারীদের অনৈতিক প্রস্তাব দেয়ার অভিযোগের সত্যতা পেয়েছে তদন্ত কমিটি। সাধারণ সম্পাদক জাকির হোসেনের বিরুদ্ধে মাদক সেবনের অভিযোগের সত্যতা মিলেছে বলে প্রতিবেদনে উঠে এসেছে।
গত ১৪ সেপ্টেম্বর সাকিবুল ইসলামের সঙ্গে সংগঠনের একজন নেত্রীর মোবাইল ফোনে কথোপকথনের একটি রেকর্ড ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ে। সেখানে সাকিবুল ইসলাম ওই নারী নেত্রীকে অনৈতিক নানা প্রস্তাব দেন। সাকিবুল একসময় ছাত্রদল ও শিবিরের সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিলেন বলেও একাধিক গণমাধ্যমে সংবাদ প্রচার হয়। এ ছাড়া সম্প্রতি জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক জাকির হোসেনের ফেনসিডিল পানের একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। এসব ঘটনায় ছাত্রলীগের বিরুদ্ধে ব্যাপক সমালোচনা শুরু হয়।
রাজশাহী জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের অপকর্মের অভিযোগ তদন্তে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের পক্ষ থেকে তিন সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। তদন্ত কমিটিতে ছিলেন ছাত্রলীগের গণযোগাযোগ উন্নয়নবিষয়ক সম্পাদক শেখ শামীম তূর্য, আইনবিষয়ক উপসম্পাদক আপন দাস ও সহসম্পাদক তানভীর আব্দুল্লাহ। অভিযোগের তদন্ত করতে গত ১৯ সেপ্টেম্বর রাজশাহী যান তদন্ত কমিটির তিন সদস্য।
জানতে চাইলে তদন্ত কমিটির সদস্য শেখ শামীম তূর্য বলেন, ‘আমরা সততার সঙ্গে ঘটনাটির তদন্ত করেছি। তদন্ত প্রতিবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে দু-এক দিনের মধ্যেই সিদ্ধান্ত নেবে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ। ’
ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় একাধিক সূত্র জানায়, তদন্ত প্রতিবেদনে জেলা ছাত্রলীগের দুই শীর্ষস্থানীয় নেতার নৈতিক স্খলনের অপরাধের সত্যতার কথা তুলে ধরা হয়েছে। তবে সাকিবুল ইসলামের বিরুদ্ধে ছাত্রদল ও শিবির করার কোনো প্রমাণ পাওয়া যায়নি বলে জানানো হয়েছে।
প্রসঙ্গত, গত ১৯ সেপ্টেম্বর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে দলীয় কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে ছাত্রলীগ সভাপতি আল নাহিয়ান খান জয় ও সাধারণ সম্পাদক লেখক ভট্টাচার্যকে বিতর্কিত নেতাদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নিতে নির্দেশনা দেন।