আমি প্রবাসীর সাথে বিএমইটির ইন্টিগ্রেশন সরকারি-বেসরকারি অংশীদারিত্বের এক অনুসরণীয় দৃষ্টান্ত।“প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের নেতৃত্বে আমি প্রবাসীর সাথে সরকারি সুরক্ষা, নির্বাচন কমিশন এবং পাসপোর্ট অধিদপ্তরের ইন্টিগেশনের মতো প্রাইভেট-পাবলিক কলাবরেশনের উদাহরণ দ্রুত বাংলাদেশকে সামনের দিকে এগিয়ে নিয়ে যেতে পারবে”।
আজ ঢাকার দি ওয়েস্টিন হোটেলে জনশক্তি ও কর্মসংস্থান ব্যুরো (বিএমইটি) কর্তৃক আয়োজিত ডিজিটাল পদ্ধতিতে ইমিগ্রেশন ক্লিয়ারেন্স প্রক্রিয়ার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে এমনই অভিমত তুলে ধরেন আইসিটি ডিভিশনের মাননীয় প্রতিমন্ত্রী জনাব জুনায়েদ আহমেদ পলক।
বক্তব্যের শুরুতে প্রতিমন্ত্রী বলেন, আমরা একটি স্মার্ট সার্ভিস আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন করতে যাচ্ছি এবং ইতিমধ্যে আমি প্রবাসী অ্যাপটি কার্যকর হয়েছে।‘বিএমইটির ডিজিটাল পরিষেবাগুলো পেতে এখন পর্যন্ত আমি প্রবাসী অ্যাপে প্রায় ২০ লক্ষ মানুষ নিবন্ধন করেছে। ব্যাপারটি ভীষণ গর্বের বলে অভিমত প্রতিমন্ত্রীর। এমন স্মার্ট একটি প্রকল্প নিয়ে কাজ করায় তিনি প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়কে ধন্যবাদ জানান।
আজকের অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী ইমরান আহমদ এমপি। মাননীয় মন্ত্রী তাঁর বক্তব্যে সরকারিবেসরকারি অংশীদারিত্বে উভয়পক্ষের সমান দায়িত্ব ও অংশীদারিত্বের উপর গুরুত্ব আরোপ করে বলেন, ‘যখনই আমরা পাবলিক-প্রাইভেট পার্টনারশিপের কথা বলি, সেটাকে অংশীদারত্বই হতে হয়। সরকার সুযোগ দেয় কারণ তার সেবাটি প্রয়োজন। বিএমইটির একার পক্ষে এটা করা সম্ভব নয়। সেটি করেও থেমে থাকা যাবে না। আর এভাবেই সামনের দিকে এগিয়ে যেতে হবে। আমরা সব সময় একজোট হয়ে কাজ করি। আমার কাজ কর্মীদের বিদেশ পাঠানো। এখন আর এনালগ পদ্ধতিতে পাঠানো যাবে না, ডিজিটাল পদ্ধতিতে পাঠাতে হবে।
‘ইতিমধ্যে অংশীদারিত্বের ফলাফলও পাওয়া যাচ্ছে যার এটি উদাহরণ হল বিএমইটি ডাটাবেজ। ২০১৩ সালে সরকার প্রথম বিএমইটি’র জন্য ডাটাবেজ তৈরির সিদ্ধান্ত নিলেও তা মূলত আলোর মুখ দেখেছে আমি প্রবাসী যুক্ত হবার পর। সবচেয়ে বড় ব্যাপার হচ্ছে, অ্যাপটি তৈরিতে সার্ভিস চার্জ ভিত্তিক মডেল অনুসরণ করায় এতে সরকারের কোন ব্যয় ধরণের হয়নি। এছাড়াও মাননীয় মন্ত্রী জনবান্ধব সেবা প্রদানে বিভিন্ন প্রক্রিয়ায় বিদ্যমান হিডেন চার্জ এড়াতে বিদ্যমান প্রক্রিয়াটিকে আরও সহজীকরণে নির্দেশনা প্রদান করেন। তিনি আশা প্রকাশ করেন যে, ডিজিটালাইজেশন নিয়োগ প্রক্রিয়ায় গতির সঞ্চার করবে।
অনুষ্ঠানের সভাপতিত্বে ছিলেন প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের সচিব ডঃ আহমেদ মুনিরুস সালেহীন। তিনি মন্ত্রণালয়ের কাজে প্রতিনিয়ত স্বচ্ছতা বৃদ্ধি এবং অভিবাসী কর্মীদের জন্য বন্ধুত্বপূর্ণ সেবা প্রদানের জন্য ক্রমাগত প্রচেষ্টার কথা উল্লেখ করেন।
অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন বিএমইটির মহাপরিচালক মোঃ শহীদুল আলম, এনডিসি। পর্যায়ক্রমে বিএমইটর সকল পরিষেবা ডিজিটাল করবার পরিকল্পনা জানিয়ে তিন বলেন, ‘(ডিজিটালাইজেশনের ফলে) সেবা সহজ হচ্ছে, খরচ কমছে, ভিজিট কমছে এবং সহজেই যাচাইযোগ্য হচ্ছে।
আমি প্রবাসী লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক তারিক ই হক তার বক্তব্যে আমি প্রবাসী অ্যাপ এবং ওয়েব পোর্টালের বিভিন্ন ফিচার এবং তার সাফল্য তুলে ধরেন। আমি প্রবাসী থেকে প্রাপ্ত বিশাল ডেটা কিভাবে বাংলাদেশ সরকারকে অভিবাসন খাতে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নিতে সাহায্য করছে তার সবিস্তারিত তথ্য তার আলোচনায় উঠে আসে। উল্লেখ্য যে, বিদেশগামী কর্মীদের সহায়তার জন্য সম্পূর্ণভাবে বাংলাদেশি প্রকৌশলী এবং প্রযুক্তিবিদদের দিয়ে তৈরি বিশ্বে এমন অ্যাপ এটাই প্রথম।
এছাড়াও অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন ব্র্যাকের নির্বাহী পরিচালক জনাব আসিফ সালেহ এবং বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অফ ইন্টারন্যাশনাল রিক্রুটিং এজেন্সিস (বায়রা)-এর নবনির্বাচিত সভাপতি জনাব মোহাম্মাদ আবুল বাশার। এছাড়াও উক্ত অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশে নিযুক্ত সৌদি আরবের রাষ্ট্রদূত এসসা ইউসেফ এসসা আল দুহাইলান, বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থার প্রতিনিধি, রিক্রুটিং এজেন্সিসমূহের প্রতিনিধিগণ, জনপ্রতিনিধি প্রমুখ।
বিদেশগামী কর্মীদের সর্বশেষ ধাপ, জনশক্তি ও কর্মসংস্থান ব্যুরো (বিএমইটি) কর্তৃক প্রদত্ত বহির্গমন ছাড়পত্র বা ইমিগ্রেশন ক্লিয়ারেন্স এখন ডিজিটাল পদ্ধতিতেই করা সম্ভব হবে। এখন একজন বিদেশগামী কর্মী স্বল্প সময়ে, কম অর্থ ব্যয়ে এবং কোন ধরণের ভোগান্তি ছাড়া অনলাইনেই ক্লিয়ারেন্সের জন্য আবেদন এবং বিএমইটি স্মার্ট কার্ড গ্রহণ করতে পারবেন।
সম্পূর্ণ ডিজিটাল প্রক্রিয়াটি প্রস্তুত করেছে বিএমইটি-র ডিজিটাল সার্ভিস প্রোভাইডার আমি প্রবাসী লিমিটেড। ক্লিয়ারেন্স স্মার্ট কার্ড এখন সত্যিকার অর্থেই “স্মার্ট”। QR Code ভিত্তিক এই কার্ডটি খুব সহজে চাইলে যে কেউ পৃথিবীর যেকোন প্রান্ত থেকে যাচাই করতে পারবেন।
ইতিমধ্যে আমি প্রবাসী অ্যাপের মাধ্যমে বিএমইটি ডাটাবেজে নিবন্ধন, ট্রেনিং কোর্সে আবেদন, ট্রেনিং ও প্রি-ডিপার্চার ওরিয়েন্টেশন (পিডিও) সেশন বুকিং, ট্রেনিং ও পিডিও সার্টিফিকেট ডিজিটালাইজেশনে ভূমিকা রেখেছে। এছাড়াও প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় নিবন্ধিত বিদেশগামী কর্মীদের বিএমইটি নম্বর ‘সুরক্ষা’য় প্রেরণ করে কর্মীদের অগ্রাধিকার ভিত্তিতে ভ্যাকসিন প্রদানের প্রস্তাব রাখলে মন্ত্রণালয়ের অনুরোধে, পরিস্থিতির গুরুত্ব অনুধাবন করে মহামারীর মাঝে আমি প্রবাসী দশ লক্ষেরও বেশি নিবন্ধন সম্পন্ন করেছে। এবং এতেও সরকারের কোন অতিরিক্ত অর্থ খরচ করতে হয়নি।