বাংলাদেশ সরকার যদি তিস্তা ব্যারাজ প্রকল্প বাস্তবায়ন করতে চায়, তবে চীন সব ধরনের সহায়তা দেবে উল্লেখ করে ঢাকায় নিযুক্ত দেশটির রাষ্ট্রদূত লি জিমিং বলেছেন, এটি একটি প্রকল্প যেটি চীন অত্যন্ত সক্রিয়ভাবে বিবেচনা করছে। এটি বাস্তবায়নে হয়তো চীন বাধা নয়। যদি বাংলাদেশ সরকার সত্যিকারভাবে এটি করতে চায়, তবে চীন এটি বাস্তবায়ন করতে সহায়তা করবে।
গতকাল শনিবার স্থানীয় একটি হোটেলে বাংলাদেশ-চায়না সিল্ক ফোরাম আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন। রাষ্ট্রদূত বলেন, প্রকল্পের ফিজিবিলিটি স্টাডি অনুযায়ী সীমান্তের কাছে কোনো ধরনের বাঁধ নির্মাণ করা হবে না এবং বিপরীত স্রোতের কারণে উজানের দেশের জন্য এটি ক্ষতিকর নয়। এই প্রকল্প উজানের দেশের জন্য কোনো ধরনের ক্ষতিকর প্রভাব ফেলবে না।
তিস্তা নদীর উৎসে বাঁধ দিয়ে পানি সরবরাহ বাধাগ্রস্ত করছে চীন, এমন মিডিয়া রিপোর্টের প্রতি মনোযোগ
আকর্ষণ করা হলে তিনি বলেন, এর উৎস সিকিমে ভারতের একটি রাজ্য), চীনে নয়। এটি সম্পূর্ণ বানোয়াট রিপোর্ট।
বিভিন্ন জায়গা থেকে তথ্য পাওয়া যাচ্ছে জানিয়ে রাষ্ট্রদূত বলেন, ‘এ ক্ষেত্রে বাংলাদেশ সরকারের ওপর কিছু বহিঃচাপ আছে। আমি সঠিকভাবে জানি না কোথা থেকে চাপ আছে এবং কেন। আমাকে কয়েকজন বলেছেন এই প্রকল্পের বিষয়ে যেন আমি সাবধানে থাকি। কারণ এর স্পর্শকাতরতা আছে। বিশেষ করে ভূ-রাজনৈতিক।’
দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে রাষ্ট্রদূতকে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, কোনো দেশের আভ্যন্তরীণ বিষয়ে নাক গলায় না চীন। আমার মত হচ্ছে উন্নয়নের জন্য শান্তি ও স্থিতিশীলতা দরকার। আমরা আশা করি, এদেশে সামাজিক ও রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা বজায় থাকবে যাতে আর্থ-সামাজিক উন্নতি অব্যাহত থাকে।
\হ
রোহিঙ্গা ইস্যুতে ‘শঙ্কা’
এদিকে, শনিবার রাজধানীর একটি হোটেলে চীনের কমিউনিস্ট পার্টির ২০তম কংগ্রেস উপলক্ষে আয়োজিত এক সেমিনারে রাষ্ট্রদূত লি জি?মিং বলেন, সঠিক সময়ে রোহিঙ্গা সংকটের সমাধান না করতে পারলে আঞ্চলিক সংকট তৈরির আশঙ্কা দেখছে চীন। সেজন্য এ সংকট সমাধানে বাংলাদেশ ও মিয়ানমারকে নিয়ে কাজ করছে চীন । এই সংকটের মধ্যস্থতা করছে চীন। চীনের প্রধান লক্ষ্য রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন। সেজন্য চীন এ সমস্যা সমাধানে বাংলাদেশ ও মিয়ানমারের সঙ্গে কাজ করছে।
অনেকে রোহিঙ্গাদের দ্রুত প্রত্যাবাসন চায় না বলেও অভিযোগ করে রাষ্ট্রদূত বলেন, কো?নো কোনো পক্ষ রোহিঙ্গাদের প্রত?্যাবর্তন চায় না। এখানে অনেক পক্ষ জড়িয়ে গেছে। তারা গঠনমূলকভাবে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনের পক্ষে নয়। চীন এ বিষয়ে বাংলাদেশ সরকার এবং মিয়ানমারের সঙ্গে কাজ করছে। চীন এ বিষয়ে সবাইকে জানিয়ে কাজ করার পক্ষে নয়। চীন নীরবে কাজ করে যাচ্ছে। আমরা চাইব, রোহিঙ্গারা যেন নিরাপদ এবং স্বেচ্ছায় তাদের নিজ ভূমে ফিরে যেতে পারে।