‘তলাবিহীন ঝুড়ির’ তকমা পাওয়া বাংলাদেশ এখন বিশ্বের ৪৬তম বড় অর্থনীতির দেশ। গেল এক যুগে বিনিয়োগ পরিবেশেও এসেছে ব্যাপক পরিবর্তন। সরকারের নীতি সহায়তায় ভর করে দেশের উদ্যোক্তারা গড়ে তুলেছেন রপ্তানিমুখী, বিশ্বমানের বড় বড় শিল্প কারখানা। প্রবাসী ও বিদেশি বিনিয়োগ আকর্ষণে, বাংলাদেশের অর্থনীতির এই কাঠামোগত পরিবর্তন এবং সক্ষমতার কথা বিশ্বে ছড়িয়ে দেওয়া প্রয়োজন বলে মনে করছেন ব্যবসায়ী নেতারা।
স্বাধীন বাংলাদেশের প্রথম বাজেটের আকার ছিল ৭৮৬ কোটি টাকা। আর চলতি ২০২২-২৩ অর্থবছরের বাজেট পাস হয়েছে ৬ লাখ ৭৮ হাজার ৬৪ কোটি টাকার।
বিজয়ের ৫০ বছর পরে ২০২১-২২ অর্থবছর শেষে দেশে মাথাপিছু আয় দাঁড়িয়েছে ২ হাজার ৮২৪ মার্কিন ডলার। এতে ক্রয়ক্ষমতা বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে গড়ে উঠেছে সাড়ে ১৬ কোটির বিশাল ভোক্তা বাজার। যা বিনিয়োগকারীদের জন্য ব্যাপক সম্ভাবনার ক্ষেত্র প্রস্তুত করেছে।
এফবিসিসিআইয়ের সহযোগিতায় যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্ক ম্যারিয়ট মার্কুইজে অনুষ্ঠিত হওয়া তিন দিনব্যাপী বাংলাদেশি ইমিগ্রান্ড ডে অ্যান্ড ট্রেড ফেয়ার-২০২২ এ অংশ নিয়ে এই ব্যবসায়ী নেতা জানান, বর্তমান সরকার প্রবাসী ও বিদেশি বিনিয়োগ উৎসাহিত করতে নীতিতে ব্যাপক পরিবর্তন এনেছে।
এফবিসিসিআই সাবেক সভাপতি শফিউল ইসলাম মহিউদ্দীন এমপি বলেন, আমাদের প্রধানমন্ত্রী তার ভিশনারি নেতৃত্বে অনেকগুলো পদক্ষেপ নিয়েছিলেন। ব্যবসা সহায়ক নীতি এবং আমাদের উদ্যোক্তারা এই অসম্ভবকে সম্ভব করেছেন।
বাংলাদেশের অর্থনীতির সক্ষমতা জানাতে বিদেশে নিয়মিত সভা, সেমিনার ও মেলা আয়োজন করা দরকার বলে মনে করেন ট্রেড ফেয়ারে আমন্ত্রিত আরেকজন ব্যবসায়ী নেতা।
বাংলাদেশ চেম্বার অব ইন্ডাস্ট্রিজের সভাপতি আনোয়ারুল আলম চৌধুরী পারভেজ বলেন, বাংলাদেশকে প্রোমোট করতে চাই, আমরা দেখাতে চাই যে আমাদের সক্ষমতা কোথায় কোথায় বৃদ্ধি পেয়েছে। ফলে তারা আত্মবিশ্বাস পাবেন।
তবে বিদেশি বিনিয়োগকারীদের ধারণা বাংলাদেশে বিনিয়োগ করে সহজে টাকা ফেরত আনা যায় না। এমন ভ্রান্ত ধারণা বদলাতে উভয় দেশের উদ্যোক্তা পর্যায়ে নিয়মিত বৈঠকের প্রয়োজনীয়তার কথা তুলে ধরলেন বাংলাদেশি ইমিগ্রান্ট ডে অ্যান্ড ট্রেড ফেয়ারের কনভেনার।
বাংলাদেশি ইমিগ্রান্ট ডে অ্যান্ড ট্রেড ফেয়ার-২০২২ কনভেনার ড. জিয়াউদ্দিন আহমেদ বলেন, বাংলাদেশে যে সুযোগ আছে, এটা তাদেরকে জানানো। এটা ওদের জানানোই হয় নাই। ওরা জানেই না। স্টেপগুলো যদি স্পষ্ট করতে পারি, তাহলে এখানকার যারা ব্যবসা করতে চাচ্ছেন তারা বাংলাদেশে যাবেন।
নিম্নমুখী বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ শক্তিশালী করতে বৈধ পথে রেমিট্যান্সের পাশাপাশি ব্যাপক বিদেশি বিনিয়োগ প্রয়োজন বলে মনে করছেন অর্থনীতিবিদরা।