দর্শক সারিতে বসে ছিলেন দুই ছোটভাই সেলিম ওসমান ও শামীম ওসমান। আকস্মিক চোখের সানগ্লাস কিছুটা তুলে টিস্যু দিয়ে চোখ মুছতে দেখা গেল তাদেরই একজনকে। ঠিক সেসময় প্রয়াত বড় ভাইয়ের নামে সেতু উদ্বোধন করছিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
এসময় অঝোরে কান্না করছিলেন ওসমান পরিবারের ছোট সন্তান ও নারায়ণগঞ্জ আওয়ামী লীগ নেতা শামীম ওসমান।
অনুষ্ঠানটি সরাসরি দেখার বিশাল স্ক্রিনে সেই দৃশ্য ধরা পড়তেই অতিথিরা আর মিডিয়া কর্মীরা মুহূর্তেই যেন সবাই সেদিকে ঘুরে গেল। তবে কারোই বুঝতে বাকি রইলো না শামীম ওসমানের এই অঝোর কান্নার কারণ।বীর মুক্তিযোদ্ধা নাসিম ওসমান তৃতীয় শীতলক্ষ্যা সেতুটি উদ্বোধনকালে নারায়ণগঞ্জের ঐতিহ্যবাহী ওসমান পরিবারের প্রয়াত সদস্যদের একে-একে নাম ধরে যখন তাদের অনবদ্য অবদান স্মরণ করছিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা- তখন সেগুলো শুনে আবেগে আপ্লুত হয়ে চোখের নোনাজল ঝরাচ্ছিলেন এমপি শামীম ওসমান। যিনি ওই পরিবারের সন্তান।
সোমবার (১০ অক্টোবর) দুপুরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনের প্রয়াত এমপি নাসিম ওসমানের নামে তৃতীয় শীতলক্ষ্যা সেতু উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে ঐতিহ্যবাহী ওসমান পরিবারকে কৃতজ্ঞচিত্তে স্মরণ করেন।
প্রধানমন্ত্রী ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে ঐতিহ্যবাহী ওসমান পরিবারের শামীম ওসমানের দাদা প্রয়াত খান সাহেব ওসমান আলী, বাবা প্রয়াত একেএম সামসুজ্জোহা ও বড়ভাই প্রয়াত নাসিম ওসমানের ত্যাগ ও অবদান নিয়ে স্মৃতিচারণ করে বলেন, নাসিম ওসমান তার ভাই শেখ কামালের বন্ধু ছিলেন। ৭৫-এর ১৫ আগস্ট কালরাত্রির আগের দিন ১৪ আগস্ট রাতে নাসিম ওসমানের বিয়েতে গিয়েছিলেন শেখ কামাল। পরের দিন নবপরিণীতা স্ত্রীকে রেখেই হত্যার প্রতিবাদ জানাতে প্রতিরোধ যুদ্ধে গিয়েছিলেন নাসিম ওসমান। তার বাবা প্রয়াত একেএম সামসুজ্জোহা ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর ধানমন্ডিতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পরিবারকে মুক্ত করতে গিয়ে গুলি খেয়েছিলেন এবং ১৫ আগস্টের পর গ্রেপ্তার হয়ে মুক্ত হবার পরপরই দিল্লিতে গিয়েছিলেন শেখ হাসিনা ও শেখ রেহানাকে দেখতে।
প্রধানমন্ত্রীর এসব স্মৃতিচারণ শুনেই আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েন শামীম ওসমান।