এ ছাড়া বিএনপির একাধিক নেতার প্রচার-প্রচারণা থাকলেও দলের নেতারা বলেছেন, এই নির্বাচন কমিশনের অধীনে বিএনপির নির্বাচনে না যাওয়ার সিদ্ধান্ত আছে। তাই তাঁরা ঘটনা পর্যবেক্ষণ করছেন। আর দলের সিদ্ধান্ত অমান্য করে কেউ ভোটে গেলে দল প্রয়োজন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেবে।
২৭ ডিসেম্বর ভোট হতে পারে—আগেই এমন খবর ছিল। তবে সোমবার আনুষ্ঠানিকভাবে তফসিল ঘোষণা করার পর নির্বাচন ঘিরে চায়ের দোকান, হাটবাজার ও বিভিন্ন পাড়া-মহল্লায় আলোচনা শুরু হয়েছে। নির্বাচনে মোট ভোটার চার লাখ ৩১ হাজার ৪৭১ জন। এর মধ্যে পুরুষ দুই লাখ ১৬ হাজার ৫৩৮ জন। মহিলা দুই লাখ ১৪ হাজার ৯৩২ জন।
রংপুর মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সম্ভাব্য মেয়র পদপ্রার্থী তুষার কান্তি মণ্ডল বলেন, ‘২৭ ডিসেম্বর নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ হবে। বর্তমান মেয়রের সময় এই সিটি করপোরেশনে উন্নয়ন হয়নি। আগামী নির্বাচনে আমাকে দলীয় মনোনয়ন দিলে জয় নিশ্চিত করবে জনগণ। সিটি করপোরেশনকে আলাদাভাবে ঢেলে সাজানো হবে। ’
এ ছাড়া মেয়র পদে সম্ভাব্য দলীয় প্রার্থী প্রচারণা চালাচ্ছেন রংপুর মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি সফিয়ার রহমান সফি, মহানগর স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি আতাউর জামান বাবু এবং রংপুর জেলা মোটর শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক এম এ মজিদ। এরই মধ্যে তাঁরা নগরীতে ব্যানার, পোস্টার, ফেস্টুন ও স্টিকার লাগিয়েছেন। পাড়া-মহল্লায় সভা-সমাবেশ করছেন।
বর্তমান সিটি মেয়র মোস্তাফিজার রহমান মোস্তফা বলেন, সিটি নির্বাচনে জাতীয় পার্টির প্রার্থী হিসেবে তাঁকে মনোনয়ন দিয়েছে দল। এরই মধ্যে সিটির উন্নয়নকাজের ৮৫ শতাংশ তিনি সম্পন্ন করেছেন। নির্বাচনে জয়লাভ করলে বাকি কাজ সম্পন্ন করবেন।
বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতারা বর্তমান সরকার ও নির্বাচন কমিশনের অধীনে কোনো নির্বাচনে অংশ না নেওয়ার ঘোষণা দিয়ে এলেও রংপুর সিটি নির্বাচনে কিছু নেতার প্রতিদ্বন্দ্বিতার আভাস পাওয়া গেছে। কেউ কেউ প্রচারণাও চালাচ্ছেন।
বিএনপির উল্লেখযোগ্য নেতারা হলেন রংপুর মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক সামসুজ্জামান সামু, সাবেক সহসভাপতি কাওছার জামান বাবলা, সাবেক সাধারণ সম্পাদক শহিদুল ইসলাম মিজু এবং জেলা যুবদলের সভাপতি নাজমুল আলম নাজু।
সামসুজ্জামান সামু বলেন, অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের পরিবেশ সৃষ্টি হলে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবেন। তবে এখন তাঁরা পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছেন। আর এই নির্বাচন কমিশনের অধীনে নির্বাচনে না যাওয়ার দলীয় সিদ্ধান্ত তো আছেই।
এর বাইরে বাসদ থেকে আনোয়ার হোসেন বাবলু ও আব্দুল কুদ্দুস, ওয়ার্কার্স পার্টি থেকে কাজী মাজহারুল ইসলাম লিটন, ইসলামী আন্দোলন থেকে এ টি এম গোলাম মোস্তফা বাবু, খেলাফত মজলিস থেকে তৌহিদুর রহমান রাজু, এনপিপি থেকে শফিকুল ইসলাম রাকু প্রার্থী হতে পারেন বলে দলীয় সূত্রে জানা গেছে। জাসদ, বাংলাদেশ কংগ্রেস, কল্যাণ পার্টি, জাকের পার্টিসহ আরো কিছু রাজনৈতিক দলও প্রার্থী দিতে পারে বলে জানা গেছে।
জাপার একটি সূত্রে জানা গেছে, জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান গোলাম মোহাম্মদ কাদের প্রার্থী হিসেবে বর্তমান মেয়র মোস্তাফিজার রহমান মোস্তফার নাম ঘোষণা করেছেন। পার্টির চেয়ারম্যানের এই ঘোষণার পর মেয়র মোস্তফার সমর্থনে নেতাকর্মীরা মহানগরীতে বেশ কয়েকবার মোটরসাইকেল শোভাযাত্রা করেছেন।
মেয়র ছাড়াও কাউন্সিলর ও সংরক্ষিত মহিলা কাউন্সিলর পদের সম্ভাব্য প্রার্থীরা স্থানীয় লোকজনের সঙ্গে কথা বলছেন। বিভিন্ন হাটবাজার ও বাড়ি বাড়ি গিয়ে সাধারণ মানুষের সঙ্গে কুশল বিনিময় করছেন।
সিনিয়র জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা ফরহাদ হোসেন জানান, সিটি নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ করতে যা যা করা দরকার তা করেছেন। ভোট গ্রহণ করা হবে ইভিএমে। সিটি নির্বাচনে রিটার্নিং অফিসারসহ ১১ জন নিয়োগ করা হয়েছে।